অন্য দিকে, হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শৈলেন্দ্রপ্রসাদ তালুকদারের নেতৃত্বে আদালত যে-কমিটি গঠন করেছে, তারাও বেশ কিছু লগ্নি সংস্থার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। তাদের তালিকায় রয়েছে আইকোর সংস্থা। আইকোরের সম্পত্তি নিয়ে সিআইডি-কে হলফনামা দিতে বলেছে ওই কমিটি। আবার আর্থিক অপরাধ দমন শাখাও আইকোরের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে! এই টানাপড়েনের জেরে প্রশ্ন উঠেছে সরকারের এক্তিয়ার নিয়েই।
আইনজ্ঞদের বক্তব্য, কমিটি গড়ার আগে হাইকোর্ট সব পক্ষের মতামত নিয়েছিল। তার মধ্যে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি), সিবিআই, সিকিওরিটিজ এক্সচেঞ্জ বোর্ড অব ইন্ডিয়া (সেবি) কমিটি গড়ার পক্ষে মত দেয়। একই মত ছিল রাজ্য সরকারেরও। পরে রাজ্য তাদের নতুন আইনের সাহায্যে আমানতকারীদের টাকা ফেরতের দাবি জানায় আদালতে। তা খারিজ হয়ে যায়।
প্রবীণ আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য জানান, হাইকোর্ট কমিটি গড়ে দেওয়ার পরে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করে ইডি বলে, বেআইনি অর্থ লগ্নি সংস্থার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার অধিকার আছে একমাত্র তাদেরই। তাই হাইকোর্ট নিযুক্ত কমিটির বদলে ইডি-র হাতে টাকা ফেরতের দায়িত্ব তুলে দিক আদালত। সুপ্রিম কোর্ট সেই আবেদন খারিজ করে দেয়।
হাইকোর্টের এক অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি বলেন, ‘‘সংবিধানের দেওয়া ক্ষমতাবলেই কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি মঞ্জুলা চেল্লুর ওই কমিটি গঠন করে টাকা ফেরতের ব্যবস্থা করেন। এখন সেই কমিটিকে পাশ কাটিয়ে রাজ্য সরকার কী ভাবে টাকা ফেরানোর ব্যবস্থা করতে পারে!?’’
রাজ্য প্রশাসনের বক্তব্য, ২০১৩ সালে সরকার যে-নতুন আইন তৈরি করেছে, তাতে সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে হাইকোর্টের অনুমোদন নিয়ে তা আমানতকারীদের ফেরত দেওয়ার অধিকার দেওয়া হয়েছে আর্থিক অপরাধ দমন শাখাকে।
আমানতকারীদের আইনজীবী শুভাশিস চক্রবর্তীর অভিযোগ, আদালতের নির্দেশে কাজ করছে কমিটি। অথচ রাজ্য সরকার এখন বেআইনি ভাবে লগ্নি সংস্থার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছে।