চাপ বাড়ল স্বাস্থ্য দফতরের উপরে।
চিকিৎসকের আকাল দেখা দেওয়ায় যে-পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, তার মোকাবিলায় কর্মরত ডাক্তারদের স্বেচ্ছাবসর নেওয়ার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল রাজ্য সরকার। বুধবার সেই নিষেধাজ্ঞার উপরে স্থগিতাদেশ দিয়েছে রাজ্য প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল (স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনাল বা স্যাট)। অর্থাৎ চিকিৎসকদের স্বেচ্ছাবসর নিতে আপাতত কোনও বাধা রইল না।
রাজ্য সরকারের নিয়ম অনুযায়ী ২০ বছর চাকরি হয়ে গেলে বা কর্মীর বয়স ৫০ হয়ে গেলে তিনি যদি চান, তা হলে স্বেচ্ছাবসর নিতে পারেন। কিন্তু ২০১৪ সালে সরকার চিকিৎসকদের ক্ষেত্রে ওই নিয়ম বাতিল করে দেয় রাজ্য। কারণ, সারা রাজ্যেই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বা শিক্ষক চিকিৎসকের বড় অভাব। পারিবারিক সমস্যা, শারীরিক-মানসিক সমস্যা বা অন্যত্র চাকরির সুযোগ নেওয়ার জন্য অন্য সরকারি চাকুরেরা স্বেচ্ছাবসরের সুবিধে পেলে তাঁরা কেন পাবেন না, তা নিয়ে সরব হন কিছু চিকিৎসক।
চিকিৎসকদের অন্যতম সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব হেলথ সার্ভিসেস ডক্টর্স রাজ্য সরকারের ওই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে প্রথমে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়। হাইকোর্ট থেকে মামলাটি যায় স্যাটে। সংগঠনের সভাপতি গৌতম মুখোপাধ্যায়ের প্রশ্ন, ‘‘কেউ হয়তো কাজের পরিবেশের সঙ্গে মানাতে পারছেন না বা যে-ভাবে তাঁর বদলি বা পদন্নোতি হচ্ছে, তাতে তিনি খুশি নন। এই অবস্থায় তিনি চাকরি ছাড়তে চাইছেন। এটা তাঁর অধিকার, অথচ সরকারের গা-জোয়ারিতে তিনি স্বেচ্ছাবসর নিতে পারছেন না। এটা কেমন ব্যবস্থা?’’ মামলাকারীদের কৌঁসুলি গৌতম পাঠক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, স্বেচ্ছাবসর নেওয়ার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল অর্থ দফতর। কিন্তু কেন এই নির্দেশ, সেই প্রশ্নের জবাব তারা দেয়নি। এই বিষয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল এ দিন জানিয়ে দিয়েছে, সরকারি চিকিৎসকদের স্বেচ্ছাবসরের উপরে যে-নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে, এই মামলার নিষ্পত্তি না-হওয়া পর্যন্ত তা স্থগিত রাখতে হবে।
কী বলছে সরকার?
‘‘আমার পক্ষে এই ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করা উচিত হবে না,’’ বলেছেন রাজ্যের স্বাস্থ্য (শিক্ষা) অধিকর্তা সুশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে স্বাস্থ্য ভবনের এক কর্তার মন্তব্য, একেই মেডিক্যাল কলেজ আর সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ডাক্তার মিলছে না। তার উপরে চিকিৎসকেরা স্বেচ্ছাবসর নিতে থাকলে কী অবস্থা দাঁড়াবে, তা তো সহজেই অনুমেয়।
আর সরকারি চিকিৎসকদের তৃণমূলপন্থী সংগঠন প্রোগ্রেসিভ ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য সম্পাদক শান্তনু সেন বলেন, ‘‘চিকিৎসকের আকালে হাসপাতাল চালানোর জন্যই সরকার স্বেচ্ছাবসর বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। এখন কোর্ট স্থগিতাদেশ দিলে তা তো মানতেই হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy