Advertisement
E-Paper

ভুয়ো শংসাপত্রে বরাত, অভিযুক্ত ঠিকাদার

টেন্ডার পাশ হয়ে কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে পাঁচ মাস আগেই। বিজেপি-র অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে প্রশাসন জানতে পেরেছে ভুয়ো শংসাপত্র দেখিয়ে ওই ঠিকাদার কাজ পেয়েছেন। এলাকায় তৃণমূলের সমর্থক বলে পরিচিত ওই ঠিকাদারের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়, তা নিয়েই এখন জল্পনা শুরু হয়েছে। ওই ঠিকাদার অবশ্য এ নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ অগস্ট ২০১৪ ০১:২৩

টেন্ডার পাশ হয়ে কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে পাঁচ মাস আগেই। বিজেপি-র অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে প্রশাসন জানতে পেরেছে ভুয়ো শংসাপত্র দেখিয়ে ওই ঠিকাদার কাজ পেয়েছেন। এলাকায় তৃণমূলের সমর্থক বলে পরিচিত ওই ঠিকাদারের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়, তা নিয়েই এখন জল্পনা শুরু হয়েছে। ওই ঠিকাদার অবশ্য এ নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি।

সাংসদের তহবিল থেকে ছাতনা থানার শালডিহা অঞ্চলে একটি কমিউনিটি হল গড়ার কাজ নিয়েই গোলমাল। প্রশাসন সূত্রের খবর, ওই প্রকল্পে প্রায় সাত লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। টেন্ডারের পরে গত ফেব্রুয়ারি মাসে কাজটির ওয়ার্ক অর্ডার দেওয়া হয় অভিজিৎ রক্ষিত নামে টেন্ডারে নির্বাচিত হওয়া এক ব্যক্তিকে। এরপরেই শুরু হয়ে যায় নির্মাণ কাজের প্রথম ধাপ। নিয়ম অনুসারে কাজের বরাত পাওয়ার আগে ঠিকাদারকে আগে কোনও সরকারি প্রকল্পের কাজ করার শংসাপত্র (ক্রেডেনশিয়াল) জমা করতে হয়।

ওই ঠিকাদার এ ক্ষেত্রে ভুয়ো শংসাপত্র জমা দিয়েছেন বলে অভিযোগ তুলে গত ১৬ জুলাই ছাতনার বিডিওর কাছে অভিযোগ করে বিজেপি। তাঁর শংসাপত্রে ইতিপূর্বে তালড্যাংরা ব্লকের খালগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতে কাজ করার কথা উল্লেখ ছিল। ছাতনার বিডিও সুতপা নস্কর বলেন, “বিজেপির অভিযোগের ভিত্তিতে তালড্যাংরা ব্লক অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। শংসাপত্রগুলি দেখে তা ভুয়ো বলে রিপোর্ট গিয়েছে তালড্যাংরা ব্লক অফিস।” অভিযোগকারী বিজেপির জেলা সহ-সভাপতি জীবন চক্রবর্তীর দাবি, “অভিযুক্ত ঠিকাদার এলাকার তৃণমূল নেতাদের স্নেহধন্য। তাই তদন্তে প্রকৃত ঘটনা উঠে আসার পরেও বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছিল।’’ তাঁর অফিযোগ, “ছাতনা ব্লক অফিসে বহুবার তদন্তের রিপোর্ট জানার চেষ্টা করেছি। কিন্তু আধিকারিকরা চেপে গিয়েছেন। শেষ তথ্য জানার অধিকার আইনে আবেদন করব বলায় আধিকারিকরা বাধ্য হয়ে আমাকে তদন্তের রিপোর্ট জানিয়েছেন।”

তাঁর প্রশ্ন, ওই ঠিকাদারের বিরুদ্ধে জালিয়াতির প্রমাণ পাওয়ার পরেও আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না কেন? তাঁর দাবি, এতে বোঝা যাচ্ছে ওই ঠিকাদারের পিছনে তৃণমূল নেতাদের হাত রয়েছে। অভিযুক্ত ঠিকাদার যে তৃণমূল ঘনিষ্ঠ তা মেনে নিয়েছেন ছাতনা ব্লকের তৃণমূল সভাপতি পরমেশ্বর কুণ্ডুও। তিনি বলেন, “অভিজিৎ তৃণমূল সমর্থক হলেও অন্যায়কে আমরা প্রশ্রয় দিই না। এ ক্ষেত্রেও দেওয়া হবে না।” যদিও অভিজিৎবাবু তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ শুনে ফোনে বলেন, “কী হয়েছে জানি না।” এরপরেই তিনি ফোনের লাইন কেটে দেন।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি বাঁকুড়া সফরে এসে প্রশাসনিক বৈঠকে রাস্তাঘাট নিয়ে মমতা প্রশাসনের কর্তা ও জনপ্রতিনিধিদের সতর্ক হওয়ায় পরামর্শ দিয়ে গিয়েছেন। প্রয়োজনে ঠিকাদারদের নাম কালো-তালিকাভুক্ত করে তাঁদের বিরুদ্ধে এফআইআর করারও নিদান দিয়ে গিয়েছেন তিনি। ওই বৈঠকে বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁ জয়রামবাটি-বাঁকাদহ রাস্তার বেহাল দশার কথা তোলেন। কেন ওই রাস্তা সারানো হচ্ছে না? মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্নের মুখে পড়ে ওই রাস্তায় কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদারকে এক সিপিএম নেতার ভাই বলে উল্লেখ করে তাঁর বিরুদ্ধে কাজে গাফিলতি করার অভিযোগ এনেছিলেন জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ শ্যামল সরকার। তার প্রেক্ষিতেই ওই ঠিকাদারকে কালো তালিকাভুক্ত করে এফআইআর করতে বলেন মুখ্যমন্ত্রী।

তাই এ ক্ষেত্রে ওই ঠিকাদারের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়, সে দিকে অনেকের নজর রয়েছে। বিজেপি নেতা-কর্মীদের দাবি, ঠিকাদারের ভুয়ো শংসাপত্র দিয়ে কাজ পাওয়ার অভিযোগ প্রশাসনিক তদন্তে প্রমাণিত হওয়ার পরেও কেন মুখ্যমন্ত্রীর ‘প্রেসক্রিপশন’ অনুযায়ী এ ক্ষেত্রে প্রশাসন ব্যবস্থা নিচ্ছে না? ছাতনার বিডিও সুতপাদেবীর আশ্বাস, “দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” জেলাশাসক বিজয় ভারতী বলেন, “বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখব।” জেলা সভাধিপতির অরূপ চক্রবর্তী বলেন, “ঠিক কী হয়েছে জানি না। ‘ক্রেডেনশিয়াল’ জমা নেওয়ার সময় প্রশাসনের আধিকারিকদের তা খতিয়ে দেখা উচিত ছিল। ওই ঠিকাদারের বিরুদ্ধে যথযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

fake certificates chhatna bjp
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy