প্রতীকী ছবি।
কলেজ থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় সর্বত্র সর্বসময়ের শিক্ষকদের মতো একই রকমের কাজ করেন আংশিক ও চুক্তিভিত্তিক শিক্ষকেরা। কিন্তু সাধারণ শিক্ষকদের থেকে তাঁদের বেতন কয়েক গুণ কম। দীর্ঘদিন ধরে আবেদন-নিবেদন করা সত্ত্বেও সেই পারিশ্রমিক বাড়েনি। তাই এ বার সুর চড়িয়ে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে নামার সিদ্ধান্ত নিল আংশিক সময়ের শিক্ষকদের সংগঠন। এমনকী আইনি লড়াইয়ের জন্য সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতিও শুরু করেছে তারা।
কয়েক মাস আগে কলকাতায় এসে স্কুলের পার্শ্ব ও চুক্তিভিত্তিক শিক্ষকদের কম বেতনের প্রসঙ্গ উস্কে দিয়েছিলেন মানবসম্পদ উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী মহেন্দ্রনাথ পাণ্ডে। তিনি জানান, দেশের মধ্যে এ রাজ্যের পার্শ্ব ও চুক্তিভিত্তিক শিক্ষকেরাই সব থেকে কম বেতন পান। এই নিয়ে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে পথে নামারও পরামর্শ দিয়েছিলেন তিনি। তার পর থেকে সুর চড়িয়েছে রাজ্যের শাসক দলের সমর্থক পার্শ্বশিক্ষক সংগঠনও। এ বার সেই সুরে সুর মিলিয়ে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ব ও চুক্তিশিক্ষকেরাও পথে নামছেন।
রাজ্যের কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে আংশিক, অতিথি ও চুক্তিভিত্তিক শিক্ষকের সংখ্যা প্রায় ১৫ হাজার। পূর্ণ সময়ের শিক্ষক আছেন প্রায় ১০ হাজার। দু’ধরনের শিক্ষকদের মধ্যে বেতনের ফারাক অনেক। দশ বছরের শিক্ষকতার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন আংশিক সময়ের শিক্ষকেরা বেতন পান মাসে ২০,৩৩৬ টাকা। যাঁদের এত দিন পড়ানোর অভিজ্ঞতা নেই, ১৪,৭৭৪ টাকা পান সেই শিক্ষকেরা। অথচ এক জন কলেজে অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর-পদে যোগ দিলেই সাধারণ শিক্ষকেরা এখন প্রায় ৪০ হাজার টাকা পাচ্ছেন। কেন্দ্র সম্প্রতি কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতনক্রম সংশোধন করেছে। শীঘ্রই তাঁদের বেতন বাড়বে। কিন্তু চুক্তিতে নিযুক্ত এবং আংশিক সময়ের শিক্ষকেরা যে-তিমিরে ছিলেন, সেই তিমিরেই পড়ে আছেন।
আংশিক, অতিথি ও চুক্তিভিত্তিক শিক্ষকদের প্রশ্ন, সাধারণ শিক্ষকদের মতোই ক্লাস নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে উত্তরপত্র যাচাই-সহ পরীক্ষার সব কাজ করতে হয় তাঁদের। ছাত্র ভর্তি, ভোটের কাজেও তাঁদের যুক্ত করা হয়েছে। কোনও কোনও কলেজে বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্বও সামলান তাঁরা। তা হলে তাঁদের বেতনে এই বিপুল বৈষম্য কেন? এর সুরাহার জন্য রাজ্য সরকারের কাছে বহু বার আবেদন করেও ফল হয়নি। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় তাঁদের দাবিদাওয়াকে আমল দিচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেন আংশিক সময়ের শিক্ষকদের সংগঠন ‘কুটাব’-এর সাধারণ সম্পাদক গৌরাঙ্গ দেবনাথ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy