একই মাঠের এক দিকে দুর্গাপুজো। অন্য দিকে মহরমের প্রস্তুতি। ঠাকুর দেখার পরে কেউ ঢুঁ দেন মহরমের লাঠি খেলা, মিছিল দেখতে। কেউ আবার উল্টোটা। এটাই ফি বছরের চেনা ছবি দুর্গাপুরের লেবারহাট এলাকার বাসিন্দাদের কাছে। সম্প্রীতির এমন ছবি দেখা যায় বুদবুদের দেবশালার রায়কোনা গ্রামেও। সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এই গ্রামের মন্দিরে নবমীতে ধুমধাম করে পুজোয় সামিল হন সব বাসিন্দাই।
দুর্গাপুর শহরে লেবারহাট এলাকার প্রায় দেড় হাজার মানুষের বসবাস। ৫৯ বছর আগে হিন্দিভাষী ও বাঙালিদের দু’টি পুজো শুরু হয়েছিল। পরে পুজোর খরচ বেড়ে যাওয়ায় এক সঙ্গে পুজো শুরু হয়। এলাকার বেশির ভাগ মানুষ ডিপিএল, ইন্ডিয়ান অয়েল-সহ দুর্গাপুরের বিভিন্ন কারখানায় ঠিকা শ্রমিকের কাজ করেন। পুজোর উদ্যোক্তারা জানান, অধিকাংশ বাসিন্দার আর্থিক স্বাচ্ছল্য না থাকলেও পুজোয় সবাই নিজের মতো করে সাহায্য করেন। পুজোর জন্য সব সম্প্রদায়ের মানুষই চাঁদা দেন। অনুষ্ঠান, পঙ্ক্তিভোজেও আসেন সবাই। সৌমেন দাস, বিজয় প্রতাপ সিংহ, অফসার হোসেন, জাভেদ হোসেন, অসগর আলিরা বলেন, ‘‘এই পুজোয় সব সম্প্রদায়ের মানুষই চাঁদা দেন। প্রত্যেকেই পুজোর কাজে নিজের মতো করে সাহায্য করেন। পুজোর পরে খিচুড়িও খাওয়া হয় সকলে মিলে।’’
দেবশালার বক্সী পরিবারের পুজোর অংশ রায়কোনা গ্রামের ‘নাচনচণ্ডী’ দেবীর পুজো। পরিবার সূত্রে জানা যায়, শ’তিনেক বছর আগে বর্ধমানের রাজ পরিবার তাদের দেবশালায় থাকার জমি দেয়। শুরু হয় দুর্গাপুজো। রায়কোনা গ্রামে রয়েছে নাচনচণ্ডীর মন্দির। বক্সী পরিবার জানায়, বর্ধমানের রাজা বিজয়চাঁদের আমলে তৈরি এই মন্দিরেও পুজোর ভার পান তাঁরা। রায়কোনার বাসিন্দা আমিনুল চৌধুরী বলেন, ‘‘পুজোয় আমরাও যোগ দিয়ে থাকি। বেশ ভাল লাগে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy