Advertisement
E-Paper

প্রচারে আশিসের ‘কটূক্তি’, সমালোচনায় বিরোধীরা

লোকসভা ভোটের প্রচারে বিরোধীদের উদ্দেশে কটূক্তি করার অভিযোগ উঠল জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান তথা রামপুরহাটের তৃণমূল বিধায়ক আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। সোমবার বিকেলে দুবরাজপুরে তৃণমূলের একটি প্রচারসভায় বলা আশিসবাবুর ওই মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছে সিপিএম এবং বিজেপি। এ নিয়ে কোনও দলই অবশ্য নির্বাচন কমিশনের কাছে এখনও পর্যন্ত অভিযোগ জানায়নি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০১৪ ০০:০২
যাঁর প্রচারে সভা, নেই তিনি-ই। —নিজস্ব চিত্র

যাঁর প্রচারে সভা, নেই তিনি-ই। —নিজস্ব চিত্র

লোকসভা ভোটের প্রচারে বিরোধীদের উদ্দেশে কটূক্তি করার অভিযোগ উঠল জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান তথা রামপুরহাটের তৃণমূল বিধায়ক আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। সোমবার বিকেলে দুবরাজপুরে তৃণমূলের একটি প্রচারসভায় বলা আশিসবাবুর ওই মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছে সিপিএম এবং বিজেপি। এ নিয়ে কোনও দলই অবশ্য নির্বাচন কমিশনের কাছে এখনও পর্যন্ত অভিযোগ জানায়নি।

ঠিক কী বলেছেন ওই তৃণমূল বিধায়ক?

ভিড়ে ঠাসা দুবরাজপুর মাদৃক সঙ্ঘ সাংস্কৃতিক ময়দানে দলের বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী শতাব্দী রায়ের সমর্থনে হওয়া ওই প্রচার সভায় বক্তব্য রাখছিলেন আশিসবাবু। মঞ্চে তখন দলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল, জেলা সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী-সহ বহু নেতা-কর্মী। কেন তৃণমূলকে ভোট দেবেন মানুষ, তৃণমূল সরকারের নানা উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের কথা তুলে ধরে বোঝাচ্ছিলেন আশিসবাবু। হঠাৎই ছন্দপতন। আক্রমণাত্মক হয়ে বলে উঠলেন, “সিপিএম হচ্ছে ক্রিমিনাল পার্টি অফ ইন্ডিয়া। আর ব্র্যাকেটে থাকা ‘এম’ ফর ‘মার্ডারার্স’।” আশিসবাবুর বক্তব্যের কিছু ক্ষণ আগেই দুবরাজপুরের এক তৃণমূল কাউন্সিলর সিপিএমের ব্যাখ্যায় বলেছিলেন ‘ক্যান্সেল পার্টি অফ ইন্ডিয়া’। আশিসবাবু যেন তাঁরই সহকর্মীর ‘ভুল শুধরে’ দিলেন। শুধু সিপিএমই নয়, তৃণমূল বিধায়কের নিশানায় পড়েন ওই কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী জয় বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তাঁর প্রতি আশিসবাবুর কটাক্ষ, “প্রচার চলছে। কাউকে জিজ্ঞাসা করছেন, কী হয়েছে তোমার? উত্তরে সে বলল, ‘আমার বাবা মারা গিয়েছেন’। প্রার্থী বলছেন, ‘আই লাভ ইউ’! কী হয়েছে তোমার? ‘আমার গাছের আম এ বার ঝরে গিয়েছে’। প্রার্থী বলছেন, ‘আই লাভ ইউ’। কারও মাতৃশ্রাদ্ধ গিয়েছে, মাথা মুণ্ডন করেছেন। প্রার্থী তাঁকেও বলছেন, ‘আই লাভ ইউ’। ভাগ্যিস নির্বাচনটা এসেছিল। তা না হলে ওই ভদ্রলোকের ভালবাসা থেকে আমরা সকলেই বঞ্চিত হতাম।” আশিসবাবুর প্রশ্ন, “অশ্রু বিসর্জন করতে করতে দুঃখের সমুদ্র মন্থন করে মৃত্যুর উপত্যকায় দাঁড়িয়ে জীবনকে শেষ করার নাম প্রেম। সেই প্রেম কী ওই প্রার্থী দিতে পারবেন?”

দল নিয়ে আশিসবাবুর বক্তব্যের কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছে সিপিএম। দলের জেলা সম্পাদক দিলীপ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “এটা কুরুচিকর মন্তব্য। তবে এটা ওঁদের দলনেত্রী থেকে সকলেই করে থাকেন।” অন্য দিকে, আশিসবাবুর কথা শুনে বিজেপি প্রার্থী জয় বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, “আমি এত অশিক্ষিত নই, যে কারও বাবা বা মা মারা গেলে তাঁকে ‘আই লাভ ইউ’ বলব। আসলে এত শক্ত চ্যালেঞ্জের মুখে আগে পড়েননি বলেই উনি সংযম খুঁইয়েছেন। আমার তো ওঁকেও ‘আই লাভ ইউ’ বলতে ইচ্ছে করছে!” বারবার ফোন করা হলেও ফোন ধরেননি আশিসবাবু।

এ দিনের অনুষ্ঠানে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রেখেছেন বিকাশ রায়চৌধুরী এবং অনুব্রত মণ্ডলও। অনুব্রত-র হুঙ্কার, “এ বার বীরভূম কেন্দ্রে কমপক্ষে এক থেকে দেড় লক্ষ ভোটে আর বোলপুর কেন্দ্রে দু’লক্ষ তিরিশ হাজার ভোটে তৃণমূল প্রার্থীরা জিতবে।” তবে যাঁর সমর্থনে সভা সেই শতাব্দীই অবশ্য এ দিন দুবরাজপুরে আসেননি। নায়িকা না আসায় ভিড় কিছুটা হলেও হতাশ হয়। কেন এলেন না শতাব্দী? তৃণমূল নেতাদের অনেকেই বলছেন, “শতাব্দী আসবেন না জেনেও সভার আয়োজন করা হয়েছিল। আর শতাব্দী নিজে বলছেন, “নলহাটি ২ ব্লকে প্রচারে ব্যস্ত ছিলাম। তাই যাইনি। এটা দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে বসেই ঠিক হয়েছিল। একার পক্ষে তো সব দিকে যাওয়া যাবে না। তাই টিম হিসেবে কাজ চলছে।”

dubrajpur lokabha election tmc ashish bandopadhyay
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy