তাঁর আস্থা নেই পুলিশের উপরে। স্বামী খুনের কিনারা করতে তাই এ বার সিআইডি তদন্তের দাবি তুললেন নিহত রাইপুর ব্লক তৃণমূল কার্যকরী সভাপতি অনিল মাহাতো-র স্ত্রী সুলেখাদেবী। শনিবার ফোনে সুলেখাদেবী বলেন, “পুলিশের তদন্তে আমি ভরসা পাচ্ছি না। তাই মুখ্যমন্ত্রীর কাছে চিঠি দিয়ে ঘটনায় সিআইডি তদন্ত চেয়েছি।’’ বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার সুখেন্দু হীরা বলেন, “সুলেখাদেবী সি আই ডি তদন্ত চাইতেই পারেন। এনিয়ে আমার কিছু বলার নেই।’’
সুলেখাদেবীর দাবি, এ দিনই তিনি ‘ডাক যোগে’ মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে চিঠি পাঠিয়েছেন অনিলবাবু খুনের ঘটনায় সিআইডি তদন্ত চেয়ে। ঘটনাচক্রে, বৃহস্পতিবারই ওই খুনের ঘটনার চার্জশিট খাতড়া আদালতে জমা দিয়েছে পুলিশ। গত ৮ সেপ্টেম্বর রাতে রাইপুরের মটগোদা এলাকার দলীয় কার্যালয়ের সামনে গুলি করে খুন করা হয় ওই তৃণমূল নেতাকে। সুলেখাদেবী রাইপুর থানায় দলে অনিলবাবুর বিরোধী গোষ্ঠীর সাত জনের বিরুদ্ধে এফআইআর করেন। পুলিশ দফায় দফায় ওই অভিযুক্তদের গ্রেফতার করলেও চার্জশিটে তাঁদের নাম রাখেনি। উল্টে, খুনের ঘটনাটি অনিলবাবুর ঘনিষ্ঠ রাইপুর ব্লক যুব তৃণমূল সভাপতি রাজকুমার সিংহের ভাই সনৎ সিংহের মস্তিষ্ক প্রসূত বলে দাবি করেছে পুলিশ। সনৎ ছাড়াও এই খুনে জড়িত হিসেবে নিহত নেতার গাড়ির চালক জগন্নাথ নামাতা এবং রাইপুরের সিপিএম নেতা অশোক ঘোষের নাম চার্জশিটে রেখেছেন তদন্তকারীরা। পুলিশের আরও দাবি, সুলেখাদেবীর এফআইআর নাম থাকা তৃণমূল নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে খুনে জড়িত থাকার তথ্য-প্রমাণ মেলেনি।
চার্জশিট জমা পড়ার পরেই সুলেখাদেবী পুলিশি তদন্তে অনাস্থা প্রকাশ করলেন। তাঁর কথায়, “আমি প্রকৃত দোষীদের শাস্তি চাই। তদন্তে বিভিন্ন অসঙ্গতি পাচ্ছি। পুলিশের উপরে ভরসা হচ্ছে না। তাই সিআইডি-র হস্তক্ষেপ চেয়েছি।’’ রাজকুমার এ দিন বলেন, “প্রথম থেকেই আমি বলে আসছিলাম আমার ভাই এই কাজ করতে পারে না। বৌদিও এটাই বিশ্বাস করেন। তাই পুলিশের উপর তিনি আস্থা হারিয়েছেন।’’ রাইপুর ব্লক তৃণমূলের প্রাক্তন সভাপতি জগবন্ধু মাহাতোরও বক্তব্য, “প্রথম থেকেই আমি সিআইডি তদন্ত চাইছিলাম। রাইপুরের মানুষ জানতে চান, প্রকৃত দোষী কারা।’’