Advertisement
E-Paper

হস্টেলে ডাক্তারি ছাত্রদের মার, আউটডোরে তালা

ক্যান্টিনে নিম্নমানের খাবার দেওয়ার প্রতিবাদ জানানোয় মালদহ মেডিক্যাল কলেজের হস্টেলে ঢুকে এক ছাত্রকে মারধরের অভিযোগ উঠল খাবার সরবরাহকারী ঠিকাদার সংস্থার বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার গভীর রাতে মালদহ মেডিক্যাল কলেজে এই ঘটনার পরে বুধবার সকালে ক্ষুব্ধ ছাত্রেরা আউটডোরে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ মে ২০১৪ ০৩:১৭
মালদহ মেডিক্যাল কলেজে ছাত্রদের অবস্থান-বিক্ষোভ। মনোজ মুখোপাধ্যায়ের তোলা ছবি।

মালদহ মেডিক্যাল কলেজে ছাত্রদের অবস্থান-বিক্ষোভ। মনোজ মুখোপাধ্যায়ের তোলা ছবি।

ক্যান্টিনে নিম্নমানের খাবার দেওয়ার প্রতিবাদ জানানোয় মালদহ মেডিক্যাল কলেজের হস্টেলে ঢুকে এক ছাত্রকে মারধরের অভিযোগ উঠল খাবার সরবরাহকারী ঠিকাদার সংস্থার বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার গভীর রাতে মালদহ মেডিক্যাল কলেজে এই ঘটনার পরে বুধবার সকালে ক্ষুব্ধ ছাত্রেরা আউটডোরে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী গিয়ে আলোচনা করার পরে বিক্ষোভ থামে।

কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাতে ক্যান্টিনে যে খাবার দেওয়া হয় তা অতি নিম্নমানের ছিল বলে অভিযোগ করেন কয়েকজন ছাত্র। তাঁদের অভিযোগ, এর পরে রাত দেড়টা নাগাদ বাপি দেব নামে এক যুবকের নেতৃত্বে কয়েকজন হস্টেলে হামলা চালায়। দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র কমল রায়কে যথেচ্ছ কিল, ঘুষি মারা হয় বলে অভিযোগ। জলপাইগুড়ির বাসিন্দা ওই ছাত্রকে ওই হাসপাতালেই ভর্তি করানো হয়েছে। আবাসিকদের অনেকেরই অভিযোগ, মাঝেমধ্যেই ক্যান্টিনের খাবার মুখে তোলা যায় না। এমনকী বাসি খাবারও দেওয়া হয়। মঙ্গলবার রাতেও তার প্রতিবাদ করাতেই হামলা হয়। প্রহৃত ছাত্র কমল রায় বলেন, “যারা মেরেছে তাদের চিনতে পারিনি। তবে কেন প্রতিবাদ করা হল সেই প্রশ্ন তুলে আমাকে মারধর করা হয়।”

মেডিক্যাল কলেজ হস্টেলের ওই ক্যান্টিনের বরাত পেয়েছেন শুভজিত ত্রিবেদী। নিম্নমানের খাবার দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে তাঁর পাল্টা অভিযোগ, “ছাত্রদের একাংশই আমাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন।” প্রহৃত ছাত্র নাম না করলেও এ দিন বিক্ষোভের সময় আন্দোলনকারীদের হাতে বাপি দেবের নাম লেখা প্ল্যাকার্ড দেখা যায়। তার দৌরাত্ম্য বন্ধ করতে হবে বলেও প্ল্যাকার্ডে লিখে দাবি জানানো হয়। কয়েকজন ছাত্রের অভিযোগ, বাপি দেবের নেতৃত্বেই হামলা হয়। বাপি দেব অবশ্য বলেন, “ঠিকাদারের হয়ে আমি ক্যান্টিনের দেখাশোনা করি। আমি কাউকে মারিনি। বরং রাতে টিভি দেখার সময় কয়েকজন ছাত্র চিত্‌কার করছিল। তাদের বারণ করলে ওরা আমাদের গালাগালি করে। তার প্রতিবাদ করি। এর বেশি রাতে আর কিছু ঘটেনি।”

এ দিন সকালে দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্ররা প্রথমে কলেজের অধ্যক্ষের ঘরে তালা ঝুলিয়ে দেন। আউটডোরেও তালা ঝুলিয়ে প্ল্যাকার্ড হাতে বসে পড়ে বিক্ষোভ শুরু করেন তাঁরা। বিক্ষোভের জেরে এ দিন আউটডোরে যাওয়া বহু রোগীকেই চিকিত্‌সা না করিয়ে ফিরে যেতে হয়। ৪ ঘণ্টা ধরে বিক্ষোভের পর হাসপাতালে যান পর্যটনমন্ত্রী তথা মেডিক্যাল কলেজের রোগীকল্যাণ সমিতির চেয়ারপার্সন কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন তিনি। ঘণ্টাখানেক পর আন্দোলন তুলে নেনে বিক্ষোভকারীরা। তবে রাত পর্যন্ত ওই ঘটনায় পুলিশের কাছে কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি। মালদহের পুলিশ সুপার রূপেশ কুমার বলেন, “আন্দোলনের সময় পুলিশ কলেজে গিয়েছিল। কিন্তু কেউ কোনও অভিযোগ জানায়নি।” মেডিক্যাল কলেজের উপাধ্যক্ষ মহম্মদ আব্দুর রশিদ গোলমালের বিষয়টি জানেন। তিনি বলেন, “নিম্নমানের খাবার দেওয়ার অভিযোগ ঘিরে এক ছাত্রকে মারধর করা হয় বলে শুনেছি। তার জেরে ছাত্ররাও আন্দোলন করে।”

মারধরে জড়িতদের একাংশ তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত বলেও ছাত্র মহলের একাংশের দাবি। কৃষ্ণেন্দুবাবু বলেন, “বাড়িতেও খাবার নিয়ে মনোমালিন্য হয়। আমি তো বাড়িতে খাবার নিয়ে প্রায়ই ঝামেলা করি। একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। তা মিটে গিয়েছে।” তবে ছাত্রদের আন্দোলন নিয়ে তাঁর প্রশ্ন, “হাসপাতালের আউটডোরে তালা ঝোলানোর অধিকার কে দিয়েছে? হস্টেলে ২৯০ জন ছাত্র থাকে। সবার পছন্দমতো খাবার তো তৈরি করা যায় না। কবে কী খাবার দেওয়া হবে তার তালিকাও রয়েছে।”

ছাত্রদের একাংশের অভিযোগ, মারধরে অভিযুক্তদের আড়াল করা হচ্ছে। সেই প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, “অধ্যক্ষের নেতৃত্বে একটি কমিটি তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। কমিটি বিষয়টি খতিয়ে দেখবে। ক্যান্টিনের বা ছাত্রদের কেউ দোষী হলে আমি মন্ত্রী হিসাবে নিজে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।” অভিযুক্তদের ‘তৃণমূল ঘনিষ্ঠতা’ প্রসঙ্গে মন্ত্রীর যুক্তি, “যখন যে শাসক দল থাকে, অনেকেই নিজেকে তার ঘনিষ্ঠ বলে দাবি করে।”

maldah medical college hostel chanchal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy