Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

পৌষমেলা হোক ছ’দিনের, প্রস্তাব

মেলার দিন বৃদ্ধি নিয়ে স্থানীয় রাজনৈতিক একটি চাপও ছিল বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের উপর। তাই এ বার পৌষমেলা সুষ্ঠমতো পরিচালনার জন্য আগাম বৈঠক করে একাধিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

সোমবার বিশ্বভারতীতে। নিজস্ব চিত্র

সোমবার বিশ্বভারতীতে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বোলপুর শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০১৭ ১২:৩০
Share: Save:

ব্যবসায়ীদের স্বার্থের কথা মাথায় রেখে ও ভাঙামেলা রুখতে এ বার তিন দিনের জায়গায় ছ’দিন পৌষমেলা করার সিদ্ধান্ত নিল বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ ও শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট।

সোমবার বিশ্বভারতীর রথীন্দ্র অতিথি গৃহে জেলা প্রশাসন, শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট, বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ ও পরিবেশবিদ সুভাষ দত্ত যৌথ ভাবে একটি বৈঠক করে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পৌষমেলা দূষণ সংক্রান্ত জাতীয় পরিবেশ আদালতে চলা একটি মামলার পরবর্তী শুনানিতে এই সিদ্ধান্তের কথা পেশ করা হবে জানিয়েছেন বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য স্বপন কুমার দত্ত। এ ছাড়াও তিনি জানান, দূষণ নিয়ন্ত্রণে রেখে ছ’দিন পৌষমেলা চলবে। সপ্তম দিন বিকেল পাঁচটার মধ্যে জেলা প্রশাসনের পূর্ণাঙ্গ সহযোগিতায় মেলা প্রাঙ্গণ খালি করে দেওয়া হবে।

সুষ্ঠ ভাবে মেলা পরিচালনার জন্য সুভাষ দত্ত, প্রাক্তন অ্যাডভোকেট জেনারেল জয়ন্ত মিত্র ও রাজ্য পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্যদের চেয়ারম্যান কল্যাণ রুদ্রকে নিয়ে তিন সদস্যের একটি পর্যবেক্ষক কমিটি তৈরি করা হয়েছে বৈঠকে। উল্লেখ্য, মেলায় দূষণ রুখতে ব্যর্থ বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। এই অভিযোগ তুলে পরিবেশ আদালতে একটি মামলা রুজু করেছিলেন পরিবেশবিদ সুভাষ দত্ত। সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে চলা একাধিক শুনানিতে উঠে এসেছিল ভাঙামেলায় সবচেয়ে বেশি দূষণ সৃষ্টি হয়ে থাকে।

অন্যদিকে, ভাঙামেলা না করতে দিলে চরম আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বেন ব্যবসায়ীরা বলেও দাবি উঠেছিল।

সব মিলিয়ে ২০১৬-র পৌষমেলা পরিচালনা নিয়ে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ, শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট, জেলা প্রশাসনের মধ্যে মতবিরোধ তৈরি হয়েছিল। অন্যদিকে, মেলার দিন বৃদ্ধি নিয়ে স্থানীয় রাজনৈতিক একটি চাপও ছিল বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের উপর। তাই এ বার পৌষমেলা সুষ্ঠমতো পরিচালনার জন্য আগাম বৈঠক করে একাধিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ দিন দুপুর ১২ টায় বিশ্বভারতীর রথীন্দ্র অথিতি গৃহে প্রায় দু-ঘন্টা রুদ্ধদ্বার বৈঠক হয়। ছিলেন, পরিবেশবিদ সুভাষ দত্ত, ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য স্বপন কুমার দত্ত, কর্মসচিব অমিত হাজরা, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ছিলেন জেলাশাসক পি মোহন গাঁধী, সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী, মহকুমাশাসক শম্পা হাজরা। পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে ছিলেন, অতিরিক্ত জেলা পুলিশ সুপার (বোলপুর) সুবিমল পাল, এসডিপিও (বোলপুর) অম্লানকুসুম ঘোষ-সহ শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট, কর্মীসভা, অনুষ্ঠান পরিচালনা কমিটির সদস্যরা।

বৈঠক শেষে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য স্বপনকুমার দত্ত বলেন, “সব দিক বিবেচনা করে ছ’দিন মেলা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সাত দিনের দিন মেলা তুলে দেওয়া হবে। জেলা শাসক জানিয়েছেন মেলা তুলে দিতে যা যা সাহায্য লাগবে প্রশাসনিক ভাবে করবেন ও রাজনৈতিকভাবে যা যা সাহায্য লাগবে সভাধিপতি বিকাশবাবু করবেন। এটাই সিদ্ধান্ত হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত আমরা আদালতের পরবর্তী শুনানিতে যৌথভাবে জানাব। এ ছাড়াও, তিন সদস্যের একটি অবজারভার কমিটি তৈরি হয়েছে মেলা পরিচালনার জন্য।”

তিনি আরও বলেন, “দূষণ নিয়ন্ত্রণের দিকে বিশেষ নজরও দেওয়া হবে।” উপাচার্যের বক্তব্যে সহমত প্রকাশ করেন শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের সম্পাদক অনিল কোনার। পরিবেশবিদ সুভাষ দত্ত বলেন, “পৌষমেলা সুষ্ঠ ভাবে হোক এটাই চাই। আমাকে বৈঠকে ডাকা হয়েছিল, আমি এসেছিলাম। আমি কোনও মত প্রকাশ করিনি। যা সিদ্ধান্ত হয়েছে আমি আদালতে জানাব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE