Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
COVID-19

ফের লকডাউনের ভয়ে ফেরা শুরু

পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে সকলেই ভিন রাজ্যে কাজে গিয়েছিলেন সকলেই। ফের করোনা আতঙ্কে তাঁরা অনেকেই ফিরে এসেছেন।

 মুরারইয়ে ফিরল এক পরিযায়ী শ্রমিকের পরিবার।

মুরারইয়ে ফিরল এক পরিযায়ী শ্রমিকের পরিবার। নিজস্ব চিত্র।

তন্ময় দত্ত 
মুরারই শেষ আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০২১ ০৫:৩৩
Share: Save:

দেশ জুড়ে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বেড়ে চলেছে। ফের লকডাউনের আতঙ্কে জেলায় ফিরতে শুরু করেছেন পরিযায়ী শ্রমিকেরাও। মুরারই ২ ব্লকের নন্দীগ্রাম,পাইকর, জাজিগ্রাম ছাড়াও অনেক গ্রামের মানুষজন স্বর্ণশিল্পীর কাজে মুম্বইয়ে থাকেন। মুম্বইয়ে জনতা কার্ফু ঘোষণা হবে আঁচ পেয়েই তাঁরা অনেকে ফিরে এসেছেন। এ ছাড়াও মিত্রপুর, রুদ্রনগর, আমডোল পঞ্চায়েতের অনেকেই নির্মাণ শ্রমিকের কাজে মুম্বাই, দিল্লি ও কেরল ছাড়াও বিভিন্ন রাজ্যে আছেন। ট্রেন চলাচল এখনও স্বাভাবিক থাকায় সকলেই টিকিট কেটে বাড়ি ফেরার চেষ্টা করছেন।

পরিযায়ী শ্রমিকদের দাবি, গত বছর বাইরে থাকা এই এলাকার পরিযায়ী শ্রমিকদের লকডাউনের ফলে সমস্যায় পড়তে হয়েছিল। দিনের পর দিন শুধু মুড়ি খেয়ে থাকতে হয়েছে। রোজগার ছিল না। হাতে ছিল না এক টাকাও। বাড়ির ছাগল, গরু ও সোনা বিক্রি করে ফেরার ভাড়া পাঠাতে হয়েছিল পরিবারের লোকদের। তার পরে হয় বাস ও ট্রাক ভাড়া করে বাড়ি ফিরতে পেরেছিলেন অনেকেই। বাড়ি ফিরেও লকডাউনের ফলে কর্মহীন ছিলেন অধিকাংশ পরিযায়ী শ্রমিক। তাই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে সকলেই ভিন রাজ্যে কাজে গিয়েছিলেন সকলেই। ফের করোনা আতঙ্কে তাঁরা অনেকেই ফিরে এসেছেন।

পেশায় স্বর্ণশিল্পী মধু রাজবংশী, পাঁচকড়ি প্রামাণিকেরা বলেন, ‘‘আমরা দুই দিন হল বাড়ি ফিরেছি। আমাদের সঙ্গে অনেকেই মুম্বই থেকে বাড়ি এসেছেন। ট্রেনের টিকিট কেটে বাড়ি পৌঁছে গেছি। প্রথম লকডাউনে দু’মাস মুম্বাইয়ে আটকে গিয়েছিলাম। কাজ না থাকায় আমাদের অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। তাই এ বারে ঝুঁকি না নিয়ে বাড়ি চলে এসেছি। মুরারই ও পাইকর থানার অনেকেই ট্রেনে বাড়ি ফেরার চেষ্টা করছেন।’’ অন্যদিকে মুরারই থানার পলশা, ডুমুরগ্রাম ও চাতরা পঞ্চায়েতের অনেকেই দিল্লীতে নির্মাণ শ্রমিক ও অটো ছাড়াও বিভিন্ন কাজের সঙ্গে যুক্ত। তাঁরাও অনেকে বাড়ির উদ্দেশে রওনা হয়েছেন।

পলশা গ্রামের বাসিন্দা আসগর শেখ ও কুরবান আলীরা বলেন, ‘‘করোনাভাইরাসের সংক্রমণ যে ভাবে বাড়ছে তাতে অনেক জায়গায় নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। ফের লকডাউনে যাতে আটকে না পড়তে হয় সেই ভয়ে অনেকেই বাড়ি ফিরে আসছেন।’’

শুধু ভিন্‌ রাজ্য নয়, কলকাতা ও অন্য জেলা থেকেও বুধবার অনেককেই বাড়ি ফিরে আসতে দেখা যায়। তাঁদের মধ্যে কনকপুর গ্রামের বাসিন্দা ধীরেন দাস বলেন, ‘‘কলকাতায় জুতো তৈরির কারখানায় কাজ করতাম। গত বছর লকডাউনে পরিবার ও ছোট বাচ্চা নিয়ে হেঁটে বাড়ি ফিরেছিলাম। এ বছর করোনা বাড়ছে শুনে আর ঝুঁকি না নিয়ে বাড়ি চলে এসেছি। যে গ্রামে জন্ম যেখানে কাজ না থাকলেও প্রতিবেশীদের সাহায্যে ও রেশনের খাদ্য সামগ্রী খেয়ে পরিবার নিয়ে বেঁচে থাকব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Migrant Workers Coronavirus in West Bengal COVID-19
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE