Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Arpita Mukherjee

Partha Chatterjee-Arpita Mukherjee: ‘আমি এই কোম্পানির ডিরেক্টর?’ অর্পিতার বিস্মিত জামাইবাবুর দাবি, ‘আমি তো ড্রাইভার’

ইডি তদন্তে জানা গিয়েছে, ‘ইচ্ছে এন্টারটেনমেন্ট’ নামে একটি সংস্থা রয়েছে অর্পিতার। মন্ত্রী পার্থের বাড়িতে হানা দিয়ে এর সন্ধান পায় তারা।

অর্পিতার নতুন সংস্থা ‘ইচ্ছে’র হদিস পেল ইডি।

অর্পিতার নতুন সংস্থা ‘ইচ্ছে’র হদিস পেল ইডি। নিজস্ব চিত্র।

সারমিন বেগম
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২২ ১৬:২২
Share: Save:

গ্রেফতার হওয়া অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বিভিন্ন সম্পত্তির খোঁজে একাধিক জায়গায় তল্লাশি শুরু করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। বুধবার কসবায় ‘ইচ্ছে’ নামে একটি সংস্থার অফিসে অভিযান চালায় তারা। সেখানকার নথিপত্র খতিয়ে দেখেন ইডি আধিকারিকেরা। ইডির দাবি, মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে হানা দিয়ে ওই সংস্থার খোঁজ পায় তারা।

এখন জানা যাচ্ছে, সংশ্লিষ্ট সংস্থার ডিরেক্টর দু’জন। এক জন ধৃত অর্পিতা। অন্য জন, কল্যাণ ধর। যিনি অর্পিতারই জামাইবাবু। যদিও তাঁর নাম ডিরেক্টর পদে রয়েছে শুনে আকাশ থেকে পড়ছেন কল্যাণ। আনন্দবাজার অনলাইনকে তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘‘আমি তো ওই সংস্থার গাড়িচালক হিসাবে কাজ করতাম!’’

‘ইচ্ছে এন্টারটেনমেন্ট’ নামে সংস্থাটি অভিনেত্রী অর্পিতার বলে দাবি করেছে ইডি। অন্যান্য ব্যবসার মতো এখানেও বিনিয়োগ করতেন তিনি। ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ওই সংস্থার ডিরেক্টর পদে ছিলেন। কিন্তু ২০১৮ সালে ডিরেক্টর হিসেবে নাম জুড়েছে কল্যাণের। বুধবার বেলঘরিয়ার বাসিন্দা কল্যাণের সঙ্গে যোগাযোগ করে আনন্দবাজার অনলাইন। তিনি জানান, এখন তিনি জানতে পেরেছেন, তিনি নাকি ‘ইচ্ছে’র ডিরেক্টর! তাঁর দাবি, তিনি ওই সংস্থার হয়ে গাড়ি চালাতেন। সেই চাকরি পেয়েছিলেন শ্যালিকা অর্পিতার দৌলতেই। অর্পিতা-সহ অন্যদের এখানে-ওখানে নিয়ে যেতেন। পার্থ চট্টোপাধ্যায়কেও একাধিক বার ওই অফিসে যাতায়াত করতে দেখেছেন বলে দাবি করছেন কল্যাণ। কিন্তু ওই পর্যন্তই। কোনও সন্দেহজনক কাজ তাঁর চোখে পড়েনি। তিনি এ-ও জানান, কাজের জন্য তাঁর আধার কার্ড, প্যান কার্ড ইত্যাদি দেখতে চাওয়া হয় আর পাঁচটা কাজের জায়গার মতো। কিন্তু ডিরেক্টর? নৈব নৈব চ। কল্যাণের কথায়, ‘‘আমি নবম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছি। ওখানে যে সব পরিচয়পত্র চেয়েছিল, তাই দিয়েছি। আর কিছু জানি না।’’

তাঁর নাম ওই সংস্থার ডিরেক্টর হিসাবে নথিবদ্ধ আছে জানতে পেরে ‘হতচকিত’ কল্যাণ। তাঁর মন্তব্য, ‘‘আমি ওখানে গাড়ি চালাতাম। প্রথমে মাসে ১০ হাজার টাকা বেতন পেতাম। পরে দু’বছর মাইনে বাড়েনি বলে কথা বলেছিলাম। মাঝখানে কাজ ছেড়েও দিয়েছিলাম। পরে আবার কাজ শুরু করি। তখন থেকে আমার বেতন হয় ১৮ হাজার ৯০০ টাকা।’’

শ্যালিকার সংস্থায় তিনি নিতান্তই এক জন কর্মচারী বলে দাবি করেন কল্যাণ। আনন্দবাজার অনলাইনকে তিনি এ-ও জানান, অর্পিতার জীবনযাত্রা প্রথমে যা ছিল, পরে তার পরিবর্তন হয়েছে। সন্দেহ হয়নি কখনও? কল্যাণের জবাব, ‘‘কারও ব্যক্তিগত বিষয়ে মাথা ঘামাইনি কখনও।’’ তাঁর দাবি, যে গাড়ি তিনি চালাতেন, সেটি শ্যালিকার সংস্থার। সেই গাড়ি কেবল বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যেত। চার তলা বাড়ির একটি তলা বিয়েবাড়ির জন্য আর একটি শুটিংয়ের জন্য ভাড়া দেওয়া হত। আর একটিতে অফিস ছিল। সংস্থায় সব মিলিয়ে মোট সাত-আট জন কর্মী কাজ করতেন। অর্পিতার পাশাপাশি সংস্থার ডিরেক্টর হিসাবে তাঁর নাম রয়েছে। ইডি কি ডেকেছে? কল্যাণের দাবি, ‘‘ইডি ডাকলে তদন্তে সহযোগিতা করব।’’ একটু থমকে তাঁর সংযোজন, ‘‘খুব চাপে আছি। বাড়িতে বয়স্ক মা আছেন। ছোট ছেলেমেয়ে আছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE