প্রতীকী ছবি।
কর্তব্যরত অন্তঃসত্ত্বা নার্সকে চড় মারার অভিযোগ উঠল এক রোগিণীর স্বামীর বিরুদ্ধে। শুক্রবার সকালে আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে ওই ঘটনার পর অভিযুক্ত এবং তাঁর দাদাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার আদালতে পেশ করা হলে মূল অভিযুক্তকে ১৪ দিন জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক। কর্তব্যরত নার্সের গায়ে হাত তোলার ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ায় হাসপাতালের কর্মীদের মধ্যে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার সকাল ন’টা নাগাদ হাসপাতালের মহিলা ওয়ার্ডে ভর্তি হন এক বধূ। তিনি পারিবারিক অশান্তির জেরে বিষ খেয়েছিলেন। সেই সময় ওয়ার্ডে ছিলেন নার্স পিয়ালি বন্দ্যোপাধ্যায়। আচমকা ওই রোগিণীর স্বামী স্বপন রায় ও ভাসুর দীপক রায় পিয়ালিদেবীর কাছে গিয়ে দ্রুত চিকিৎসার দাবি জানান। পিয়ালিদেবীর দাবি, তিনি তখন রোগিণীর অবস্থা সম্পর্কে জানার চেষ্টা করছিলেন। আচমকাই ওই দু’জন তাঁর উপর চড়াও হয়ে সপাটে গালে চড় মারেন। পিয়ালি দেবী বলেন, “চড় মারবে বুঝতেই পারিনি। এত জোরে চড় মারে তাতে আমি হতভম্ব হয়ে যাই। কিছুক্ষণ চোখের সামনে অন্ধকার দেখি।”
অভিযুক্ত স্বপন রায়ের দাবি, ‘‘স্ত্রীর চিকিৎসায় দেরি হচ্ছিল। নার্সকে বলতে গেলে তিনি উল্টে আমাকে ভয় দেখান তাঁর ক্ষমতা সর্ম্পকে। সেই সময় আমার মাথা গরম হয়ে যায়। কথা কাটাকাটি হয়। চড় মারিনি।’’ আলিরদুয়ার জেলা হাসপাতালের সুপার চিন্ময় বর্মন জানান, পিয়ালি দেবীকে চড় মারার সিসিটিভি
ফুটেজ রয়েছে। পুলিশ চাইলে তা দেওয়া হবে।
আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপার আভারু রবীন্দ্রনাথ জানান, দু’জন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বিচারক দীপককে জামিন দিলেও স্বপনকে দু’সপ্তাহ জেল হেপাজতে রাখার নির্দেশ দেন। আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক তথা জেলা হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান সৌরভ চক্রবর্তী জানান, ‘‘ঘটনাটি দুঃখজনক। হাসপাতালে যাতে এ ধরণের ঘটনা না ঘটে সেজন্য পুলিশের টহল বাড়ানোর জন্য পুলিশ সুপারকে জাননো হয়েছে।’’
হাসপাতালের একাধিক নার্স জানান, ওয়ার্ডে নানা ধরণের লোক জবরদস্তি ঢোকে। অনেক সময় মদ্যপরাও ঢুকে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করে। এই ঘটনার পর তাঁরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের তরফে ল্যারি বসু জানান, তাঁরাও নার্সকে নিগ্রহের প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘পরিষেবা নিয়ে ক্ষোভ থাকলে অনেক জায়গায় জানানো যেতে পারে। তা বলে আইন হাতে নিয়ে মারধর মানা যায় না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy