তিস্তাতোর্সা এক্সপ্রেসের সাধারণ কামরায় এ চিত্র নিত্যদিনের। নিজস্ব চিত্র।
সাধারণ কামরা থেকে স্লিপার, সর্বত্রই সব্জির ঝুড়ি অথবা বস্তার উপস্থিতি। সব্জির বস্তার কারণে কখনও যাত্রীদের বসার জায়গাও দখল থাকে বলে অভিযোগ। হলদিবাড়ি থেকে শিয়ালদহগামী তিস্তাতোর্সা এক্সপ্রেসে নিত্যদিনের চেহারা এমনই বলে অভিযোগ। এক্সপ্রেস ট্রেনটিতে অতিরিক্ত ‘ভেন্ডার’ কামরা অথবা পণ্য পরিবহণে কামরা দেওয়ার দাবিতে সরব হয়েছেন ব্যবসায়ী এবং যাত্রীরা।
উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের সদর দফতর মালিগাঁওয়ের জনসংযোগ আধিকারিক সুগত লাহিড়ি বলেন, “তিস্তাতোর্সা এক্সপ্রেসের সমস্যা নিয়ে ওয়াকিবহাল আছি। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। যাত্রীদের যাতে সমস্যা না হয় সেটা দেখা হবে। পণ্য পরিবহণে কামরার চাহিদা অনেক ট্রেনেই রয়েছে। একেক করে সমস্যার সমাধান করা হবে।”
উত্তরবঙ্গে অন্যতম সব্জি উৎপাদন কেন্দ্র হলদিবাড়ি। এখান থেকে ব্যবসায়ী সব্জি কিনে দেশের বিভিন্ন অংশে সরবরাহ করেন। ভিন রাজ্যে ট্রাকে চাপিয়ে সব্জি নিয়ে যাওয়া হলেও, ক্ষুদ্র এবং মাঝারি ব্যবসায়ীরা ট্রেনে সব্জি নিয়ে যান। ব্যবসায়ীদের একাংশ জানান, তিস্তাতোর্সার যাত্রা পথে থাকা স্টেশনগুলি যেমন সামসি, ভালুকা রোড, মালদা, খাগরাঘাট, বাজারসৌ, কাটোয়া, আজিমগঞ্জ, নবদ্বীপে সব্জি নিয়ে যাওয়া হয় এই ট্রেনেই। ট্রেনের মধ্যে থাকা পণ্য পরিবহণের একমাত্র কামরায় মাসুল দিয়ে সব্জি নিয়ে যাওয়া হয়। একমাত্র কামরায় সব্জির স্থান সঙ্কুলান হয় না। অনেকেই সাধারণ বা স্লিপার কামরাতেও সব্জির বস্তা তুলে দেন।
কেন তিস্তাতোর্সাতেই সব্জি নিয়ে যাওয়ার প্রবণতা বেশি? ব্যবসায়ীদের একাংশই জানান, বিভিন্ন স্টেশন থেকে রাতে হলদিবাড়িগামী তিস্তাতোর্সা এক্সপ্রেসে উঠে ভোরবেলায় হলদিবাড়ি পৌঁছনো যায়। সকালে হাট থেকে সব্জি কিনে দুপুরে শিয়ালদহগামী তিস্তাতোর্সা ট্রেনে বস্তা চাপিয়ে রওনা দেন। খাগরাঘাট রোডের ব্যবসায়ী বিমলা মণ্ডল, বাজারসৌ-এর ব্যবসায়ী রিনা ঘোষ, ভালুকা রোডের ব্যবসায়ী মজুর আলম বলেন, “পণ্য পরিবহণের পর্যাপ্ত কামরা না থাকায় আমাদেরও সমস্যায় পড়তে হয়। বাধ্য হয়েই যাত্রীদের জন্য থাকা কামরাতেই বস্তা তুলতে হয়।” এর জেরে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যাত্রীদের বচসাও নিত্যদিনের বলে অভিযোগ। সাধারণ কামরায় সব্জি বোঝাই থাকায় যাত্রীরা সমস্যায় পড়েন বলে অভিযোগ। স্লিপার ক্লাসের সিটের নীচেও সব্জির বস্তা থাকে বলে অভিযোগ। বস্তা থাকে শৌচাগারের সামনেও। দু’টি কামরার মধ্যবর্তী জায়গাও সব্জির বস্তা রাখা থাকে বলে অভিযোগ। ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি স্বপন সাহা বলেন, “রেল দফতরের হলদিবাড়ি থেকে সব্জি পরিবহণে বাড়তে কামরার ব্যবস্থা করা উচিত।” পুর চেয়ারম্যান গৌরাঙ্গ নাগ বলেন, “তিস্তাতোর্সায় সব্জি নিয়ে যাওয়ায় যাত্রীদের অসুবিধায় পড়তে হয়। রেল দফতরকে যাত্রী স্বাচ্ছন্দের দিকেও নজর দিতে হবে।” আরপিএফ বা রেল পুলিশের তরফে ট্রেনে নজরদারি বাড়ানোর আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy