Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

মজা সেচখাল সংস্কার হবে বাঁকুড়ায়

কংসাবতী নদীর মজে যাওয়া সেচখাল সংস্কারের প্রকল্প নিল সেচ দফতর। প্রায় ৬৩ হাজার ৮২০ মিটার সেচখাল সংস্কার করা হবে এই প্রকল্পে। মঙ্গলবার বাঁকুড়ার ওন্দা ব্লকের মানডিহায় রাজ্যের সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় ওই প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। এই উপলক্ষে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় মানডিহা সংলগ্ন ময়দানে।

প্রকল্পের উদ্বোধনে সেচমন্ত্রী। মঙ্গলবারের নিজস্ব চিত্র।

প্রকল্পের উদ্বোধনে সেচমন্ত্রী। মঙ্গলবারের নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ওন্দা শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০১৫ ০১:১৫
Share: Save:

কংসাবতী নদীর মজে যাওয়া সেচখাল সংস্কারের প্রকল্প নিল সেচ দফতর। প্রায় ৬৩ হাজার ৮২০ মিটার সেচখাল সংস্কার করা হবে এই প্রকল্পে। মঙ্গলবার বাঁকুড়ার ওন্দা ব্লকের মানডিহায় রাজ্যের সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় ওই প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। এই উপলক্ষে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় মানডিহা সংলগ্ন ময়দানে। রাজীববাবু ছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন মন্ত্রী সুকুমার হাসদা, বাঁকুড়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি অরূপ চক্রবর্তী, পরিষদীয় সচিব অরূপ খাঁ, জেলাশাসক বিজয় ভারতী, জেলা পুলিশ সুপার নীলকান্ত সুধীর কুমার প্রমুখ।

জেলার খাতড়া, বিষ্ণুপুর ও বাঁকুড়া সদর মহকুমার একাংশে মোট ১৩টি ব্লকে সেচ ব্যবস্থা রয়েছে কংসাবতীর। তবে দীর্ঘদিন ধরে সেচখালগুলি সংস্কার না হওয়ায় বহু চাষ জমিতেই সেচের ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও খাল মজে যাওয়ার কারণে সেচের জল জমিতে যায় না। এ নিয়ে তীব্র ক্ষোভ রয়েছে এই সেচ প্রকল্পের আওতায় থাকা ব্লকের চাষিদের একাংশের। সেচখালগুলি সংস্কারের দাবিতে একাধি কবার আন্দোলনও করেছেন চাষিরা। এ দিন ৬৩ হাজার ৮২০ মিটার সেচখাল সংস্কারের প্রকল্প নেওয়ার ফলে ইঁদপুর, ওন্দা, বিষ্ণুপুর, সিমলাপাল, খাতড়া, রানিবাঁধ, রাইপুর, জয়পুর, কোতুলপুর, ছাতনা ও তালড্যাংরার মতো ব্লকের প্রায় ১৭ হাজার ৫০০ একর চাষজমি উপকৃত হবে বলে সেচ দফতরের তরফে জানানো হয়েছে। সেচখাল সংস্কার ছাড়াও এ দিন দ্বারকেশ্বর নদের ভাঙন রুখতে ওন্দা ব্লকের শ্রীরামপুর থেকে সাবানপুর পর্যন্ত প্রায় ৪৯০ মিটার এবং জয়পুর ব্লকের পরাশে থেকে ছাতিনা পর্যন্ত প্রায় ১২০০ মিটার নদীপাড় বাঁধানোর প্রকল্পেরও সূচনা করেন মন্ত্রী। সেচখাল সংস্কার ও নদীর পাড় বাঁধানোর প্রকল্পে বরাদ্দ হয়েছে প্রায় ৪৯ কোটি টাকা।

জেলা সেচ দফতরের এক আধিকারিক বলেন, “চলতি অর্থবর্ষে (২০১৪-১৫) ইতিমধ্যেই কংসাবতীর ৪৪ হাজার ৮৬৬ মিটার সেচখাল সংস্কারের কাজ শেষ করা হয়েছে। এর ফলে প্রায় ৬ হাজার ৮২৮ একর কৃষিজমিতে সেচের জল দেওয়া যাবে।” সেচমন্ত্রী বলেন, “আমাদের মুখ্যমন্ত্রী বাঁকুড়া জেলাকে রাজ্যের মধ্যে প্রথম সারিতে নিয়ে আসতে চান। সেই লক্ষ্যেই আমরা কাজ করছি। এক সময় এই জেলাকে রুখা জেলা বলা হত। কিন্তু, বাঁকুড়ার সেচ ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজিয়ে আমরা সবুজ বানাবো।” সেচ দফতরের পাশাপাশি বাঁকুড়া জেলা পরিষদও চাষিদের জল দেওয়ার নানা প্রকল্প চালু করেছে। তারই অঙ্গ হিসাবে মেজিয়ায় প্রায় ১০০ একর জমিতে গড়া হচ্ছে একটি ঝিল। সেই ঝিল থেকে খালের মাধ্যমে জল দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে চাষজমিতে। পাঁচ হাজার চাষির এই প্রকল্প থেকে জল পাওয়ার কথা। প্রায় ৩০ কোটি টাকার এই প্রকল্পে জেলা পরিষদকে অর্থ সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছে পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদ। এ ছাড়া কৃষি দফতর, উদ্যানপালন দফতরেরও আর্থিক সহায়তা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সভাধিপতি অরূপবাবু। এ দিন নির্মীয়মাণ ঝিল থেকে সেচখাল গড়ার জন্য সেচমন্ত্রীর কাছে সাড়ে ৪ কোটি টাকার আবেদন জানিয়েছেন সভাধিপতি। তিনি বলেন, “জেলায় সারা বছরে তিন-চার দফা যাতে চাষ করা যায়, সেটা নিশ্চিত করাই আমাদের লক্ষ্য। চাষিদের উৎসাহ বাড়াতে বীজ ও সার বিনামূল্যে দেওয়ারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে জেলা পরিষদের তরফে।” যে সমস্ত চাষি কৃষিকাজের জন্য শ্যালোপাম্প নেবেন, কেবলমাত্র তাঁরাই বিনামূল্যে চাষের বীজ ও সার পাবেন বলে জানিয়েছেন সভাধিপতি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE