Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

এ সপ্তাহেই মুখোমুখি লোহিয়ার জবাব চান পার্থ

সেই বৈঠকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরে বহু আসন ফাঁকা থাকার বিষয়টি তো থাকছেই। এমনকী পড়ুয়া-প্রিয় প্রমোদদাকে প্রেসিডেন্সির ক্যান্টিন ছাড়তে হল কেন, উপাচার্যের কাছে তা-ও জানতে চাইবেন শিক্ষামন্ত্রী।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০১৭ ০২:৩৭
Share: Save:

ক্ষোভ প্রকাশ, রিপোর্ট তলবের পালা শেষ। এ বার উপাচার্যের মুখোমুখি বসে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি যাচাই করতে চান শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এবং সেটা চলতি সপ্তাহেই।

সেই বৈঠকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরে বহু আসন ফাঁকা থাকার বিষয়টি তো থাকছেই। এমনকী পড়ুয়া-প্রিয় প্রমোদদাকে প্রেসিডেন্সির ক্যান্টিন ছাড়তে হল কেন, উপাচার্যের কাছে তা-ও জানতে চাইবেন শিক্ষামন্ত্রী।

শিক্ষা সূত্রের খবর, ঐতিহ্যবাহী প্রেসিডেন্সিতে আসন ফাঁকা পড়ে থাকায় শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও ক্ষুব্ধ। আগামী মে মাসে উপাচার্য-পদে অনুরাধা লোহিয়ার মেয়াদ শেষ হচ্ছে। আসন-বিতর্কের ফলে ওই পদে তাঁর পুনর্নিয়োগের সম্ভাবনা আর নেই বলেই শিক্ষা মহলের ধারণা। এ দিন উপাচার্য বলেন, ‘‘আসন ফাঁকা পড়ে আছে শুনলে মুখ্যমন্ত্রী তো ক্ষুব্ধ হবেনই। তবে কী কারণে আসন খালি থেকে গিয়েছে, ইতিমধ্যেই সেটা উচ্চশিক্ষা দফতরে জানিয়েছি।’’

শিক্ষামন্ত্রী পার্থ সোমবার বলেন, ‘‘প্রেসিডেন্সির ঐতিহ্য নষ্ট করার অভিযোগ পেয়েছি। সবই খতিয়ে দেখব। প্রমোদবাবুকে যে-ভাবে চলে যেতে হয়েছে, সেই বিষয়েও খোঁজ নেব উপাচার্যের কাছে।’’ প্রেসিডেন্সি ক্যাম্পাস থেকে প্রমোদদার ক্যান্টিন সরিয়ে সেখানে ফুড কোর্ট তৈরির কাজ শুরু করেছেন কর্তৃপক্ষ।

প্রেসিডেন্সির প্রাক্তনী সংসদের প্রতিনিধিরা গত শনিবার শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে ওই প্রতিষ্ঠানের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরে বিভিন্ন বিষয়ের বহু আসন ফাঁকা থেকে শুরু করে একের পর এক শিক্ষক-শিক্ষিকার প্রেসিডেন্সি ছেড়ে চলে যাওয়া— শিক্ষামন্ত্রীর কাছে সব সমস্যার কথাই তোলেন তাঁরা। সৌন্দর্যায়নের নামে প্রেসিডেন্সিতে ঐতিহ্য ধ্বংসের অভিযোগও করেন প্রাক্তনীরা। সব মিলিয়ে শিক্ষামন্ত্রী কতটা ক্ষুব্ধ, শনিবারেই তাঁর একটি উক্তিতে সেটা ধরা পড়েছে। তিনি জানান, প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়কে দেওয়া টাকা কী ভাবে খরচ হয়েছে, তার অডিট করতে চায় সরকার।

উপাচার্য অবশ্য এ দিন বলেন, ‘‘যা করেছি, আইন মেনে করেছি। যাঁরা সমালোচনা করছেন, তাঁদের বলছি, আমাকে স্ট্যাটিউট (নিয়মবিধি) ধরে বুঝিয়ে দিন, কোনটা আমি ভুল করেছি।’’ ৩০০ আসন ফাঁকা পড়ে থাকার বিষয়টি মানতে চাননি উপাচার্য। তাঁর দাবি, খালি আসনের সংখ্যা অনেক কম। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষকের মতে, উপাচার্য যে-হিসেব দিচ্ছেন, সেটা ভর্তির হিসেব। তার পরে বহু পড়ুয়া ক্লাসই করেননি। সেই সব আসনও তো ফাঁকা পড়ে রয়েছে।

শিক্ষক-শিক্ষিকাদের প্রেসিডেন্সি ছেড়ে যাওয়ার জেরে উদ্ভূত সমস্যার বিষয়টিকে এ দিন বিশেষ আমল দিতে চাননি উপাচার্য। তাঁর দাবি, পাঁচ জন গেলে ৪৫ জন যোগ দিয়েছেন।

উপাচার্যের দাবি, ‘‘কিছু লোক আমায় পছন্দ করে না। তারা হয়তো আমার বিরুদ্ধে নানা কথা ছড়াচ্ছে।’’ স্পষ্টতই তাঁর অনুযোগের আঙুল প্রাক্তনী সংসদের দিকে।

প্রেসিডেন্সির প্রাক্তনী সংসদের সাধারণ সম্পাদক বিভাস চৌধুরী অবশ্য বলেন, ‘‘উপাচার্য অত্যন্ত ডায়নামিক মানুষ। কিন্তু প্রেসিডেন্সি তার গরিমা হারাচ্ছে। সেই বিষয়েই আমরা সবিশেষ চিন্তিত।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE