Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Partha Chatterjee's Ring Controversy

পার্থের আঙুল ফুলে ছিল বলেই আংটি খোলা যায়নি: জেল সুপার।। বিচারকের প্রশ্ন, ৯ মাসে পারলেন না?

পার্থের আঙুল ফুলে থাকার কারণে তাঁর আংটি খোলা যায়নি বলে আদালতে জানিয়েছেন জেল সুপার। পার্থের যুক্তি ছিল অন্য। তিনি আদালতে দাবি করেছিলেন, স্বাস্থ্যের কারণেই তিনি আংটি পরে রয়েছেন।

Presidency jail super visits court regarding Partha Chatterjee’s ring controversy.

জেলের মধ্যেও আংটি পরে থাকা নিয়ে সম্প্রতি বিতর্কের মুখে পড়তে হয় পার্থকে। ফাইল চিত্র ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০২৩ ১৪:০০
Share: Save:

জেলে ঢোকার সময় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আঙুল ফোলা ছিল। আর সেই কারণেই তাঁর আঙুল থেকে আংটি খোলা সম্ভব হয়নি! প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর আংটিকাণ্ড নিয়ে বুধবার আদালতে হাজিরা দিয়ে এমনটাই দাবি করলেন প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারের সুপার দেবাশিস চক্রবর্তী। জেল সুপারের জবাব শুনে কলকাতা নগর দায়রা আদালতের বিচারকের প্রশ্ন, ৯ মাসেও কেন সেই আংটি খোলা গেল না। বিচারক বলেন, ‘‘৯ মাসে আপনি যেটা করতে পারলেন না আদালতের তরফে ৯ মিনিটে তা করে ফেলা গেল।’’

বুধবার জেল হেফাজতে রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর আংটি পরে থাকা নিয়ে একাধিক প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় দেবাশিসকে। আংটিকাণ্ড নিয়ে জেল সুপারের দেওয়া জবাবে অসন্তোষ প্রকাশ করে পার্থের জেলে প্রবেশের সময়ের রেজিস্ট্রার খাতা খতিয়ে দেখেন বিচারক।

নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে যুক্ত থাকার অভিযোগে পার্থ বিগত ৯ মাস ধরে জেলবন্দি। জেলের মধ্যেও আঙুলে আংটি পরে থাকা নিয়ে সম্প্রতি বিতর্কের মুখে পড়তে হয় তাঁকে। নিয়ম না থাকা সত্ত্বেও দীর্ঘ ৯ মাস ধরে জেলের মধ্যে হাতে আংটি পরেই থাকতেন তিনি। আদালতে এই নিয়ে বিচারকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে ইডির আইনজীবী জানিয়েছিলেন, ‘জেল কোড’ অনুসারে সংশোধনাগারে কোনও অলঙ্কার পরা যায় না। কিন্তু পার্থ সেই নিয়ম ভঙ্গ করেছেন। তবে আদালতের হস্তক্ষেপে সেই আংটি খুলে ফেলেছেন পার্থ।

পার্থের আঙুল ফুলে থাকার কারণে তাঁর আংটি খোলা যায়নি বলে আদালতে জানিয়েছেন প্রেসিডেন্সির জেল সুপার দেবাশিস। পার্থের যুক্তি ছিল অন্য। তিনি আদালতে দাবি করেছিলেন, স্বাস্থ্যের কারণেই ওই আংটি তিনি পরে রয়েছেন। তাঁকে জেলে কেউ আংটি পরতে বারণ করেননি বলেও দাবি করেছিলেন পার্থ।

সেই আংটিকাণ্ড নিয়েই দেবাশিসকে তলব করেছিল আদালত। কেন পার্থ জেলে থাকা অবস্থাতেও হাতে আংটি পরে রয়েছেন তা সবিস্তারে লিখিত আকারে নিয়ে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই নির্দেশ মেনেই বুধবার আদালতে হাজিরা দেন দেবাশিস। তবে জেল সুপারের দেওয়া জবাবে অসন্তোষ প্রকাশ করে আদালতের মধ্যেই তাঁকে দশ মিনিট সময় দিয়ে জবাব লিখিত ভাবে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন বিচারক।

জবাব লিখিত আকারে দেওয়ার পরেও জেল সুপারকে বিচারক প্রশ্ন করেন, তিনি কি নিজেই জেলে আইন তৈরি করছেন এবং সেই নিয়ম ব্যাখা করছেন?

পার্থের আংটি বিতর্কে বুধবার আদালতে জোরালো সওয়াল করেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডির আইনজীবীও। ইডির আইনজীবী ফিরোজ এডুলজির দাবি, কোনও অভিযুক্তের বিরুদ্ধে এ রকম অভিযোগ উঠলে রাজ্যের কারা আইন অনুযায়ী, অভিযুক্তকে রাজ্যের মধ্যে বা ভিন্‌রাজ্যের জেলে স্থানান্তরিত করা যায়। কিন্তু পার্থের ক্ষেত্রে তা হয়নি। তা হলে কি এই ক্ষেত্রে কোনও অদৃশ্য হাত কাজ করছে? আদালতে প্রশ্ন তোলেন ইডির আইনজীবী।

প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারের জেল সুপার প্রসঙ্গে ইডির আইনজীবী আদালতে বলেন, ‘‘উনি এমন একজন জেল সুপার, যাঁর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। হাইকোর্টের নির্দেশও অমান্য করেন উনি। ২০০০ টাকা জরিমানাও করা হয়। একটা অদৃশ্য হাত কাজ করছে। যার জেরে ওঁকে অন্যত্র বদলি করা যায় না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE