Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
র‌্যাগিংয়ের জের

১১ কলেজ ছাত্রীকে হস্টেল ছাড়ার নির্দেশ মানবাজারে

র‌্যাগিংয়ে জড়িত থাকার অভিযোগে ১১ জন কলেজ ছাত্রীকে হস্টেল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হল। অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ দফতরের পুরুলিয়া জেলা অফিস থেকে সম্প্রতি এই নির্দেশ এসেছে। অভিযুক্ত ছাত্রীদের হাতে সোমবার ওই নির্দেশের প্রতিলিপি দেওয়া হয়েছে। ঘটনাটি পুরুলিয়ার মানবাজারের একটি কেন্দ্রীয় মহিলা আবাসিক ভবন বা হস্টেলের। ওই ভবনের আবাসিক ৮০ জনই স্থানীয় মানভূম কলেজের ছাত্রী।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মানবাজার শেষ আপডেট: ১৯ মার্চ ২০১৪ ০০:১৩
Share: Save:

র‌্যাগিংয়ে জড়িত থাকার অভিযোগে ১১ জন কলেজ ছাত্রীকে হস্টেল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হল। অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ দফতরের পুরুলিয়া জেলা অফিস থেকে সম্প্রতি এই নির্দেশ এসেছে। অভিযুক্ত ছাত্রীদের হাতে সোমবার ওই নির্দেশের প্রতিলিপি দেওয়া হয়েছে।

ঘটনাটি পুরুলিয়ার মানবাজারের একটি কেন্দ্রীয় মহিলা আবাসিক ভবন বা হস্টেলের। ওই ভবনের আবাসিক ৮০ জনই স্থানীয় মানভূম কলেজের ছাত্রী। সম্প্রতি হস্টেলের আবাসিক, প্রথম বর্ষের এক ছাত্রীকে র‌্যাগিং করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। র‌্যাগিংয়ের জেরেই বলরামপুর এলাকার বাসিন্দা ওই ছাত্রী হস্টেল ছেড়ে বাড়ি চলে যান বলেও অভিযোগ। এমনকী, গত এক মাস ধরে তিনি কলেজেও যাননি। পরে তিনি মানবাজারের বিডিও, জেলা প্রকল্প আধিকারিক-সহ বিভিন্ন স্তরে র‌্যাগিংয়ের লিখিত অভিযোগ করেন।

প্রশাসন সূত্রের খবর, মানবাজারের ওই কেন্দ্রীয় আবাসিক হস্টেলে তফসিলি জাতি ও উপজাতি মহিলারা থাকতে পারেন। অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতর এই হস্টেলের দেখভালের দায়িত্বে। দফতরের জেলা প্রকল্প আধিকারিক নির্মাল্য ঘড়ামি বলেন, “বাড়ি চলে যাওয়া ওই প্রথম বর্ষের ছাত্রীকে র‌্যাগিং করা হয়েছে বলে জেনেছি। কিছু দিন আগে র‌্যাগিং-কাণ্ডে কারা জড়িত জানতে চেয়ে হস্টেল সুপার আলপনা মাহাতো কয়েক জন হস্টেলের কিছু আবাসিক ছাত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এর পরে চাত্রীদের একাংশ সুপারে আটক করে রাখেন। ফোনে জানতে পেরে পুলিশ পাঠিয়ে সুপারকে উদ্ধার করি। ঘটনা সম্পর্কে সুপার জেলা অফিসে রিপোর্ট দিয়েছেন।” নির্মাল্যবাবু জানান, বিভিন্ন স্তরে কথা বলে র‌্যাগিংয়ের অভিযোগের সত্যতা রয়েছে বলেই তাঁর মনে হয়েছে। নিগৃহীতা ছাত্রী কয়েক জন অভিযুক্তের নাম জানিয়েছিলেন। ঘটনায় ১১ জন জড়িত বলে চিহ্নিত করা গিয়েছে। “ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশেই র‌্যাগিং-কাণ্ডে জড়িত ছাত্রীদের হস্টেল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”বলেন জেলা প্রকল্প আধিকারিক।

অনগ্রসর শ্রেনি কল্যাণ দফতর সূত্রের খবর, মানবাজারের ওই হস্টেলের অনিয়ম নিয়ে দফতরের জেলা অফিসে একাধিকবার অভিযোগ এসেছে। অভিযোগ, হস্টেল সুপার থাকলেও তাঁকে অধিকাংশ ছাত্রী মানেন না। পাশাপাশি ছাত্রীদের বাড়ি যাতায়াতের রেকর্ড খাতায় লিপিবিদ্ধ করার কথা থাকলেও নিয়ম মানা হয় না।

অভিযুক্ত ছাত্রীরা মঙ্গলবার মানবাজারের বিডিও সায়ক দেবের সঙ্গে দেখা করে দাবি করেন, তাঁরা দোষী নন। তাঁদের হস্টেল ছাড়ার নির্দেশ পুনর্বিবেচনার আর্জিও জানিয়ে একটি আবেদনপত্রও তাঁরা ব্লক অফিসে জমা দেন। তৃতীয় বর্ষের এক ছাত্রী বলেন, “আর কিছুদিন পরেই পরীক্ষা। এ সময় হস্টেল ছাড়তে বললে সমস্যায় পড়ব।” দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্রীর দাবি, “আমরা কাউকে র‌্যাগিং করিনি। আমাদের উপরে মিথ্যা দোষারোপ করা হচ্ছে।” বিডিও বলেন, “হস্টেলের ছাত্রীদের একাংশের আবেদনপত্র পেয়েছি। আবেদনের প্রেক্ষিতে ওদের বক্তব্য আরেক বার শুনব।” নির্মাল্যবাবুও জানিয়েছেন, ছাত্রীদের মঙ্গলবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

মানভূম কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আশুতোষ বিশ্বাস বলেন, “কলেজের ছাত্রীরা ওই হস্টেলে থাকেন, এটা ঠিক। কিন্তু, হস্টেলে ঠিক কী ঘটেছে, আমি জানি না। ওই হস্টেল কলেজের নিয়ন্ত্রণে নয়।” তিনি জানান, কলেজে ছেলে ও মেয়েদের আলাদা হস্টেল থাকলেও মেয়েদের হস্টেল এখনও চালু হয়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

raging manbazar college student
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE