Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪
TET Scam

‘ঠগ বাছতে গাঁ উজাড়’! ৩৬ হাজার চাকরি বাতিলের নির্দেশ নিয়ে বিক্ষোভ শিক্ষক-শিক্ষিকাদের

বিক্ষোভকারীদের দাবি, বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের রায়ে ‘ঠগ বাছতে গা উজাড়’ হয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের পরীক্ষার নিয়ম মেনেই তাঁদের চাকরিতে নিয়োগ করা হয়েছে।

Image of Primary teachers\\\\\\\' protest in Siliguri

শনিবার দুপুরে শিলিগুড়ি বাঘাযতীন পার্ক ময়দান সংলগ্ন রাস্তায় প্ল্যাকার্ড হাতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন প্রাথমিকের বহু শিক্ষক-শিক্ষিকা। —নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
দার্জিলিং শেষ আপডেট: ১৩ মে ২০২৩ ১৬:৩১
Share: Save:

কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের ৩৬ হাজার নিয়োগ বাতিলের নির্দেশের বিরুদ্ধে এ বার পথে নামলেন শিলিগুড়ি শিক্ষা জেলার প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকারা। শনিবার দুপুরে শিলিগুড়ির রাস্তায় বিক্ষোভ প্রদর্শনের সময় তাঁদের দাবি, এই নির্দেশের ফলে প্রাথমিকের নিয়োগে ‘ঠগ বাছতে গাঁ উজাড়’ হয়েছে।

শনিবার দুপুরে শিলিগুড়ি বাঘাযতীন পার্ক ময়দান সংলগ্ন রাস্তায় প্ল্যাকার্ড হাতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন প্রাথমিকের বহু শিক্ষক-শিক্ষিকা। বানারহাট, ধূপগুড়ি, দার্জিলিং এবং জলপাইগুড়ি থেকে জমায়েতে হাজির হয়েছিলেন তাঁরা। বিক্ষোভকারীদের দাবি, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের ওই রায়ে ‘ঠগ বাছতে গা উজাড়’ হয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের পরীক্ষার নিয়ম মেনেই আমাদের চাকরিতে নিযুক্ত করা হয়েছে। তার সমস্ত নথিপত্র আমাদের কাছে রয়েছে। এর প্রমাণ কাগজে হবে।

প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় শুক্রবার ৩৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকার নিয়োগ বাতিলের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। ২০১৬ সালের ওই নিয়োগে পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ না থাকলেও (অর্থাৎ ডিইএলএড ডিগ্রিহীন হলেও) তাঁদের চাকরি হয়েছে বলে মামলাকারীদের অভিযোগ। তবে শনিবার বিক্ষোভে শামিল প্রাথমিক শিক্ষক প্রীতম অধিকারী তা মানতে নারাজ। এই নির্দেশের বিরুদ্ধে আদালতে যাবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। প্রীতম বলেন, ‘‘যোগ্যতার পরীক্ষা যাঁরা দেননি, তাঁদের মতই গ্রহণযোগ্য হল। অথচ যাঁরা বলেছেন যে তাঁরা অ্যাপ্টিটিউড টেস্ট দিয়েছেন, তাঁদের মতামত গ্রহণযোগ্য হল না। এ কেমন রায়? শিলিগুড়ি শিক্ষা জেলা থেকে কাউকেই সেই বিচারকক্ষে উপস্থিত করানো হয়নি। অর্ডার কপিতেই অনেক অসঙ্গতি রয়েছে। পচা ইঁদুরের গন্ধ পেয়ে কি পুরো গুদামঘরে আগুন লাগানো যায়? আমরা পুনরায় কোর্টের দ্বারস্থ হব।’’

৩৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকার চাকরির ইন্টারভিউয়ে অনিয়মের অভিযোগও উঠেছে। বহু ক্ষেত্রে অ্যাপ্টিটিউড টেস্টে নেওয়া হয়নি বলে দাবি। আবার অ্যাপ্টিটিউড টেস্টের সময় ডেমো ক্লাস নেওয়া হয়নি বলেও দাবি করা হয়েছে। তবে বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারী শিক্ষক জয়ন্ত সরকার বলেন, ‘‘মামলাকারীরা আদালতে বোঝানোর চেষ্টা করছেন যে ক্লাস ডেমোস্ট্রেশনই অ্যাপ্টিটিউড টেস্ট। কিন্তু সেটা অ্যাপ্টিটিউড টেস্টের একটা অঙ্গ মাত্র। তা ছাড়াও অনেক পন্থা রয়েছে যার মাধ্যমে অ্যাপ্টিটিউড টেস্ট দেওয়া যায়।’’

নিয়োগ বাতিল হওয়া শিক্ষক-শিক্ষিকারা যে যোগ্য, সে দাবি করেছেন। শিক্ষক প্রবীর তালুকদারের দাবি, ‘‘আমরা যোগ্য। শিশুদের পড়ানোয় কোনও খামতি রাখিনি। আজ আমাদের এই অবস্থা কেন হবে? তা নিয়েই আমাদের বিক্ষোভ। আমরা অ্যাপ্টিটিউড টেস্ট-সহ সমস্ত প্যারামিটার (যোগ্যতামান) পেরিয়েই চাকরিতে যোগ দিয়েছি। যাঁরা দোষী, তাঁদের বিরুদ্ধে রায় ঘোষণা করতে গিয়ে আমাদের সমস্যার মুখে ফেলে দেওয়া হচ্ছে। আমরা এর বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE