দোকানের নাম লিখল কে? ছবি তুলছেন বিডিও। —নিজস্ব চিত্র
এক নজরে হঠাত্ দেখলে মনে হবে সারি দেওয়া দোকানগুলি চালু হয়ে গিয়েছে। দোকানেক মাথায় সারি দেওয়া নানা রঙের কালিতে লেখা দোকানের নাম, দোকান মালিকে নাম। অথচ প্রশাসন থেকে এখনও ওই সব দোকান বিলিই করে উঠতে পারেনি। মানবাজার গ্রামীণ হাসপাতালের গায়ে এক দশক আগে তৈরি করেও চালু করতে না পারা বাণিজ্যিক বিপণন কেন্দ্রে এই ঘটনা ঘটেছে।
ঘটনাটি জানতে পেরে নড়েচড়ে বসেছে ব্লক প্রশাসন। শুক্রবার মানবাজার ১ বিডিও সায়ক দেব বাণিজ্যিক বিপণন কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। বিডিও বলেন, “এই বিপণন কেন্দ্রটি নিয়ে হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা হয়েছিল। দোকানগুলি এখনও পর্যন্ত কাউকে বিলিবন্টন করা হয়নি। অথচ বিজ্ঞাপনগুলি দোকানের উপর এমন ভাবে লেখা হয়েছে তা দেখে মনে হয় যেন বিলি হয়ে গিয়েছে। কে বা কারা এই ধরনের কাজ করেছেন এবং কারা এই ধরনের বিজ্ঞাপন লিখিয়েছেন প্রত্যেককে নোটিস দিয়ে জানতে চাওয়া হবে। সদুত্তর না পাওয়া গেলে আইনি ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।” তিনি দোকানগুলির ছবি তুলে নিয়ে যান।
মানবাজার ব্লকের পায়রাচালি গ্রামের বাসিন্দা শৈলেন মিশ্র হাইকোর্টে ওই জনস্বার্থ মামলাটি করেছেন। তিনি জানান, ২০০৩ থেকে ২০০৫ সালে এই দোকানগুলি তৈরি করা হয়েছিল। মানবাজার পঞ্চায়েত সমিতি এখানে ১০টি দোকান তৈরির জন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। সেই সময় শৈলেনবাবু পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেতা ছিলেন। সরকারি বিভিন্ন তহবিল থেকে ওই নির্মাণ করা যায় না বলে তিনি বিরোধিতা করেছিলেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিনা অনুমতিতে ওই কাজ বেআইনি বলেও তিনি দাবি করেছিলেন। কিন্তু পঞ্চায়েত সমিতি বারণ না শোনায় তিনি জনস্বার্থ মামলা করেন। তিনি বলেন, “বর্তমানে ওই মামলা আমি প্রত্যাহার করে নিয়েছি। আমি চাই বিডিও, ব্লক মেডিক্যাল আধিকারিক-সহ ব্লক প্রশাসনের পদস্থ কর্তাদের উপস্থিতিতে এই দোকানগুলি কর্মহীন যুবকদের লটারির মাধ্যমে বিলি করা হোক।” কিন্তু তার আগেই দোকানগুলির গায়ে মালিকদের নাম লেখা হয়েছে দেখে তিনি বিডিও-কে ঘটনাটি জানান। এখানে মোট ১০টি দোকান রয়েছে। দোকানের মালিক হিসেবে যাঁদের নাম লেখা রয়েছে, তাঁরা অবশ্য দাবি করেছেন, “কে বা কারা বিজ্ঞাপন দিয়েছে আমরা জানি না। আমরা বিজ্ঞাপনের খরচও দিইনি।” এ দিন মানবাজার গ্রামীণ হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠক ছিল। বৈঠকেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। মানবাজারের বিএমওএইচ অরুণাভ ঘোষ বলেন, “পুরনো নথি দেখে জানতে পারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে অন্ধকারে রেখেই নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল।”
মানবাজার বাসস্ট্যান্ডেও বিলি না হওয়া এ রকম ১৭টি দোকান রয়েছে। বাসস্ট্যান্ডের ব্যবসায়ীদের একাংশের অভিযোগ, সম্প্রতি সেখানেও ব্যবসায়ীদের একাংশ দোকানগুলি জবরদখল করে ব্যবহার শুরু করেছেন। বিডিও বলেন, “মানবাজার বাসস্ট্যান্ড ও দৈনিক সব্জি বাজারেও কিছু স্টল রয়েছে। সেগুলিরও বিধি মাফিক বিলি বন্টনের প্রক্রিয়া শুরু করেছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy