Advertisement
২১ মার্চ ২০২৩
Durga Puja 2021

Durga Puja 2021: পুজোর আগেও এ বার আঁধারে ‘পানিফল পাড়া’

কিন্তু এ বার? ডুবন্ত জমিতে ইতিউতি উঁকি মেরে থাকা পানিফলের গাছের দিকে তাকিয়ে সেরাজুল দীর্ঘশ্বাস ফেলেন।

অতি বর্ষণে ডুবে রয়েছে পানিফলের খেত।

অতি বর্ষণে ডুবে রয়েছে পানিফলের খেত। নিজস্ব চিত্র

দিগন্ত মান্না
পাঁশকুড়া শেষ আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০২১ ০৭:০৪
Share: Save:

জলে ডোবা জমিতে শরতের নীল আকাশের পেঁজা পেঁজা সাদা মেঘের ছবি হাওয়ায় দুলছে। সেদিকে এক দৃষ্টে তাকিয়েছিলেন সেরাজুল। গেল বছরেও এই সময়টায় দিনের অর্ধেকটাই জমিতে চাষ করা পানিফল তুলে কেটেছে। ভাল দাম পেয়েছিলেন। দুর্গাপুজোর আগে যেমন পদ্মের চাহিদা বাড়ে। তেমনই বাজারে পানিফলের চাহিদাও বাড়ে। অন্যান্য রাজ্যেও পানিফল চলে যায়। ফলে প্রতি বছর পুজোর আগে বেশ কিছু টাকা ঘরে ওঠে সেরাজুল, শেখজানে আলমের মতো অনেকের। যা দিয়ে সম্বৎসরের সংসারের খরচ মেটে অনেকটাই।

Advertisement

কিন্তু এ বার? ডুবন্ত জমিতে ইতিউতি উঁকি মেরে থাকা পানিফলের গাছের দিকে তাকিয়ে সেরাজুল দীর্ঘশ্বাস ফেলেন। ৬ বিঘা জমিতে চাষ করা পানিফল টানা ভারী বৃষ্টি আর কংসাবতী নদীর অকেজো স্লুইস গেট দিয়ে ঢোকা জল সব ভাসিয়ে দিয়েছে। চাষের খরচটুকুও আর উঠবে কি না সেটাই চিন্তা কংসাবতী নদী লাগোয়া পানিফল চাষিদের।

পাঁশকুড়া পুরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের এই এলাকায় ঢালাই রাস্তা, পথবাতি, পানীয় জল সবই রয়েছে। সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকাটি অপেক্ষাকৃত নিচু হওয়ায় এখানকার বাসিন্দারা বংশপরম্পরায় পানিফলের চাষ করে আসছেন। আষাঢ় মাসে জমিতে পানিফলের চারা লাগানো হয়। সাধারণত পানিফলের খেতে দুই থেকে আড়াই ফুট জল ধরে রাখতে হয়। জলে দাঁড়িয়েই তুলতে হয় ফল।

দুর্গাপুজোর সময় পানিফলের পাইকারি দাম ওঠে কেজি প্রতি ৪০ থেকে ৫০ টাকা। সমস্ত খরচ বাদ দিয়ে প্রতিদিন কাঠা প্রতি ৯০০ থেকে ১০০০ টাকা আয় হয় চাষিদের। পৌষ মাস পর্যন্ত পানিফলের উৎপাদন হয়। তবে দুর্গাপুজোর সময়েই সব চেয়ে বেশি দাম থাকে ফলের। এ বার অতি বর্ষণে পানিফলের খেত এখনও বুকসমান জলে ডুবে।

Advertisement

সকলেরই মন খারাপ ‘পানিফল পাড়ায়’। সেরাজুল বলছিলেন, ‘‘৬ বিঘা জমিতে পানিফল চাষ করেছি। পুজোর সময়েই সব থেকে বেশি আয় করি। তাতে বাড়িতে ভালমন্দ খাবারের আয়োজন হয়। সবাই মিলে মণ্ডপে যাই ঠাকুর দেখতে। এ বার পানিফল তোলা আর হবে না। কী করে সংসার চালাব তাই ভাবছি।’’

দীর্ঘশ্বাস পড়ে আট বিঘা জমিতে পানিফল চাষ করা শেখ জানে আলমেরও। বলেন, ‘‘সারা বছর এই সময়টার জন্য তাকিয়ে থাকি। এখানকার পানিফলই জেলার বাজার ধরে রাখে। কিন্তু এবার চাষের খরচ আর উঠবে না। পুজোর আনন্দ এ বার আর আমাদের নেই।’’

মেচগ্রাম সমাজ শিক্ষাকেন্দ্র দুর্গোৎসব কমিটির সম্পাদক অমিত রাউৎ বলেন, ‘‘গড় পুরুষোত্তমপুর এলাকার মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষজন পুজোর সময় পানিফলের জোগান দেন। এ বার এলাকা জলমগ্ন হওয়ায় ওঁরা পানিফল তুলতে পারছেন না। বাজারে এ বার আদৌ পানিফল মিলবে কিনা সন্দেহ।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.