Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

গন্ধেশ্বরীর উচ্ছেদ অভিযান পিছোল

বিজ্ঞপ্তি জারি করে দিনক্ষণ ঠিক করেও গন্ধেশ্বরী নদীতে অবৈধ নির্মাণ উচ্ছেদ অভিযানের দিন পিছোল বাঁকুড়া জেলা প্রশাসন। প্রশাসনের ঘোষণা অনুযায়ী, মঙ্গলবারই উচ্ছেদ অভিযান শুরু করার কথা ছিল।

নদীর পাড় ছাপিয়ে এ ভাবেই নির্মাণ হচ্ছে বাঁকুড়ায়।—নিজস্ব চিত্র

নদীর পাড় ছাপিয়ে এ ভাবেই নির্মাণ হচ্ছে বাঁকুড়ায়।—নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০১৬ ০১:১৭
Share: Save:

বিজ্ঞপ্তি জারি করে দিনক্ষণ ঠিক করেও গন্ধেশ্বরী নদীতে অবৈধ নির্মাণ উচ্ছেদ অভিযানের দিন পিছোল বাঁকুড়া জেলা প্রশাসন। প্রশাসনের ঘোষণা অনুযায়ী, মঙ্গলবারই উচ্ছেদ অভিযান শুরু করার কথা ছিল। তবে আপাতত ইদ ও রথযাত্রার আগে সেই অভিযান হবে না বলেই জানা গিয়েছে। এ ব্যাপারে বাঁকুড়ার জেলা সভাধিপতি অরূপ চক্রবর্তী বলেন, “রমজান মাস উপলক্ষেই উচ্ছেদ অভিযান কিছু দিন পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে এর মধ্যেই নদীর জায়গায় যাঁরা অবৈধ নির্মাণ করেছেন, তাঁদের নিজেদেরই সেই নির্মাণ ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পুলিশের তরফেও রমজান মাসের কারণেই উচ্ছেদ অভিযান চালানোয় ছাড়পত্র দেওয়া হয়নি। এরপরেই সোমবার নদীর জায়গায় ঘরবাড়ি ও দোকান তৈরি করা লোকজনদের ডেকে জেলা প্রশাসন একটি বৈঠক করে। ওই বৈঠকে জেলা সভাধিপতি অরূপবাবু ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বাঁকুড়া সদর মহকুমাশাসক অসীমকুমার বালা, বাঁকুড়ার পুরপ্রধান মহাপ্রসাদ সেনগুপ্ত। বৈঠকে জানিয়ে দেওয়া হয় উচ্ছেদ অভিযান কিছুদিন পিছিয়ে দেওয়া হচ্ছে। মাঝের এই সময়ের মধ্যে নির্মাণকারীরাই যাতে ওই সব অবৈধ নির্মাণ ভেঙে ফেলে, সেই নির্দেশও দেওয়া হয়। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, “আমরা নদীর জায়গায় অবৈধ নির্মাণ ভেঙে ফেলার অভিযান চালাতে সব রকম ভাবে প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছিলাম। কিন্তু শেষ মুহূর্তে নিষেধাজ্ঞা আসায় পিছিয়ে যেতে হল।”

ঘটনা হল, মাসখানেক আগেই বাঁকুড়া পুরসভার রামানন্দ পাম্পিং স্টেশনের কাছেই গন্ধেশ্বরী নদীর বুকে একটি অবৈধ নির্মাণকে কেন্দ্র করে বিতর্ক দানা বাঁধে এরপরেই জেলা প্রশাসনের চোখ পড়ে মৃতপ্রায় নদী গন্ধেশ্বরীর উপর। পরিদর্শনে গিয়ে বাঁকুড়া সদর মহকুমাশাসক একাধিক অবৈধ নির্মাণ দেখতে পান নদীর বিভিন্ন জায়গায়। যাতে নদীর স্বাভাবিক গতি ব্যাহত হচ্ছে। এরপরেই ৫০টির বেশি নির্মাণকে অবৈধ চিহ্নিত করে জেলা প্রশাসন। যার মধ্যে বেশিরভাগই দোকান ও কিছু ঘরবাড়িও রয়েছে। ওই সব অবৈধ নির্মাণ ভেঙে ফেলা হবে জানিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করে অভিযানের দিনও ঘোষণা করে প্রশাসন। শুধু অবৈধ নির্মাণ ভেঙে ফেলাই নয়, তার পাশাপাশি একশো দিনের কাজের প্রকল্পে নদীটিকে বাঁচাতে প্রকল্পও নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছিল জেলা প্রশাসন।

প্রশাসনের সেই আশ্বাসে মরা নদী গন্ধেশ্বরী ফের বেঁচে উঠবে বলেই আশা করেছিলেন পরিবেশ সচেতন মানুষজন। তবে শেষ মুহূর্তে প্রশাসন পিছিয়ে আসায় ধন্দ শুরু হয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যেই। রাজনৈতিক চাপে পড়ে প্রশাসন পিছু হটছে কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন বাঁকুড়া শহরের অনেকেই।

যদিও প্রশাসন তার নিজের সিদ্ধান্ত বদলায়নি বলেই জানাচ্ছেন জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু। তিনি বলেন, “রমজান মাস বলেই পুলিশ এই অভিযান ক’টা দিন পিছিয়ে দিতে বলেছে। সেই মোতাবেক আমরাও একটু অপেক্ষা করছি। তবে নদীতে গড়ে তোলা অবৈধ নির্মাণ ভাঙা হবেই।”

যদিও সতীঘাট ব্যবসায়ী কমিটির সম্পাদক দুর্গাদাস মিশ্র দাবি করেছেন, ‘‘অবৈধ নির্মাণ ভেঙে ফেলা হোক, আমরাও চাই। প্রশাসনের নির্দেশ পাওয়ার পরে তাই বহু ব্যবসায়ীও নিজে থেকেই দোকান ভাঙতে শুরু করেছেন।’’

শেষ পর্যন্ত কী হয়, সে দিকেই তাকিয়ে বাঁকুড়া।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

eviction bank river
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE