Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

টিকিট নিয়ে অসন্তোষ বিজেপিতে

ঝালদা ১ ব্লকের ১২ নম্বর জেলা পরিষদ নিয়ে একটি মণ্ডল রয়েছে। তার মধ্যে রয়েছেন হেঁসাহাতু, তুলিন, কলমা, ঝালদা-দঁড়দা ও মাড়ু-মসিনা— এই পাঁচটি গ্রাম পঞ্চায়েত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঝালদা শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০১৮ ০৮:২০
Share: Save:

নিচুতলা থেকে মনোনীত প্রার্থীদের টিকিট দেওয়ার বিষয়ে ঝালদায় বিজেপি অন্দরে বিতর্ক শুরু হয়েছে বলে দল সূত্রের খবর। ঝালদা ১ ব্লকের একটি মণ্ডলের নেতা-কর্মীরা নিজেদের মধ্যে বৈঠকের করে জেলা নেতৃত্বের কাছে‌ নিজেদের অসন্তোষের কথা জানিয়েছেন। বৈঠকের পরে ঝালদার বাসিন্দা জেলা কমিটির এক নেতার বিরুদ্ধে স্লোগানও দেন তাঁরা।

ঝালদা ১ ব্লকের ১২ নম্বর জেলা পরিষদ নিয়ে একটি মণ্ডল রয়েছে। তার মধ্যে রয়েছেন হেঁসাহাতু, তুলিন, কলমা, ঝালদা-দঁড়দা ও মাড়ু-মসিনা— এই পাঁচটি গ্রাম পঞ্চায়েত। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার ঝালদার একটি কমিউনিটি হলে ওই পাঁচটি পঞ্চায়েত এলাকার নেতা-কর্মীরা বৈঠকে বসেছিলেন। শাখা সংগঠনের জেলা স্তরের একাধিক নেতাও হাজির ছিলেন। পঞ্চায়েতের বিভিন্ন স্তরে নিচুতলা থেকে যাঁদের প্রার্থী করা হবে বলে ঠিক হয়েছে, তাঁদের বাদ দিয়ে অন্য কাউকে টিকিট দিলে তাঁরা মানবেন না বলে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়। অভিযোগ ওঠে, ঝালদারই বাসিন্দা জেলা কমিটির এক সাধারণ সম্পাদক মণ্ডল কমিটির অধিকারে হস্তক্ষেপ করছেন বলে।

ওই মণ্ডলের সভাপতি সুশান্ত সিংহ দেও বলেন, ‘‘ঝালদা ১২ নম্বর জেলা পরিষদ আসনে যে পাঁচটি গ্রাম পঞ্চায়েত রয়েছে, তার মধ্যে মোট ৫০টি আসন। পঞ্চায়েত সমিতির ১১টি আসন এবং জেলা পরিষদের একটি আসনে কারা প্রার্থী হবেন তা দলের নিচুতলার কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করে ঠিক করা হয়েছিল। সেই তালিকা জেলা সভাপতির কাছে জমাও করা হয়েছে। এই প্রার্থীদের তরফে টিকিট বা বি-ফর্ম মণ্ডল সভাপতিই দেবেন। সেটাই দস্তুর। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, মণ্ডল সভাপতিকে বাদ দিয়ে জেলার এক সাধারণ সম্পাদক বা অন্য মণ্ডলের সভাপতি টিকিট দিচ্ছেন। এমনকী দলেরই বিভিন্ন লোকজনের কাছ থেকে শুনতে হচ্ছে, কোনও কোনও আসনে নিচুতলা থেকে যাঁকে প্রার্থী হিসেবে ঠিক করা হয়েছে, তাঁকে বাদ দিয়ে অন্য জনকে টিকিট দেওয়া হচ্ছে।’’ তাঁর দাবি, এই বিষয়টি যখন জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক তথা ঝালদারই বাসিন্দা জ্যোতির্ময় সিংহ মাহাতোকে বলা হয়, তিনি জানান, কাকে টিকিট দেওয়া হবে না হবে তা জেলা কমিটি দেখবে। সুশান্তবাবু বলেন, ‘‘এটা তো মণ্ডল সভাপতির অধিকারে হস্তক্ষেপ।’’

দলের যুব মোর্চার নেতা রাজেশ রায় বলেন, ‘‘আমরা জেলার অন্য মণ্ডলগুলিতে খোঁজ নিয়ে দেখেছি, সেখানে মণ্ডল সভাপতিরাই প্রার্থীদের বি-ফর্ম দিচ্ছেন। ঝালদার এই পঞ্চায়েতগুলির বেশ কিছু আসনে আমরা হাড্ডাহা়ড্ডি লড়তে বা জিততে পারি। সে রকম কিছু আসনে বিশেষ কারণে অন্য কাউকে প্রার্থী করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ পেয়েছি। এটা আমরা মানব না।’’ তাঁর দাবি, বৈঠকের পরে গোটা ঘটনা জেলা সভাপতি, কেন্দ্রীয় কর্ম সমিতির সদস্য বি পি সিংহ দেও এবং জেলা কমিটির কয়েকজন নেতাকে জানানো হয়েছে।

অবশ্য, ঝালদায় তাঁকে নিয়ে দলের কর্মীদের মধ্যে কোন ক্ষোভ বা টিকিট বণ্টন নিয়ে কোনও অসন্তোষের কথা জানেন না বলে দাবি করেছেন বিজেপির জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক জ্যোতির্ময় সিংহ মাহাতো। তিনি বলেন, ‘‘যাঁরা প্রার্থী হবেন তাঁদের নামে তো তালিকা তৈরি রয়েছে। সেই মোতাবেক টিকিট দেওয়া হবে। এর মধ্যে অন্য কোনও ব্যাপারই নেই।’’ এ দিনের বৈঠকের ব্যাপারে তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘‘হতে পারে অন্য দল থেকে আসা দু’-একজনের মধ্যে অসন্তোষ রয়েছে।’’ দলের জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী বলেন, ‘‘আমার কাছে এই মর্মে কোনও খবর নেই। কিছু হয়ে থাকলে খোঁজ নিচ্ছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE