Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
bankura

Simlapal: সিমলাপালের প্রশান্তর চিকিৎসা শুরু হাসপাতালে, ৫ বছর পর শিকল কেটে ‘শাপমোচন’

বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে চিকিৎসার আয়োজন বিধায়ক অরুপ চক্রবর্তীর।

হাসপাতালে প্রশান্ত মান্ডি।

হাসপাতালে প্রশান্ত মান্ডি। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০২১ ১৯:০০
Share: Save:

অবশেষে টনক নড়ল প্রশাসনের। টানা পাঁচ বছর শিকলবাঁধা অবস্থায় দিন কাটাচ্ছিলেন বাঁকুড়ার শালবনি গ্রামের যুবক প্রশান্ত মান্ডি। সেই খবর প্রকাশিত হতেই নড়েচড়ে বসেছে স্থানীয় প্রশাসন। সোমবার প্রশাসনিক কর্তাদের উদ্যোগে গ্রামের বাড়ি থেকে গাড়িতে করে তুলে এনে বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করা হয় প্রশান্তকে।

বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে প্রশান্তর চিকিৎসার আয়োজন করেন তালড্যাংরার বিধায়ক অরুপ চক্রবর্তী। সোমবার প্রশান্তকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর, স্থানীয় বিধায়ক উপস্থিত থেকে ভর্তি প্রক্রিয়ার তদারকি করেন। অরূপ বলেন, ‘‘সংবাদমাধ্যমে প্রশান্ত মান্ডির বন্দিদশা দেখে আমার মন ভারাক্রান্ত হয়ে উঠেছিল। তড়িঘড়ি তাঁর সব ধরনের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতি, ব্লক প্রশাসন এবং পুলিশ প্রশাসনও এই কাজে আমাদের সাহায্য করেছে। চিকিৎসা ছাড়াও প্রশাসন সব রকম ভাবে ওই পরিবারটির পাশে আছে। আশা করি, প্রশান্ত দ্রুত সুস্থ হয়ে নিজের সুস্থ স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবে।’’

এত দিন পরেও হলেও, প্রশাসনিক তৎপরতায় খুশি প্রশান্তর মা ভারতী মান্ডি। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের পক্ষে প্রশান্তর চিকিৎসা করানো সম্ভব ছিল না। স্বাভাবিক ভাবেই ভেবে নিয়েছিলাম, প্রশান্তকে বাকি জীবনটা হয়তো শিকলে বন্দি অবস্থাতেই কাটাতে হবে। প্রশান্তকে আবার সুস্থ স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে দিতে সকলে যে ভূমিকা নিয়েছেন তাতে আমরা অত্যন্ত খুশি।’’ উৎফুল্ল প্রশান্তর বন্ধুরাও। প্রশান্তর সহপাঠী শিবলাল হেমব্রম বলেন, “আমরা নিশ্চিত ঠিকমতো চিকিৎসা হলে আমরা আবার আমাদের সুস্থ স্বাভাবিক বন্ধু প্রশান্তকে ফিরে পাব।’’

বাঁকুড়ার পিড়লগাড়ি মোড়ে পণ্ডিত রঘুনাথ মুর্মু মহাবিদ্যালয় থেকে স্নাতক হওয়ার পর আর পাঁচ জন যুবকের মতোই চাকরির জন্যে হন্যে হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন প্রশান্ত। তাঁর পরিবারের দাবি, ২০১৬ সালে স্থানীয় একটি হাইস্কুলে পার্শ্বশিক্ষক নিয়োগের মৌখিক পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি ফেরোর পরেই মানসিক অবসাদ গ্রাস করে তাঁকে। নিজের সমস্ত শংসাপত্র পুড়িয়ে ফেলার চেষ্টা করেন তিনি। হারিয়ে ফেলেন মানসিক ভারসাম্যও। হতদরিদ্র প্রশান্তর পরিবার নিজেদের শেষ সম্বল বিঘে দুই জমি বন্ধক দিয়ে তাঁর চিকিৎসা শুরু করে। কিন্তু অর্থাভাবে তাও বন্ধ হয়ে যায় এক সময়। অগত্যা তাঁকে বাড়িতে শিকলে বেঁধে রাখতে শুরু করেন তাঁর পরিবারের লোকজন। তার পর পার হয়ে গিয়েছে পাঁচ বছর। এক দিন আচমকাই এ হেন প্রশান্তর খোঁজ পান তাঁর সহপাঠীরা। তাঁরাই নেটমাধ্যমে প্রশান্তকে সুস্থ করে তোলার জন্য প্রশাসনের সাহায্যের কাতর আর্তি জানান। খবর পায় সংবাদমাধ্যমও। এর পর আলোকবৃত্তে চলে এসেছেন দীর্ঘ সময় বিস্মৃতির অন্ধকারে তলিয়ে যাওয়া ওই যুবক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Health bankura Young man Simlapal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE