Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪
bankura

Mithun Duley: বাঁকুড়ার মানসিক ভারসাম্যহীন যুবক মিঠুনকে সুস্থ করবে প্রশাসন, খুশি মা, বাবা

দিল্লিতে কাজে গিয়ে জ্বরে আক্রান্ত হন মিঠুন। তার পর হারান মানসিক ভারসাম্য। সেই থেকে ঘরেই বন্দি। এ বার ছেলেকে সুস্থ দেখার আশায় মা-বাবা।

নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০২২ ১৯:৪২
Share: Save:

ডান হাত মোটা লোহার শিকল দিয়ে বাঁধা। সেখান থেকেই শিকলের এক প্রান্ত চলে গেছে পায়ে। শিকলের অপর প্রান্ত দিয়ে বাঁধা দু’পা। ডান হাত ও ডান পায়ের কাছে ঝুলছে একটি করে মস্ত তালা। বাঁকুড়ার খাতড়া ব্লকের ধারগ্রামের বছর ত্রিশের যুবক মিঠুন দুলের শীর্ণ শরীরে এই শিকল ও তালার ভার বড়ই বেশি। পরিবার বলছে তারা নিরুপায়।

স্থানীয় সূত্রে খবর, বছর দশেক আগে কাজের খোঁজে দিল্লি যান মিঠুন। সেখানেই জ্বরে আক্রান্ত হন তিনি। তার পরই মানসিক ভারসাম্য হারান। ছেলের খবর পেয়ে দিল্লি থেকে ছেলেকে ফিরিয়ে আনেন মা-বাবা। কিন্তু মানসিক চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করার সাধ্য ছিল না তাঁদের। অগত্যা চিকিৎসায় ছেলেকে সুস্থ করার ব্যাপারে হাল ছেড়ে দেন তাঁরা। এ দিকে মিঠুন দিনে দিনে আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন। বাধ্য হয়ে ছেলেকে শৃঙ্খলিত করেন মা-বাবা। মিঠুনের বাবা জানকী দুলে বলেন, “সে সময় মিঠুনকে বাড়িতে রেখে কাজে যেতেও ভয় লাগত। আমাদের বয়স হয়েছে। স্বাভাবিক ভাবে ওই ছেলেকে বাড়িতে আটকে রাখাও সম্ভব না। তাই বাধ্য হয়ে হাতে পায়ে বেড়ি পরিয়ে দিই।” মিঠুনের মা ভারতী দুলে বলেন, “আমার তিন ছেলের মধ্যে মিঠুন মেজো। অন্য দুই ছেলে নিজেদের পরিবারকে নিয়ে আলাদা থাকে। নিজেদের জমি জিরেত নেই। আমি ও স্বামী অন্যের এক দেড় বিঘে জমিতে ভাগ চাষ করি। তাতে কোনও মতে আমাদের দু’বেলা খাবার জোগাড় হয়। এই অবস্থায় ছেলের চিকিৎসা করাতে পারিনি। ছেলেকে শিকলে বেঁধে রাখতে মন চায় না। কিন্তু আমরা নিরুপায়।”

মিঠুন দুলের অবস্থার কথা শুনে তাঁর চিকিৎসায় সব রকম সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন খাতড়া পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আনন্দ মাহাতো। তিনি বলেন, “আমি ঘটনার কথা জানার পরই দ্রুত বিষয়টি নিয়ে ব্লক প্রশাসনের আধিকারিক ও স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। মিঠুনকে পুরুলিয়ার সরকারি মানসিক হাসপাতালে রেখে চিকিৎসার করানোর ব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছি।” স্থানীয় বিধায়ক তথা রাজ্যের খাদ্য সরবরাহ দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যোৎস্না মান্ডি বলেন, “আমরা ওই যুবকের ব্যাপারে খোঁজ খবর নিয়ে তাঁর যথাযথ চিকিৎসার ব্যবস্থা করব। প্রয়োজনে কলকাতায় এনে ভাল চিকিৎসা করানো যায় কি না সে বিষয়টাও দেখব। ওই পরিবারের পাশে থাকার জন্য সমস্ত পদক্ষেপ করা হবে।”

সরকারি আশ্বাসে ছেলেকে সুস্থ করার ব্যাপারে নতুন করে বুক বাঁধছেন মিঠুনের মা-বাবা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

bankura Mental State
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE