Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪
উঠছে চিকিৎসার খরচ

রথুদের জন্য চাঁদা পড়শির

বন্ধ ঘরের ভিতরে তিন জনের মৃত্যু ও আরও তিন জনের অচেতন হয়ে পড়ার ঘটনার রহস্য ২৪ ঘণ্টা পরেও কাটল না। তবে অসুস্থ ওই তিন পড়শির চিকিৎসা করাতে অর্থ সংগ্রহে নেমে পড়েছেন বাসিন্দারা।

উদ্বিগ্ন: অসুস্থদের বাড়ির সামনে পড়শিরা। নিজস্ব চিত্র

উদ্বিগ্ন: অসুস্থদের বাড়ির সামনে পড়শিরা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৭:১০
Share: Save:

বন্ধ ঘরের ভিতরে তিন জনের মৃত্যু ও আরও তিন জনের অচেতন হয়ে পড়ার ঘটনার রহস্য ২৪ ঘণ্টা পরেও কাটল না। তবে অসুস্থ ওই তিন পড়শির চিকিৎসা করাতে অর্থ সংগ্রহে নেমে পড়েছেন বাসিন্দারা। পুরুলিয়া শহরের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বিবিরবাঁধ পাড়া এলাকার বাসিন্দাদের একটাই প্রার্থনা— রথু গোপের দুই সন্তান ও জামাই মারা গিয়েছে। তাঁদের ফিরিয়ে আনা যাবে না। কিন্তু, রথু, তাঁর স্ত্রী ও বড় মেয়েকে আমরা যে ভাবেই হোক সুস্থ করে ফিরিয়ে আনতে চাই।’’

শুক্রবার রাতে একটি ঘরে ঘুমাতে যায় ওই পরিবার। পরে দিন বেলা পর্যন্ত তাঁরা না ওঠায় পড়শিরা ডাকাডাকি করেন। ভিতর থেকে শুধু রথুর বড় মেয়ের মাস পাঁচ-ছয়ের শিশু কন্যার কান্নার শব্দ ভেসে আসছিল। ধাক্কা দিয়ে তাঁরা দরজা খুলে দেখেন, মেঝে ও বিছানায় ছ’জন পরে রয়েছেন। মুখ দিয়ে গ্যাঁজলা বেরিয়েছিল। তার মধ্যে তিন জনের প্রাণ ছিল না। বাকি তিন জনও অচেতন ছিলেন। পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে তাঁদের জ্ঞান ফিরলেও আচ্ছন্ন ভাব থাকায় কী ঘটেছিল, তা জানা যায়নি। শনিবার দুপুরেই তাঁদের বোকারোর নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হয়।

ঠেলাগাড়িতে খাবার বিক্রেতা রথুর বিবিরবাঁধের ভাড়া ঘর এখন তালাবন্ধ। পুরুলিয়া শহরে তাঁদের আর কেউ নেই। তাই তাঁদের চিকিৎসার খরচ তুলতে পড়শিরাই নিজেদের মধ্যে অর্থ সংগ্রহ শুরু করেছেন বলে জানিয়েছেন। পাশে দাঁড়িয়েছে স্থানীয় একটি মন্দির কমিটি ও জিমন্যাস্টিক ক্লাবের সদস্যেরাও।

স্থানীয় বাসিন্দা সম্পদ পরামাণিক বলেন, ‘‘যেহেতু তাঁরা সকলেই নার্সিংহোমে ভর্তি রয়েছেন, তাই এই মুহূর্তে চিকিৎসার জন্য প্রচুর অর্থের প্রয়োজন। কালী মন্দির তৈরির জন্য জমানো টাকা ভাঙিয়ে কিছুটা আমরা দিয়েছি।’’ এলাকার বাসিন্দা পড়ুয়া সোমনাথ দে, সুমন দে বলেন, ‘‘আমরাও ওঁদের চিকিৎসার জন্য সবার কাছে সাধ্যমতো সাহায্য চাইছি।’’

এই পাড়ারই বাসিন্দা মোহন পরামাণিক জানান, টুম্পা এখনও আইসিইউ-তে রয়েছেন। তবে এ দিনই রথু ও মঞ্জুকে আইসিইউ থেকে বের করে জেনারেল ওয়ার্ডে দেওয়া হয়েছে। মঞ্জু কেবলই ওঁর সন্তানদের কথা জানতে চাইছেন। জানতে চাইছেন, ছেলেমেয়েগুলো কোথায় আছে। বলা হয়েছে, ওঁরা মামার বাড়িতে রয়েছে।’’ তাঁর দাবি, শুক্রবার রাতে তাঁরা কী খেয়েছিল, এখনও জানতে চাওয়া হয়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Treatment Donation Neighbors
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE