ফাইল চিত্র।
ছাত্রদের দু’পক্ষের মারপিটে উত্তপ্ত হল বিশ্বভারতী। মঙ্গলবার রাতে বিদ্যাভবন ছাত্রাবাসের সামনে এক পক্ষ অন্য দলের উপরে রড-লাঠি নিয়ে চড়াও হয় বলে অভিযোগ। দু’পক্ষের কয়েক জন অল্পবিস্তর জখম হয়েছেন। রাতেই শান্তিনিকেতন থানার পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এক ছাত্রকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। দু’দলই নিজেদের শাসকদলের সমর্থক বলে দাবি করেছে। কোনও পক্ষই থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেনি।
ঠিক কী হয়েছে? এক পক্ষের ছাত্রনেতা জামসেদ আলি খান জানান, মঙ্গলবার রাত সাড়ে দশটা নাগাদ হস্টেলে কয়েক জন খাওয়া দাওয়া করছিল। কেউ খাওয়া সেরে ফিরছিল। জামসেদের অভিযোগ, ঠিক সেই সময়ে বিদ্যাভবন ছাত্রাবাসের সামনে কয়েক জন প্রাচীন ইতিহাস বিভাগের ছাত্র আজহারউদ্দিন ও বাগবুল ইসলামের উপরে চড়াও হয়। সেই চিৎকারে ছাত্রাবাস থেকে বেরিয়ে আসেন জামসেদ ও অন্যরা। শুরু হয় তর্কাতর্কি। তার পরেই হাতাহাতি থেকে রড ও লাঠি দিয়ে মারধর করা হয় বলে জামসেদের দাবি। ‘‘আমাদের মারতে পরিকল্পিত ভাবেই ওরা এসেছিল। ওরা জানতো বাইরে ছেলেরা চিৎকার করলেই আমরা বেরিয়ে আসবো। তখনই আমাদের মারবে’’— অভিযোগ করেছেন জামসেদ আলি খান। মারধরে বিশ্বভারতী শারীরশিক্ষা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র আলাউদ্দিন খান গুরুতর জখম হন। প্রথমে পিয়ার্সন মেমোরিয়ালে পরে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
কিন্তু, মারধর কেন? জামসেদের জবাব, ‘‘বিশ্বভারতীর বেশ কিছু দায়িত্ব আমাদের হাতে রয়েছে। তাতেই ওদের হিংসা।’’ ওরা কারা তা খোলাখুলি জানিয়ে দিয়েছেন জামসেদ। অভিযোগের আঙুল ছাত্রনেতা অচিন্ত্য বাগদির দিকে। অচিন্ত্যর পাল্টা অভিযোগ, ‘‘দীর্ঘ দিন ধরে ছাত্রাবাসে বহিরাগতদের আনাগোনা রয়েছে। বারবার পরীক্ষায় ফেল করেও অনেকে ছাত্রাবাসগুলিতে রাজত্ব করছেন।’’ তিনি জানাচ্ছেন, ছাত্রাবাসে সব কিছু নিয়ম মেনে করতে হবে, এই মর্মে কিছু দিন আগেই কর্তৃপক্ষকে একটি স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছিল। যার অন্যতম উদ্যোক্তা ছিলেন বিদ্যাভবন ছাত্রাবাসের প্রাচীন ইতিহাস বিভাগের স্নাতকের প্রথমবর্ষের ছাত্র দেবাশিস সাহা। অভিযোগ, মঙ্গলবার রাত ১১টা নাগাদ বহিরাগতরা দেবাশিসের উপর চড়াও হয়। তারপরই অশান্তির শুরু। দেবাশিস ছাত্রনেতা অচিন্ত্য-ঘনিষ্ঠ বলেই এলাকায় পরিচিত। তাঁকেও গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। দু’পক্ষই দাবি করেছে অন্য দল তাঁদের উপরে প্রথমে হামলা করে। সেই সময়ে প্রতিরোধ করা হয়েছে মাত্র।
এই গোলমালে তিরিবিরক্ত কিছু ছাত্র। বিদ্যাভবনের একদল ছাত্রের কথায়, প্রায় ২৫০ জন ছাত্র রয়েছেন। কিছু দিনের মধ্যেই পরীক্ষা শুরু হবে। এই দ্বন্দ্বের জন্য সাধারণ ছাত্রদের ক্ষতি হচ্ছে। তাঁরা ছাত্রাবাসে দ্রুত শান্তি-শৃঙ্খলা ফেরানোর আবেদন রেখেছেন। উঠছে বহিরাগতদের প্রবেশ বন্ধ করার দাবিও। বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য সবুজকলি সেন বলেন, ‘‘বিশ্বভারতীর ভিতরে এই রকমের ঘটনা বরদাস্ত করা হবে না। কোনও বহিরাগত যাতে ছাত্রাবাসে ঢুকতে না পারে বা কোনও বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি যাতে তৈরি না হয় সে দিকে নিরাপত্তা বিভাগকে নজর রাখতে বলব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy