Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Child Marriage

Child Marriage: ‘আগে স্বপ্নপূরণ, বিয়ে পরে’, থানায় গিয়ে নিজের বিয়ে নিজে রুখলেন দশম শ্রেণির নাবালিকা

বাবা-মা বিয়ের ঠিক করেছে, এ কথা শুনে সহপাঠীদের পরামর্শে পুলিশের দ্বারস্থ হয় ওই ছাত্রী। পুলিশের হস্তক্ষেপে আটকে যায় বিয়ে।

নিজের বিয়ে রুখল দশম শ্রেণির ছাত্রী।

নিজের বিয়ে রুখল দশম শ্রেণির ছাত্রী। — নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০২২ ১৬:৫৫
Share: Save:

মেয়ে দশম শ্রেণিতে উঠতেই বিয়ের তোড়জোড় শুরু করেছিলেন তার বাবা-মা। বন্ধুদের মাধ্যমে সেই কথা গিয়েছিল ছাত্রীর কানে। এর পর সটান থানায় হাজির হয়ে নিজেই নিজের বিয়ে রুখলেন ওই ছাত্রী। এর পর পুলিশ ওই ছাত্রীর বাবা-মাকে বুঝিয়ে বিয়ে আটকায়। এই ঘটনা বাঁকুড়ার পাত্রসায়রের।

বাঁকুড়ার পাত্রসায়রের ওই ছাত্রীর বাবা পেশায় দিনমজুর। স্ত্রী এবং দুই মেয়েকে নিয়ে তাঁর সংসার। বড় মেয়ে দশম শ্রেণিতে উঠলে তার বিয়ের তোড়জোড় শুরু করেন বাবা-মা। সেই কথা শুনে মন খারাপ হয়ে যায় ওই ছাত্রীর। বিয়ে কী ভাবে আটকানো যায় তা নিয়ে সহপাঠীদের দ্বারস্থ হয় সে। এর পর সহপাঠীদের পরামর্শে শনিবার সন্ধ্যায় সটান ওই ছাত্রী হাজির হয় পাত্রসায়র থানায়। থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিককে ঘটনার কথা জানিয়ে ছাত্রী বলে, “আমি বড় হয়ে শিক্ষিকা হতে চাই। আগে সেই স্বপ্ন পূরণ হবে তার পর আমি বিয়ে করব। আমার বিয়ের তোড়জোড় শুরু হয়েছে। সেটা যে কোনও উপায়ে আপনারা আটকে দিন।’’

নাবালিকা ছাত্রীর কথা শুনে পুলিশ তড়িঘড়ি ছাত্রীর বাবা-মাকে থানায় ডেকে পাঠায়। মেয়েদের ১৮ বছর বয়সের আগে বিয়ে দেওয়া আইন বিরুদ্ধ, এ কথা তাঁদের বোঝান পুলিশ আধিকারিকরা। মেয়ে বড় হয়ে শিক্ষিকা হতে চায়, সে কথাও তাঁরা বলেন। এর পর মেয়ের বিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন ছাত্রীর বাবা এবং মা। এর পর বাবা-মায়ের হাত ধরে বাড়িমুখো হয় ওই ছাত্রী।

ছাত্রীর বক্তব্য, ‘‘ভেবেছিলাম পুলিশের কাছে গেলেই সমস্যা মিটবে। তাই থানায় গেছিলাম। এখন আমার একমাত্র লক্ষ্য মন দিয়ে পড়াশোনা করে শিক্ষিকা হওয়া। শিক্ষিকা হয়ে আগে আমি সংসারের অভাব ঘোচাব তারপর বিয়ে কথা ভাবব।’’

ছাত্রীর বাবা বলেন, ‘‘পাত্রসায়র থানার পুলিশ আমাদের বুঝিয়েছে। এখন আর মেয়ের বিয়ের কথা ভাবছি না। ওকে ভাল করে লেখাপড়া করাতে চাই।’’ পরিবারটির পাশে থেকে ছাত্রীর পড়াশোনায় সাহায্য করার আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন।

পাত্রসায়র ব্লকের বিডিও নিবিড় মণ্ডল বলেন, ‘‘ওই নাবালিকা ছাত্রী যে ভাবে নিজের বিয়ে রুখে দিয়েছে তা অত্যন্ত গর্বের বিষয়। এ ভাবে সকলে এগিয়ে এলে সমাজ অনেক লাভবান হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Child Marriage Preventing Child Marriage bankura
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE