Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদত্যাগ চেয়ে ধর্নায় পড়ুয়ারা

গত কয়েক দিন ধরেই ‘চলো পাল্টাই বিসিকেভি’ স্লোগান তুলে নদিয়ার ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্না চালিয়ে যাচ্ছেন বেশ কিছু ছাত্রছাত্রী। উপাচার্য কথা বললেও তাঁরা ধর্না থেকে সরেননি। এরপর স্থানীয় তৃণমূল নেতারা আসরে নামেন। তবে ফল হয়নি।  এর পরেই বলপ্রয়োগের রাস্তা নেওয়া হয় বলে অভিযোগ। 

উদ্ধার গুলি। ছবি: প্রণব দেবনাথ

উদ্ধার গুলি। ছবি: প্রণব দেবনাথ

মনিরুল শেখ
হরিণঘাটা: শেষ আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৭:২০
Share: Save:

বহিরাগতেরা ক্যাম্পাসে ঢুকে তাণ্ডব চালানোর পর পড়ুয়াদের বিক্ষোভের নিশানায় চলে এলেন বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ধরণীধর পাত্র। ধর্নায় বসা ছাত্রছাত্রীদের দাবি, তাঁকে পদত্যাগ করতেই হবে। হস্টেলে থাকেন না এমন বহু গবেষক, ছাত্রছাত্রীও এ দিন তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন। বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত অচলাবস্থা কাটেনি।

যদিও উপাচার্য বলেন, ‘‘আলোচনা চলছে। আশা করি, সমাধানসূত্র বেরোবে।’’

গত কয়েক দিন ধরেই ‘চলো পাল্টাই বিসিকেভি’ স্লোগান তুলে নদিয়ার ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্না চালিয়ে যাচ্ছেন বেশ কিছু ছাত্রছাত্রী। উপাচার্য কথা বললেও তাঁরা ধর্না থেকে সরেননি। এরপর স্থানীয় তৃণমূল নেতারা আসরে নামেন। তবে ফল হয়নি। এর পরেই বলপ্রয়োগের রাস্তা নেওয়া হয় বলে অভিযোগ।

বুধবার রাতে মুখ ঢাকা দেওয়া এক দল দুষ্কৃতী ক্যাম্পাসে ঢুকে তাণ্ডব চালায়। ধর্নায় বসা ছাত্রদের রাস্তায় ফেলে মারা হয়। হামলা হয় ছাত্রীদের হস্টেলেও। মেন গেটে বোমা মারা হয়। গুলির শব্দও শোনা গিয়েছে। এ দিন ছাত্রীদের হস্টেলের কাছেই রাস্তায় কার্তুজ পড়ে থাকতে দেখা যায়। তদন্তে পুলিশ জেনেছে, কয়েক জন দুষ্কৃতীর হাতে পিস্তল ছিল। তাণ্ডব চালিয়ে ফিরে যাওয়ার সময়ে তারা শূন্যে চার-পাঁচ রাউন্ড গুলি ছোড়ে। তৃণমূলের মদতে এই হামলা হয়েছে বলে ছাত্রছাত্রীদের বড় অংশের অভিযোগ। তবে শাসক দলের স্থানীয় নেতারা তা উড়িয়ে দিয়েছেন।

এই ঘটনার পর ক্যাম্পাসে রাজনীতির সমীকরণ কিছুটা বদলে গিয়েছে। গবেষক বা ছাত্রদের বড় অংশ থাকেন কল্যাণীতে। রাতে হামলার খবর পেয়েই তাঁদের অনেকে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে শুরু করেন। এত দিন ধর্না ছিল মূলত দ্বিতীয় ও চতুর্থ বর্ষের পড়ুয়াদের মধ্যে সীমাবদ্ধ। এ দিন উপাচার্যের ঘরের সামনে বহু গবেষক এবং স্নাতকোত্তর স্তরের ছাত্রছাত্রীকেও দেখা গিয়েছে।

এত দিন পড়ুয়াদের মূল দাবি ছিল, বিশ্ববিদ্যালয়ের দু’জন ডিনকে সরাতে হবে। এ দিন যোগ হয়েছে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবি। বুধবার রাতেই তিনি জরুরি ভিত্তিতে কর্মসমিতির বৈঠক ডাকার কথা জানিয়েছিলেন। কিন্তু এ দিন বেলা ১১টা নাগাদ উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকতেই শিক্ষকদের একাংশ ছাত্রদের পাশে দাঁড়িয়ে জানান, ছাত্র প্রতিনিধিদের সামনেই যা হওয়ার হবে। এর পরে কর্মসমিতির বৈঠক ভেস্তে যায়।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তাদের একাংশের মত, হস্টেল খালি করে দিলে আন্দোলনে রাশ টানা যাবে। তবে ছাত্রদের চাপের মুখে রাত পর্যন্ত উপাচার্য তা করতে পারেননি। আন্দোলনকারীদের তরফে মিলন লোক্ষ্মণ বলেন, ‘‘উপাচার্য মৌখিক ভাবে হস্টেল খালি করতে বলছেন। উনি ছাত্রছাত্রীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ। ওঁর কোনও কথা মানব না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

BCKV Resignation Vice-chancellor
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE