মমতা: মঙ্গলবার বাঁকুড়ায় সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী। ছবি: অভিজিৎ সিংহ ও সুজিত মাহাতো।
ছ’মাসের মধ্যে বাঁকুড়া জেলার সর্বত্র পাইপলাইনের পানীয় জল পৌঁছে যাচ্ছে। মঙ্গলবার বাঁকুড়ায় সাংবিদকদের এমনই আশার কথা শুনিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, বীরভূম, পশ্চিম মেদিনীপুরের কিছু জায়গায় পানীয় জলের সমস্যা দীর্ঘদিনের। আগে কোনও পরিকল্পনা করা হয়নি। আমরা অবশ্য প্ল্যান করেছি। বাঁকুড়ায় অনেক বেশি জায়গায় পাইপলাইনে জল সরবরাহ করা হবে। এর মধ্যে বাঁকুড়ার বেশ কিছু ব্লকে জল চালু হয়ে গিয়েছে। প্রথম পর্যায়ের কাজ হয়ে গেলে ৬০ শতাংশ হয়ে যাবে। আর আটটা ব্লক বাকি আছে। সেপ্টেম্বর-অক্টোবরের মধ্যে কাজ হয়ে গেলে পুরো জেলা কভার হয়ে যাবে।’’
বাঁকুড়া শহরেও যে জলের সমস্যা প্রসঙ্গে মমতা বলেন, ‘‘বাঁকুড়া শহরে জলের কিছুটা সমস্যা রয়েছে। জেলার বাকি অংশে জল দিতে যেহেতু ছ’মাস পর্যন্ত বাকি রয়েছে। তাই আপাতত পিএইচকে বলা হয়েছে, জরুরি ভিত্তিতে কিছু ট্যাঙ্ক তৈরি করে দিতে। তাতে আপাতত শহরের বাসিন্দারা জল পাবেন।’’ ইতিমধ্যেই দুর্গাপুর ব্যারাজ থেকে জল এই শহরে নিয়ে আসার কাজ এগিয়ে গিয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী বিকেলে রবীন্দ্রভবনে বৈঠকে জেলার নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষকেও ডেকেছিলেন। প্রশাসন সূত্রে খবর, মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের বলেন, ‘‘হাসপাতাল বিজনেস আর অন্য বিজনেস আলাদা। এটা আপনারা ভাল করে বোঝেন। আপনারা ভাল করে কাজ করুন। আমাদের ব্যক্তিগত ভাবে কারও বিরুদ্ধে ক্ষোভ নেই। আমরা চাই যাতে মানুষ ভাল ভাবে সেবাটা পায়। অপ্রয়োজনীয় ভাবে যাতে লোকজন নাকাল না হয়, সেটা দেখুন। সত্যিকারের সমস্যা থাকলে ডেকে আলোচনা করে মেটাতে হবে।’’
আরও পড়ুন: এপ্রিলেই জলসঙ্কটে ধুঁকছে গ্রাম
একই সঙ্গে হোমগুলির কাজকর্ম দেখার কাজেও তিনি আরও গুরুত্ব দিয়েছেন। প্রশাসনের একটি সূত্রে খবর, বৈঠকের গোড়ার জেলার হোমগুলি সম্পর্কে মমতা খোঁজখবর নেন। তিনি জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসুকে জেলার হোমগুলি দেখভালের জন্য ‘হোম মনিটরিং কমিটি’ গড়তে বলেন।
বছর দুয়েক আগে পুরুলিয়ায় খরা ঘোষণা করেছিল রাজ্য সরকার। বাঁকুড়াতেও সে বার চাষে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল। এ বার গরমের গোড়ায় জেলা সফরে এসে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, বীরভূম, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুরের জন্য খরাপ্রবণ ব্লকগুলোর জন্য ইন্টিগ্রেটেড অ্যাকশন প্ল্যান করছি।’’
তবে এ দিন মমতা স্পষ্ট করে দিয়েছেন, ডিজিটাল রেশন কার্ডে কোনও গরিব মানুষ ২ টাকা কেজি চালের সুযোগ হারিয়ে থাকলে, এ বার তিনি আগের মতোই ওই পরিমাণ চাল পাবেন। খাদ্য দফতরে গিয়ে তাঁদের কার্ড সংশোধন করাতে বলেছেন মমতা। তিনি বলেন, ‘‘আমি বলছি, কেউ রেশন থেকে বঞ্চিত হবেন না। আপনারা নিজেরা কার্ডটা করিয়ে নেবেন। যদি কেউ না করে, তাকে বলবেন, করে দিতে হবে।’’
মমতা আরও জানান, ব্যক্তিগত ভাবে বা স্বনির্ভর দলের হয়ে হাঁস বা মুরগি চাষ করতে চাইলে সরকার হাঁস-মুরগি দেবে। শিল্পক্ষেত্রে চাইলেও সে সুযোগ রয়েছে। সব মিলিয়ে মমতা চাইছেন, আগামী এক বছরে রাজ্য সরকার ৭০-৮০ লক্ষ ডিম উৎপাদন করতে চায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy