নিজস্ব চিত্র
মুখের লাল কালো দাগ বা জড়ুলের সমস্যার সমাধানে অত্যাধুনিক লেজার অস্ত্রোপচার পদ্ধতি চালু হল বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, কলকাতার বাইরে, জেলায় এমন সুযোগ প্রথমবার পেতে চলেছেন সাধারণ মানুষ। এর সাহায্যে অনেক সমস্যারই স্থায়ী সমাধান করা যাবে বলে দাবি করেছেন চিকিৎসকরা।
বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজের বহির্বিভাগে চর্মরোগ শাখায় প্রতিদিনই গড়ে ৫০০-এর বেশি রোগী চিকিৎসা করাতে আসেন। এই হাসপাতালের চর্মরোগ বিভাগের নামডাক থাকায় ত্বকের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা নিয়ে শুধুমাত্র বাঁকুড়া জেলা নয়, পার্শ্ববর্তী পুরুলিয়া,ঝাড়গ্রাম,পশ্চিম বর্ধমান,পুর্ব বর্ধমানের একাংশ, পশ্চিম মেদিনীপুরের একাংশ এমনকি পার্শ্ববর্তী রাজ্য ঝাড়খণ্ড থেকেও প্রতিদিন রোগীরা বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে ভিড় জমান। বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজের চর্ম রোগ বিভাগের চিকিৎসকদের দাবি এই বিপুল সংখ্যক রোগীর প্রায় দশ শতাংশ রোগী আসেন মূলত মুখে জড়ুল বা লাল-কালো দাগ এর সমস্যা সমাধানের আশায় । এ ছাড়াও কিছু সংখ্যক মহিলা রোগী আসেন যাঁদের পুরুষদের মতো গোঁফ দাড়ি গজিয়ে ওঠে। এই ধরনের অসুখগুলির চিকিৎসার ক্ষেত্রে এতদিন চর্মরোগ বিভাগের চিকিৎসকদের ভরসা করতে হত গুটিকয় মলম ও ওষুধের উপরে। এর ফলে এই ধরনের সমস্যা সমাধানে যেমন অনেক বেশি সময় লাগত তেমনই অনেক ক্ষেত্রে সমস্যাগুলি পুরোপুরি নির্মূল করা সম্ভব হত না। এই সমস্যা সমাধানের উদ্যেশ্যেই এ বার বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজের চর্ম বিভাগে শুরু হতে চলেছে অত্যাধুনিক লেজার সার্জারি । এই উদ্দেশ্যে ইতিমধ্যেই ওই হাসপাতালের চর্ম বিভাগে বসানো হয়েছে অত্যাধুনিক লেজার যন্ত্র । চিকিৎসকদের দাবি, জন্মগত ভাবে বা অন্য কোনো কারনে মুখ ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে তৈরি হওয়া লাল, কালো দাগ ও জরুল নির্মূল করার ক্ষেত্রে বা ‘হার্সিডিসম’-এর চিকিৎসায় মন্ত্রের মতো কাজ করবে এই অত্যাধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি ।
বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজের চর্মরোগ বিভাগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অর্ঘ্য প্রসূন ঘোষ বলেন, “এ রাজ্যের জেলা স্তরের কোনো হাসপাতালেই চর্মরোগের চিকিৎসায় এই ধরনের লেজার যন্ত্রের ব্যবহারের পরিকাঠামো নেই। কলকাতায় হাতে গোনা কয়েকটি হাসপাতালে লেজার যন্ত্র থাকলেও বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজের যন্ত্রটি সেগুলির মধ্যে সর্বাধুনিক। বেসরকারি ক্ষেত্রে লেজার থেরাপির খরচ অনেক বেশি। অনেকেই সেই খরচ বহন করতে পারেন না। বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে এই চিকিৎসা শুরু হওয়ায় বিনা খরচে সেই চিকিৎসার সুযোগ পাবেন সাধারন মানুষ।’’ বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ পার্থপ্রতিম প্রধান বলেন, “করোনা চিকিৎসার পাশাপাশি আমরা বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজের সমস্ত বিভাগের চিকিৎসা ব্যবস্থাই উন্নত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। সেই উদ্যোগেরই অঙ্গ হিসাবে এই লেজার যন্ত্র হাসপাতালে আনা হয়েছে। জরুল,মুখে লাল কালো দাগ বা ক্ষতর দাগ শুধু একটি মানুষের সৌন্দর্যর ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি করে তাই নয় অনেক সময় রোগীর মানসিক সমস্যাও তৈরি করে । এই যন্ত্রের সাহায্যে চিকিৎসা করে আমরা সেগুলিকে নির্মূল করতে পারব বলেই আমাদের আশা।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy