Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Bankura Sammilani Medical College

রোগীমৃত্যুতে ধুন্ধুমার! ডাক্তারদের হেনস্থার অভিযোগে বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজে কর্মবিরতি

শুক্রবার সকাল থেকে একগুচ্ছ দাবি নিয়ে হাসপাতালের সামনে বিক্ষোভ অবস্থান শুরু করেন ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা। তাতে যোগ দেন প্রায় ২৫০ ডাক্তারি পড়ুয়াও।

পোস্টার হাতে কর্মবিরতিতে চিকিৎসকেরা।

পোস্টার হাতে কর্মবিরতিতে চিকিৎসকেরা। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৭:৪২
Share: Save:

রোগীমৃত্যুর জেরে কর্তব্যরত দুই জুনিয়র চিকিৎসককে হেনস্থার ঘটনায় তীব্র উত্তেজনা বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে। শুক্রবার সকাল থেকে কর্মবিরতিতে বসেছেন জুনিয়র চিকিৎসকেরা। হাসপাতালের প্রতিটি ওয়ার্ডে চিকিৎসকদের নিরাপত্তা, হাসপাতালে উপযুক্ত পরিকাঠামোর গঠন এবং ওয়ার্ডে চিকিৎসকদের সংখ্যা বৃদ্ধির দাবি করছেন তাঁরা। এই কর্মবিরতির জেরে সমস্যায় পড়েছেন রোগী এবং রোগী পরিবারের লোকজন।

হাসপাতাল সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার রাতে হাসপাতালের পুরুষ মেডিসিন ওয়ার্ডে চিকিৎসার দায়িত্বে ছিলেন দুই ইন্টার্ন চিকিৎসক। ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা প্রায় আড়াইশো রোগীর চিকিৎসা পরিষেবা সামাল দিচ্ছিলেন দু’জনেই। গভীর রাতে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওই ওয়ার্ডে এক রোগী ভর্তি হন। কিছু ক্ষণের মধ্যেই তাঁর মৃত্যু হয়। অভিযোগ, এর পর রোগীর পরিজনেরা চিকিৎসার গাফিলতির অভিযোগ তুলে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ওপর চড়াও হন। তাঁদের শারীরিক ভাবে হেনস্থা করা হয় বলেও অভিযোগ। ঘটনার পর বৃহস্পতিবার রাতেই কর্মবিরতি শুরু করেন বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ১৫০ জন ইন্টার্ন চিকিৎসক। শুক্রবার সকাল থেকে একগুচ্ছ দাবি নিয়ে হাসপাতালের সামনে বিক্ষোভ অবস্থান শুরু করেন তাঁরা। তাতে যোগ দেন হাসপাতালে প্রায় ২৫০ ডাক্তারি পড়ুয়াও।

মৃতের পরিজনদের হাতে হেনস্থা হওয়া ইন্টার্ন চিকিৎসক শৈলেশ মণ্ডল বলেন, ‘‘সীমিত পরিকাঠামো এবং মাত্র দু’জন চিকিৎসক মিলে ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা২৫০ জন রোগীর চিকিৎসা করছিলাম। যথাসাধ্য চেষ্টা করার পরও আমরা ওই রোগীকে বাঁচাতে পারিনি। কিন্তু রোগীর পরিজনেরা আমাদের ওপর চড়াও হন।’’ তাঁর সংযুক্তি, ‘‘প্রাণের ভয় নিয়ে এ ভাবে চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া সম্ভব নয়। সে জন্যই আমরা কর্মবিরতির পথে হেঁটেছি।’’ হেনস্তার শিকার হওয়া অপর এক ইন্টার্ন চিকিৎসক সায়নী ঘোষ বলেন, ‘‘আমরা সদ্য ডাক্তারি পাশ করেছি। আমাদের অভিজ্ঞতা কম। সে জন্য আমাদের দাবি, হাসপাতালের ওয়ার্ডে বেশি সংখ্যক ইন্টার্ন চিকিৎসক দেওয়ার পাশাপাশি অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ‘হাউস স্টাফ’ চিকিৎসকদের উপস্থিতি নিশ্চিত করা হোক। তাহলে এই ধরনের ঘটনা এড়ানো সম্ভব।’’

বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসা পরিষেবা অনেকাংশে জুনিয়র ডাক্তারদের উপর নির্ভরশীল। ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা কর্মবিরতিতে যাওয়ায় স্বাভাবিক ভাবেই হাসপাতালে চিকিৎসা পরিষেবা ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, চিকিৎসা পরিষেবা স্বাভাবিকই রয়েছে। বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজের ডিন রণদেব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘হাসপাতালে যথেষ্ট সংখ্যক সিনিয়র চিকিৎসক আছেন, তাঁরাই চিকিৎসা পরিষেবা একেবারে স্বাভাবিক রেখেছেন। ইন্টার্ন চিকিৎসকদের দাবিদাওয়া শুনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। হাসপাতালে নিরাপত্তা ব্যবস্থা কী ভাবে আরও জোরদার করা যায় সে ব্যাপারেও চিন্তাভাবনা করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bankura Sammilani Medical College doctor bankura
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE