বছর চারেক আগে দুষ্কৃতীদের হাতে প্রাণ গিয়েছে তিন ছেলের। তার পর সুবিচারের প্রতীক্ষায় কেটেছে প্রতিটি মুহূর্ত। কিন্তু আদালতের দীর্ঘসূত্রিতায় এ বার নিজের জীবদ্দশায় সুবিচারের আশাও হারিয়ে ফেলেছেন বছর ৭০-এর জরিনা বিবি। তিনি চান পুত্রহত্যাকারীদের দ্রুত শাস্তির জন্য পাড়ুইয়ের হৃদয় ঘোষের মতো তাঁদের পাশে কেউ দাঁড়াক।
জরিনা বিবির কথায়, “কত কষ্ট করে ছেলেদের মানুষ করেছিলাম। তাদের রক্তমাখা মুখগুলো আমাকে রাতে ঘুমোতে দেয় না। একটার পর একটা আদালতে দিন পড়ে আর অপরাধীদের সাজার জন্য প্রার্থনা করি। কিন্তু মামলা ফের পিছিয়ে যায়। জানি না জীবদ্দশায় খুনিদের সাজা দেখতে পাব কি না!”
পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১০ সালে বালি ঘাটের দখল নিয়ে দুই গোষ্ঠীর বিরোধ মেটাতে সালিশি সভা ডাকেন তৎকালীন তৃণমূলের জেলা সহসভাপতি মনিরুল ইসলাম। লাভপুরের নবগ্রামে মনিরুল ইসলামের বাড়িতেই ওই সভায় জরিনা বিবির পরিবারের লোকদেরও ডাকা হয়। অভিযোগ, ওই সভা চলাকালীন মনিরুল ইসলামের নেতৃত্বে জরিনা বিবির লোকেদের ওপর চড়াও হয় তাঁর অনুগামীরা। ঘটনাস্থলেই দুই ছেলের মৃত্যু হয়। হাসপাতালের নিয়ে যাওয়ার পথে মারা যান জরিনা বিবির আর এক ছেলে। বাকিরা কোনওক্রমে পালিয়ে বাঁচেন। ওই হত্যাকাণ্ডে মনিরুল-সহ ৫১ জনের বিরুদ্ধে লাভপুর থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। মনিরুল গ্রেফতার হন। পরে তিনি জামিনে ছাড়া পেয়ে তৃণমূলের টিকিটে লাভপুর কেন্দ্রের বিধায়ক নির্বাচিত হন।