Advertisement
E-Paper

বালি তোলাকে ঘিরে সংঘর্ষে মৃত্যু নলহাটিতে

অবৈধ ভাবে বালি তোলাকে ঘিরে একই গ্রামের দু’পক্ষের মারামারিতে মৃত্যু হল এক যুবকের। মঙ্গলবার সকালে নলহাটি থানার মাধবপুর গ্রামের ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, নিহত যুবকের নাম সামসুজ্জাহা শেখ (৪০)। বাড়ি মাধবপুর গ্রামেই।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০১৫ ০২:৩০
সংঘর্ষে জখম। —নিজস্ব চিত্র।

সংঘর্ষে জখম। —নিজস্ব চিত্র।

অবৈধ ভাবে বালি তোলাকে ঘিরে একই গ্রামের দু’পক্ষের মারামারিতে মৃত্যু হল এক যুবকের। মঙ্গলবার সকালে নলহাটি থানার মাধবপুর গ্রামের ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, নিহত যুবকের নাম সামসুজ্জাহা শেখ (৪০)। বাড়ি মাধবপুর গ্রামেই। মারামারিতে দু’পক্ষের দু’জন জখমও হয়েছেন। তাঁদের চিকিৎসার জন্য রামপুরহাটে ভর্তি করানো হয়। রামপুরহাটের এসডিপিও জোবি থমাস কে জানান , দু’পক্ষই থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে। নিহতের পরিবার খুনের অভিযোগ এনেছে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।

নিহত যুবকের খুড়তুতো ভাই রিটন সেখ জানান, গত প্রায় দু’বছর থেকে বালি তোলাকে কেন্দ্র করে গ্রামের দু’টি গোষ্ঠীর মধ্যে বিবাদ চলছে। তাঁর দাবি, বেশ কিছু দিন থেকে গ্রামের যুবক হাবিবুর শেখ, হারুন শেখ, সামশুল শেখ, নুর আলম শেখ, আজিজুল শেখ, লালু শেখ, আফাদ শেখরা অবৈধ ভাবে বালি তুলে বালি বোঝাই গাড়ি তাঁর জ্যাঠতুতো দাদা সামসুজ্জাহা শেখের জমির উপর দিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। একাধিকবার নিষেধ করলেও হুমকি দিয়ে বালির গাড়ি নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। রিটনের অভিযোগ, “মঙ্গলবার সকালে দাদা গাড়ি নিয়ে যেতে বাধা দিলে ওরা দাদার উপর লাঠি, কোদাল নিয়ে চড়াও হয়। হামলায় দাদা গুরুতর জখম হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায়।” সামসুজ্জাহাকে মারধরের ঘটনায় বাধা দিতে গেলে জখম হন কাজেম শেখ নামে এক যুবক। তাঁর অভিযোগ, পুলিশকে টাকা খাইয়ে ঘাট থেকে অবৈধ ভাবে বালি তোলা হচ্ছিল।

স্থানীয় হরিদাসপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীন মাধবপুর গ্রামের তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য কুতুবউদ্দিন শেখ এ দিন রামপুরহাট হাসপাতালে এসেছিলেন নিহতের দেহ নিতে। সামসুজ্জাহা সম্পর্কে কুতুবউদ্দিনের মামা। কুতুবউদ্দিন বলেন, “মামা বালির ঘাটে বালি তোলার শ্রমিকের কাজ করত। অন্যায়ের প্রতিবাদ করায় ওরা মামাকে পিটিয়ে খুন করল।” তিনি আরও জানান, বালি তোলার ব্যাপারে গ্রাম পঞ্চায়েতের কোনও অনুমোদন ছিল না। দু’পক্ষের মারামারিতে জখম লালু শেখকে রামপুরহাট হাসপাতালে ভর্তি করতে নিয়ে এসেছিলেন হারুন শেখ। তিনি জানালেন, বালির ঘাটের মালিক আসানজোল গ্রামের বাসিন্দা। তাঁরা বালি ঘাটে শুধু শ্রমিকের কাজ করেন। তবে, এ দিন সকালে ঠিক কী ভাবে মারামারি বাধল, তা বলতে চাননি হারুন।

বিডিও (নলহাটি ১) তাপস বিশ্বাস বলেন, “যতদূর জানি, ব্রাহ্মণী নদীর উপর বৈধড়া ব্যারাজের ২০০ মিটার দূরত্বে অবৈধ ভাবে বালি তোলাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ হয়েছে। তাতে একজন মারা যায়।” সেচ দফতরের অধীন বৈধড়া ব্যারাজ সংলগ্ন এলাকা থেকে অবৈধ ভাবে বালি তোলার অভিযোগ অনেক দিন ধরেই উঠছে। বস্তুত, বীরভূম জেলার বিভিন্ন অংশেই অবৈধ বালি তোলার কারবারের রমরমা। প্রশাসনের উদাসীনতার সুযোগেই এই কারবার ফুলেফেঁপে উঠেছে বলে সাধারণ মানুষের অভিযোগ।

সেচ দফতরের নলহাটি বিভাগের সহকারী বাস্তুকার সুকান্ত দাস এই বেআইনি বালি তোলার বিষয়টি মেনে নিয়েছেন। একই সঙ্গে তা বন্ধ করার ব্যাপারে তাঁর গলায় শোনা গিয়েছে হতাশা। তিনি বলেন, “বৈধড়া ব্যারাজের আপ ও ডাউন, দু’দিক মিলে পাঁচ কিলোমিটার করে দশ কিলোমিটার অংশে বালি তোলার জন্য কোনও সরকারি অনুমোদন দেওয়া হয় না। তবু অবৈধ ভাবে বালি তোলা হয়। সেচ দফতরের রামপুরহাট এবং নলহাটি বিভাগ থেকে অভিযান চালিয়ে বালি পাচারকারীদের জরিমানা করা হয়। পুলিশের কাছেও অভিযোগ করা হয়েছে। তবু বেআইনি ভাবে বালি উত্তোলন কমছে না।”

clash nalhati sand mafia madhabpur
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy