Advertisement
E-Paper

সীমান্তেও এ বার পুলিশের নজর মিনার

গুলশনের পরে এ বার কিশোরগঞ্জ। বাংলাদেশে একের পর এক জঙ্গি হামলায় উদ্বিগ্ন এ পার বাংলাও। ফলে নজরদারি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও দড় করতে বিএসএফের পাশাপাশি সীমান্ত ঘেঁষা এলাকায় এ বার ওয়াচ টাওয়ার বসাতে চলেছে পুলিশও।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০১৬ ০০:৪০
পাট খেতের আড়ালে ওয়াচ টাওয়ার।

পাট খেতের আড়ালে ওয়াচ টাওয়ার।

গুলশনের পরে এ বার কিশোরগঞ্জ।

বাংলাদেশে একের পর এক জঙ্গি হামলায় উদ্বিগ্ন এ পার বাংলাও। ফলে নজরদারি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও দড় করতে বিএসএফের পাশাপাশি সীমান্ত ঘেঁষা এলাকায় এ বার ওয়াচ টাওয়ার বসাতে চলেছে পুলিশও।

গত শুক্রবার রাতে ঢাকার গুলশনে এক স্প্যানিশ রেস্তোরাঁতে হামলা চালায় জঙ্গিরা। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই বৃহস্পতিবার, ইদের নমাজের আগে কিশোরগঞ্জে ফের সন্ত্রাসবাদী হামলায় এক হামলাকারী-সহ মোট চার জনের মৃত্যু হয়েছে। জখম অন্তত ১২ জন। সাত দিনের মধ্যে এমন দু’টি ঘটনার পরে কোনও রকম ঝুঁকি নিতে রাজি নয় পুলিশ ও বিএসএফ।

গুলশনের ঘটনার পরেই রাজ্যের সব জেলাকে ২৪ ঘণ্টা অতি-সতর্ক থাকতে বলা হয়েছিল। শুক্রবার রাতেই সেই বার্তা জেলাগুলিতে পৌঁছে যায়। আর তার পর থেকেই সীমান্ত এলাকায় নজরদারি আরও বাড়ানো হয়। শনিবার সব জেলার পুলিশ-কর্তাদের সঙ্গে ভিডিও-কনফারেন্স করেন রাজ্য পুলিশের ডিজি সুরজিৎ কর পুরকায়স্থ।

সেখানে পুলিশ সুপারদের মাধ্যমে মূলত সীমান্ত এলাকার সব থানাতেই বাড়তি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ গিয়েছে। সীমান্তের যে সব এলাকায় কাঁটাতার নেই, সেখানে ‘ওয়াচ টাওয়ার’ বসানোর নির্দেশ দিয়েছেন ডিজি। সীমান্তের কাছে প্রথমে দু’দফায় তল্লাশি করছে সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। তৃতীয় দফায় তল্লাশির দায়িত্বে রয়েছে পুলিশ। ডিজির সেই নির্দেশ পাওয়ার পরেই নড়েচড়ে বসেছে সীমান্তবর্তী দুই জেলা, নদিয়া ও মুর্শিদাবাদ। ওয়াচ টাওয়ার তৈরির ব্যাপারে ইতিমধ্যেই বিএসএফের সঙ্গে বেশ কয়েক দফায় আলোচনাও করেছেন দুই জেলা পুলিশের কর্তারা। বৃহস্পতিবার রাজ্য পুলিশের এডিজি (আইন-শৃঙ্খলা) অনুজ শর্মা বলেন, ‘‘বাংলাদেশ সীমান্তে নজরদারি বাড়াতে পুলিশও ওয়াচ টাওয়ার তৈরি করবে। কোথায় কোথায় টাওয়ারগুলি বসানো হবে সে ব্যাপারেও বিএসএফের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।’’

নদিয়ার পুলিশ সুপার শীষরাম ঝাঝারিয়া বলেন, ‘‘জেলার সীমান্ত লাগোয়া ৭টি থানার ওসিদের ইতিমধ্যেই এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই মতো কাজও এগোচ্ছে।’’ মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার সি সুধাকরের কথায়, ‘‘বিএসএফের সঙ্গে আমরাও প্রাথমিক ভাবে কথা বলেছি। সুতি, জঙ্গিপুর, লালগোলা, জলঙ্গি-সহ সীমান্তবর্তী বেশ কিছু এলাকায় নজরদারি বাড়াতে ওয়াচ টাওয়ার বসানো হবে। বাংলাদেশ সীমান্তের পাশাপাশি ঝাড়খণ্ড সীমান্তেও একই রকম নজরদারির ব্যবস্থা করা হবে।’’

বিএসএফ ও জেলা পুলিশ সূত্রে খবর, বর্ষার মরসুমে বিএসএফ উদ্বিগ্ন থাকে পাচার নিয়ে। কারণ এই সময় বৃষ্টি ও পাটখেতের আড়ালকে কাজে লাগিয়ে পাচারের রমরমা বেড়ে যায়। কিন্তু এ বছর পাচারের থেকেও মাথাব্যথা বাড়িয়েছে বাংলাদেশে জঙ্গি হামলা। বিএসএফের পাশাপাশি সতর্ক রয়েছে পুলিশও। মুর্শিদাবাদ ও নদিয়া সীমান্তের যে এলাকায় কাঁটাতারের বেড়া নেই, সেই এলাকাগুলির কথা মাথায় রেখেই ওয়াচ টাওয়ারের মতো নানা পদক্ষেপ করা হচ্ছে বলে দাবি পুলিশের। মুর্শিদাবাদে প্রায় পঞ্চাশ কিলোমিটার সীমান্ত পথে কোনও কাঁটাতারের বেড়া নেই। সেখানে সীমানা নিয়ন্ত্রণ করে পদ্মা। জেলা পুলিশের একাংশের দাবি, চোরাচালান ও বাংলাদেশি অনুপ্রবেশ রুখতে পুলিশের এই ওয়াচ টাওয়ার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

জেলা পুলিশের এক কর্তা বলছেন, ‘‘এটা অনেকটা দ্বিতীয় ছাঁকনির মতো। বিএসএফের নজর এড়িয়ে কিছু ঘটে গেলে তা আমাদের নজরে পড়ে যাবে।’’ তাছাড়া সীমান্তে অনুপ্রবেশ কিংবা পাচারের আগে থাকে একটা দীর্ঘ প্রস্তুতি। সময়, সুযোগ বুঝে তবেই ঝুঁকি নেয় পাচারকারী কিংবা অনুপ্রবেশকারীরা। সেই ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয় সীমান্ত ঘেঁষা কোনও গ্রাম। পুলিশের দাবি, বিএসএফ যেহেতু একেবারে সীমান্তে নজরদারি চালায় সেই জন্য সবসময় লাগোয়া গ্রামগুলিতে তাদের পক্ষে সবসময় তল্লাশি কিংবা নজরদারি চালানো সম্ভব নয়। পুলিশ এ বার থেকে সেই কাজটাই করবে।

সীমান্ত লাগোয়া থানার এক ওসির কথায়, ‘‘সীমান্তের কোন এলাকা দিয়ে চোরাচালান বেশি হয়, এলাকার কোন বাঁশবাগান কিংবা পাটখেত ব্যবহার করা হয় পাচারের জন্য সে সব খবর আমরাও রাখছি। বিএসএফের সঙ্গে আলোচনা করে সেই সব এলাকাতেই ওয়াচ টাওয়ার তৈরি করা হবে।’’ জেলা পুলিশের এক কর্তার কথায়, ‘‘২৪ ঘণ্টা এই টাওয়ারের উপর থেকে নজরদারি চালানো হবে। রাতের জন্য থাকবে ড্রাগন লাইট আর নাইট ভিশন ক্যামেরা। নজরদারি চালাতে প্রয়োজনে বিএসএফেরও সযোগিতাও নেওয়া হতে পারে।’’

BSF Watch tower Security
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy