বিশ্বনাথ ও সুজয়। —নিজস্ব চিত্র
দু’টি স্কুল থেকে সেরা হয়েছে ওরা দুজন। দু’জনেরই ইচ্ছে বিজ্ঞান নিয়ে পড়ার। কিন্তু বাইরের স্কুলে গিয়ে বিজ্ঞান শাখায় পড়াশোনার খরচ আদৌ তাদের পরিবার চালাতে পরাবে কি না সেটা নিয়েই দুশ্চিন্তায় পড়েছে খয়রাশেলের লোকপুরের সুজয় দত্ত এবং রাজনগরের সাহাবাদ গ্রামের বিশ্বনাথ মণ্ডলরা। বাড়ির কাছে থাকা লোকপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক দিয়ে সুজয় এ বার পেয়েছে ৬৪৮ নম্বর। অন্য দিকে গ্রাম থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরের রাজনগর উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র বিশ্বনাথ মাধ্যমিকে পেয়েছে ৬৩৫ নম্বর। কিন্তু ভাল ফলের পরেও তাদের উচ্চশিক্ষার পথে প্রধান বাধা পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থা। ছোট একটা মুদি দোকান চালান সুজয়ের বাবা দীনেশ দত্ত। দোকান থেকে যা আয় হয় তিন ছেলেমেয়ে ও স্বামী-স্ত্রীকে নিয়ে ৫ জনের পরিবার চলে কোনও রকমে। ছেলে বাড়ির কাছের স্কুলে পড়াশোনা করত এবং দু’টি টিউশনের মধ্যে একটিতে টিউশন ‘ফি’ দিতে হত না বলে খুব একটা অসুবিধা ছিল না। কিন্তু কাছাকাছি উচ্চ মাধ্যমিকে বিজ্ঞান পড়ার তেমন সুবিধে না থাকায় ছেলে চাইছে সিউড়িতে বীরভূম জেলা স্কুলে গিয়ে পড়তে। অন্য দিকে, একই সমস্যা বিশ্বনাথের বাবা সুকুমার মণ্ডলের। সামান্য জমি চাষ করে এবং ১০০ দিনের কাজ করে সংসার চালান তিনি। বড় ছেলেও উচ্চ মাধ্যমিক দিয়েছে। এ বার ছোট ছেলে বিশ্বনাথ চাইছে সিউড়িতে জেলা স্কুলে ভর্তি হতে। ছেলেদের বাইরে রেখে বইপত্র কিনে এবং টিউশন খরচ চালানো আদৌ সম্ভব হবে কি না জানা নেই দুই পরিবারেরই। দীনেশবাবু ও সুকুমারবাবু দু’জনেরই আক্ষেপ, “এত ভাল ফল করেছে ছেলে। পড়তে চাইছে। কী করব ভেবে কূল পাচ্ছি না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy