Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

ক্রাচে ভর দিয়ে মিছিল তিন দিন

কেউ দেখতে পান না, কেউ খুঁড়িয়ে হাটেন, কাউকে হাঁটতে হয় ক্রাচের সাহায্যে। কিন্তু, অদম্য মানসিক জোরে তাঁরাই পঞ্চাশ কিলোমিটার পথ হেঁটে নিজেদের সামাজিক সুরক্ষা, উন্নয়ন-সহ বিবিধ দাবিতে জেলা প্রশাসনের দ্বারস্থ হলেন।

এ ভাবেই পেরিয়েছেন পঞ্চাশ কিলোমিটার পথ। নিজস্ব চিত্র।

এ ভাবেই পেরিয়েছেন পঞ্চাশ কিলোমিটার পথ। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০১৭ ০১:১৩
Share: Save:

কেউ দেখতে পান না, কেউ খুঁড়িয়ে হাটেন, কাউকে হাঁটতে হয় ক্রাচের সাহায্যে। কিন্তু, অদম্য মানসিক জোরে তাঁরাই পঞ্চাশ কিলোমিটার পথ হেঁটে নিজেদের সামাজিক সুরক্ষা, উন্নয়ন-সহ বিবিধ দাবিতে জেলা প্রশাসনের দ্বারস্থ হলেন। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য প্রতিবন্ধী সম্মিলনীর পুরুলিয়া জেলা কমিটি রঘুনাথপুরের জয়চণ্ডী পাহাড়ের পাদদেশ থেকে পুরুলিয়া শহরের উদ্দেশে এই পদযাত্রা শুরু করেছিল গত ৩১ ডিসেম্বর সকালে। গন্তব্য পৌঁছলেন মঙ্গলবার।

মদুসূদন দাস, সুজিত মাহাতো ক্রাচের সাহায্য ছাড়া হাঁটতে পারেন না। লছমি রাউতের মতো কিশোরীও হাঁটতে পারে না। লছমি এই মিছিলে শরিক হয়েছে মায়ের সঙ্গে। এই কিশোরীর মা জ্যোৎস্না দেবীর কথায়, ‘‘জন্ম থেকেই ওর ডান পা বাঁকা। তাই হাঁটতে পারে না। কিন্তু, দাবিপূরণে ওর পাশে থাকতে আমিও ওর সঙ্গে হেঁটেছি।’’ রঘুনাথপুরের গোবিন্দপুরের বাসিন্দা ভৈরবচন্দ্র মাজির পরিবারের ছয় সদস্যই বিশেষ ভাবে সক্ষম। ভৈরববাবুর কথায়, ‘‘আমার পরিবারের ছয় সদস্যই নানা সমস্যার শিকার। দুই ছেলে সন্দীপ ও শ্যামল চোখে দেখে না। কিন্তু, নাছোড় মানসিকতা থেকে ওঁরাও
হেঁটেছে মিছিলে।’’

সন্দীপ-শ্যামলের মতো কাশীপুরের ঘুটলিয়া গ্রামের বাসিন্দা অঞ্জনা মাহাতোও ক্রাচের সাহায্য ছাড়া হাঁটতে পারেন না। অঞ্জনার কথায়, ‘‘আমাদের সামাজিক সুরক্ষার দাবিতে ঠান্ডা ও কষ্ট উপেক্ষা করে পথে নেমেছি।’’

সংগঠনের দেড়শো সদস্য এ ভাবেই পুরুলিয়া-বরাকর রোড ধরে পঞ্চাশ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেন।

সংগঠনের জেলা সম্পাদক লালমোহন মাহাতো বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মতো কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারি চাকরিতে প্রতিবন্ধকতা থাকা ব্যক্তির শূন্যপদে নিয়োগ, তাঁদের নাম বিপিএল তালিকায় তোলা, লোকাল ও প্যাসেঞ্জার ট্রেনের ভাড়ায় ৭৫ শতাংশ ছাড়ের ব্যবস্থা করা-সহ ২৬ দফা দাবি জানানো হয়েছে।’’ সংগঠনের আর এক সদস্য মধুসূদন দাস জানান, ছাত্রবৃত্তি নিয়মিত করা-সহ তা বাড়ানোর দাবিও তোলা হয়েছে। বর্তমানে মাসে ৩০০ টাকা দেওয়া হয়। জেলায় পাঁচ হাজারের মত প্রতিবন্ধী ছাত্রছাত্রী থাকলেও বর্তমানে মাত্র ছ’শো ছাত্রছাত্রী প্রতিবন্ধী ভাতা পায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Disabled people protest rally
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE