নবনির্মিত: পরিষেবা শুরুর অপেক্ষায়। বোলপুরের স্বাস্থ্যকেন্দ্র ভবন। নিজস্ব চিত্র
কাছে-পিঠে হাসপাতাল ছিল না। রোগী অথবা পরিজনকে ছুটে যেতে হত বোলপুর সিয়ান হাসপাতাল অথবা বোলপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। দুটি হাসপাতালেরই দূরত্ব কমবেশি ৫ থেকে ৬ কিলোমিটার। এই পরিস্থিতিতে এলাকাবাসীর চাহিদা মেনে বোলপুর পুরসভায় তৈরি হয়েছে দুটি নতুন প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র।
বোলপুরের পুরপ্রধান সুশান্ত ভকতের কথায়, ‘‘এই দুটি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র চালু হলে প্রায় ২৫ হাজার মানুষ উপকৃত হবেন। আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি এই দুটি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র উদ্বোধন করতে চলেছি।’’ স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, দুটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বহির্বিভাগ আপাতত সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। থাকবেন দু’জন চিকিৎসক, দু’জন নার্স, এক জন ফার্মাসিস্ট, এক জন ল্যাব টেকনিশিয়ান। মূলত মিলবে প্রাথমিক চিকিৎসা। গর্ভবতী মহিলাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা থাকছে। থাকছে অবজারভেশন বেড। এতে অনেকটাই চাপ কমবে বড় হাসপাতালগুলোর। বহির্বিভাগে চিকিৎসার জন্য বড় হাসপাতালগুলিতে রোগীদের লাইন কমবে বলেও আশা।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, স্বাস্থ্য দফতর ও পুরসভার উদ্যোগে প্রায় ২ কোটি টাকা খরচে বোলপুর পুরসভার দুটি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র তৈরি করা হয়েছে। একটি ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে অন্যটি ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে। পুরসভার পক্ষ থেকে দুটি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নামও স্থির করা হয়েছে। বোলপুরের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের শুড়িপাড়ায় তৈরি হওয়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রেটির নাম দেওয়া হয়েছে ধর্মরাজ প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র। ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের খাসপাড়ায় তৈরি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নাম নরেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র। পুরসভার দাবি, এই দুটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র হওয়াতে মানুষের হয়রানি অনেকটা কমে যাবে। মানুষ দ্রুত প্রাথমিক চিকিৎসা পাবেন। সরকারি প্রকল্পের যে সমস্ত সুযোগ-সুবিধা রয়েছে, সেগুলিও এলাকাবাসী এই সমস্ত স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে পাবেন।
১৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা সুজিত চৌধুরীর কথায়, ‘‘আমাদের এখানে কোনও হাসপাতাল ছিল না। প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য ছুটে যেতে হতো পাঁচ থেকে ছয় কিলোমিটার। সেখানে আমাদের ওয়ার্ডেই হাসপাতাল হওয়ায় আমরা খুব খুশি।’’ অন্য দিকে ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা বছর পঞ্চাশের পঞ্চানন গড়াই বলেন, ‘‘এটি আমাদের দীর্ঘ দিনের দাবি ছিল। প্রতিশ্রুতিও মিলেছিল। আমরা খুশি।’’
তবে কারও প্রশ্ন, জেলার প্রায় সব হাসপাতাল, প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলি চিকিৎসক, নার্সের অভাবে ধুঁকছে। সে সব জায়গায় চিকিৎসকের ব্যবস্থা না করে আবার নতুন প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র তৈরির অর্থ কি? এখানেও আবার চিকিৎসক-সঙ্কট হবে না তো? সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য বকুল ঘড়ুই বলেন, ‘‘যে সমস্ত হাসপাতালগুলোতে ডাক্তার, নার্স ঠিক মতো পাওয়া যায় না, মানুষ ঠিক মতো পরিষেবা পান না সেখানে নজর দিলে আরও ভাল হত। তা না করে নতুন স্বাস্থ্যকেন্দ্র ভোটের মুখে চমক ছাড়া আর কিছু না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy