Advertisement
২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩
Amartya Sen-Visva Bharati

অমর্ত্যকে ‘অসম্মানের’ প্রতিবাদে প্রতীচীতে যোগেন, শুভাপ্রসন্নরা, সুমন আসবেন সন্ধ্যায়

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ মতো শনিবার প্রতীচীর সামনে বাউলশিল্পীদের নিয়ে শান্তিপূর্ণ অবস্থানে বসলেন বিশিষ্টজনেরা। গান, কবিতা, ছবি আঁকার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে প্রতিবাদ।

অমর্ত্য সেনকে ‘হেনস্থা’র প্রতিবাদে প্রতীচীর সামনে ধর্না মঞ্চ। নিজস্ব চিত্র।

অমর্ত্য সেনকে ‘হেনস্থা’র প্রতিবাদে প্রতীচীর সামনে ধর্না মঞ্চ। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বোলপুর শেষ আপডেট: ০৬ মে ২০২৩ ১৮:০৩
Share: Save:

অমর্ত্য সেনকে ‘অসম্মানের’ প্রতিবাদে শুক্রবার থেকেই ‘প্রতীচী’ বাড়ির সামনে আন্দোলন শুরু হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ মতো শনিবার প্রতীচীর সামনে বাউলশিল্পীদের নিয়ে শান্তিপূর্ণ অবস্থানে বসলেন বিশিষ্টজনেরা। গান, কবিতা, ছবি আঁকার মধ্যে দিয়ে শুরু হয়েছে প্রতিবাদ।

প্রতিবাদ মঞ্চে উপস্থিত রয়েছেন শুভাপ্রসন্ন, গৌতম ঘোষ, প্রসূন ভৌমিক, মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ, সাংসদ অসিত মাল-সহ শাসক তৃণমূলের বিধায়কেরা। সন্ধ্যায় আসার কথা কবীর সুমনের। এ ছাড়াও সেখানে রয়েছেন বিশ্বভারতীর পড়ুয়া, প্রাক্তনী এবং আশ্রমিকেরা। রবীন্দ্রজয়ন্তী পর্যন্ত এই প্রতিবাদ কর্মসূচি চলার কথা। উপস্থিত কমবেশি সকলেই কড়া ভাষায় বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ এবং উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর সমালোচনা করেছেন। সরাসরি বিজেপিকে আক্রমণ করেছেন যোগেন চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘‘সবটাই ঘটছে বিজেপির নির্দেশে। উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে বিজেপির প্রতিনিধি হিসাবে পাঠানো হয়েছে। সবটাই পরিকল্পনামাফিক করা হচ্ছে।’’ এ প্রসঙ্গে বিজেপির জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহা বলেন, ‘‘যে যা খুশি বলতে পারেন। কিন্তু সবাই এটা বোঝেন যে, এটা বিশ্বভারতী এবং অমর্ত্য সেনের ব্যাপার। বিশ্বভারতী যেটা ভাল মনে করছে, সেটাই করছে। এখানে বিজেপির কোনও হাত নেই।’’

জমি-বিতর্কে অমর্ত্যের পাশে থাকার বার্তা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বার বার দিয়েছেন। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে প্রতীচীতে গিয়ে নোবেলজয়ীর হাতে জমির নথিও তুলে দিয়ে এসেছেন। বুধবার মালদহ সফরে যাওয়ার পথে বোলপুর স্টেশনে দলের নেতাকর্মীদের বিশ্বভারতীর উচ্ছেদ-নোটিসের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলার বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী। সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রী ৬ এবং ৭ মে অমর্ত্য সেনের বাড়ির সামনে শান্তিপূর্ণ অবস্থান করার নির্দেশ দেন। সেই নির্দেশ মতো এই প্রতিবাদ মঞ্চের আয়োজন করে শাসক তৃণমূল। শুক্রবারও মালদহ থেকে ফেরার পথে সন্ধ্যায় বোলপুর স্টেশনে ট্রেনের কামরায় দাঁড়িয়ে কারও নাম না করেই তিনি বলেন, ‘‘অমর্ত্য সেনের বাড়িতে হাত দিলে আমাকে তো চেনে না, যা দেব না!’’

অমর্ত্যকে দেওয়া বিশ্বভারতীর উচ্ছেদ-নোটিসের বিরুদ্ধে শুক্রবার সকাল থেকেই অবশ্য ধর্না-অবস্থানে বসেছে ‘সামাজিক মর্যাদা রক্ষা সমিতি’। নোবেলজয়ীর বাড়ির সামনে থেকে শান্তিনিকেতন স্টেট ব্যাঙ্ক পর্যন্ত মিছিলও করেন বিশ্বভারতীর আশ্রমিক এবং প্রাক্তনীরা। মিছিল শেষে রবীন্দ্রগান এবং ‘রক্তকরবী’ নাটকের মধ্যে দিয়েও প্রতিবাদ করেন শিল্পীরা।

এই কর্মসূচির কারণে ক্যাম্পাস সংলগ্ন এলাকার শান্তি-শৃঙ্খলা ভঙ্গ হতে পারে, এই আশঙ্কা থেকে ইতিমধ্যেই পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছে বিশ্বভারতী। বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক মহুয়া বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘প্রশাসনকে জানানো হয়েছে, যাতে কোনও রকম অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে।’’ পাশাপাশি, প্রতীচী এলাকায় ১৪৫ ধারা জারি থাকা সত্ত্বেও কেন এ ধরনের আন্দোলন সংগঠিত করা হয়েছে, তা শুক্রবারও বিবৃতি জারি করে প্রশ্ন তুলেছেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি অমর্ত্যকে নোটিস ধরিয়ে বিশ্বভারতী জানিয়েছিল, ৬ মে, শনিবারের মধ্যে বিতর্কিত ১৩ ডেসিমাল জমি খালি করে দিতে হবে। এই নোটিসের বিরুদ্ধেই কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন অমর্ত্য। সেই মামলায় উচ্চ আদালতের নির্দেশ, বীরভূম জেলা আদালতে মামলার নিষ্পত্তি না-হওয়া পর্যন্ত অমর্ত্য সেনের জমির বিষয়ে কোনও পদক্ষেপ করতে পারবে না বিশ্বভারতী। উচ্ছেদ-নোটিসে স্থগিতাদেশ দেওয়ার পাশাপাশি কোর্টের নির্দেশ, ১০ মে দুপুর ২টোয় জেলা আদালতে এই সংক্রান্ত মামলাটির শুনানি করতে হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE