রেললাইনের উপর দেশলাই বাক্সের মতো বগির উপর বগি পড়েছিল। কর্মীরা দুর্ঘটনার পরেই যুদ্ধকালীন তৎপরতায় উদ্ধার কাজেও নেমে পড়েছিলেন। কিন্তু আড়শার কাঁটাডি রেলগেটের দুর্ঘটনাস্থল সাফসুতরো করে ওই রেলপথে স্বাভাবিক ট্রেন চলাচল শুরু করতে ১৮ ঘণ্টা পার হয়ে গেল।
শনিবার ভোর সাড়ে ৪টে নাগাদ পুরুলিয়া-চাণ্ডিল শাখায় ওই রেলগেটের গেটবুম ভেঙে মালগাড়ির ইঞ্জিনে ধাক্কা মেরেছিল একটি পণ্যবাহী ট্রেলার। ঘটনাস্থলেই ট্রেন চালকের মৃত্যু হয়। আহত হন ট্রেলারের খালাসি, ট্রেনের চালক ও সহকারী চালক। তারপর থেকেই ওই লাইনে ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। ওই দিন রাত ৮টা নাগাদ ডাউন লাইনে ট্রেন চলাচল শুরু হলেও আপ লাইনে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হতে সাড়ে ১১টা পেরিয়ে যায়। তবে ডাউন লাইনের সাথেই জাতীয় সড়কে যান চলাচল শুরু হয়েছিল। এ দিকে দুর্ঘটনায় মৃত ট্রেলার চালকের পরিচয় রবিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত জানা যায়নি। গুরুতর জখম গাড়ির খালাসির জ্ঞানও রবিবার রাত পর্যন্ত ফেরেনি।
শনিবার ভোরে পুরুলিয়া জামসেদপুর ৩২ নম্বর জাতীয় সড়কের উপরে কাঁটাডির রেলগেটে বড়সড় মাপের ওই দুর্ঘটনার জেরে আদ্রা ডিভিশনের পুরুলিয়া-চাণ্ডিল শাখায় ট্রেন চলাচল পুরোপুরি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল। ছ’টি ট্রেন বাতিল করা হয়। যাত্রাপথ সংক্ষিপ্ত করা হয় আরও কয়েকটি ট্রেনের। আদ্রার রেল কর্তৃপক্ষর দাবি, দুর্ঘটনার জেরে রেলের ক্ষতির পরিমাণ প্রায় দুই কোটি ৭০ লক্ষ টাকা। এ দিকে রেলগেটের অদূরে রাস্তায় বাঁক থাকা স্বত্ত্বেও কী ভাবে ট্রেলারটি অত্যন্ত দ্রুত গতিতে রেলগেটে ধাক্কা মারল তা ভাবাচ্ছে রেলপুলিশকে।
রেলের এক কর্তা জানান, কাঁটাডির রেল গেটের অদূরেই রাস্তায় বাঁক রয়েছে। স্বভাবতই বাঁক ঘোরাতে যে কোনও গাড়ির চালক গতি কমাবেন। কিন্তু পরিস্থিতি দেখেই বোঝা যাচ্ছে ট্রেলারটি অত্যন্ত দ্রুতগতিতে রেলগেটে ধাক্কা মেরেছে। রেল সূত্রে জানা যাচ্ছে, এই ধরনের ঘটনায় গাড়ির চালকের বিরুদ্ধে রেলওয়ে আইনের ১৫০ নম্বর ধারা ও ভারতীয় দণ্ডবিধির আরও কয়েকটি ধারায় সাধারণত মামলা দায়ের করা হয়। পুরুলিয়ার রেলপুলিশের ওসি সুভাষ জানার ব্যাখ্যা, ‘‘দুর্ঘটনায় এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। আর একজনের জ্ঞান ফেরেনি। তাই বোঝা সম্ভব নয় দুর্ঘটনায় মৃত ব্যক্তিই গাড়ির চালক কি না। সেই প্রেক্ষিতেই অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তির নামে মামলা রুজু করা হয়েছে।” পাশপাশি গাড়ির নম্বরের ভিত্তিতে পুরুলিয়ার আঞ্চলিক পরিবহণ দফতরের মাধ্যমে ট্রেলারটির মালিকের খোঁজ পাওয়ার চেষ্টা করছে রেলপুলিশ।