Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
BJP

Gangasagar Mela: মেলা-রাজনীতিতে পদ্ম শিবির, উল্টে রাজ্যকে ধর্ম-কাঁটায় বিঁধে সাগরমেলা বন্ধের দাবি

করোনা পরিস্থিতিতে বিজেপি মেলা বন্ধ করার দাবি তুললেও তার দায় রাজ্য সরকারের উপরেই চাপাতে চাইছে। যা থেকে মেলা-রাজনীতির বিষয়টি আরও স্পষ্ট হচ্ছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০২২ ১২:৩৯
Share: Save:

হাতে আর মাত্রই কয়েকটা দিন সময়। কলকাতা হাইকোর্ট গঙ্গাসাগর মেলার ভবিষ্যৎ নিয়ে রায়দান এখনও স্থগিত রেখেছে। এরই মধ্যে রাজ্য বিজেপি মেলা বন্ধ করে দেওয়ার দাবি তুলল! এবং সেই দাবি তুলল রাজ্য সরকারের মেলা-রাজনীতিকে নিশানা করে।

বিজেপি-র বক্তব্য, রাজ্য সরকার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না করেই ধর্মীয় ভাবাবেগকে গুরুত্ব দিতে চেয়ে বিপদ ডেকে আনছে। এই পরিস্থিতিতে যাতে গঙ্গাসাগরে মেলা না হয়, তার জন্য কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের কাছেও রাজ্য বিজেপি আর্জি জানাতে পারে। একই সঙ্গে বিজেপি শাসিত উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড এবং উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলি থেকে পুণ্যার্থীরা এ বার যাতে সাগরমেলায় না আসেন, সে জন্যও উদ্যোগী হওয়ার কথা ভাবছে বিজেপি।

গেরুয়া শিবির করোনা পরিস্থিতিতে মেলা বন্ধ করার দাবি তুললেও তার দায় রাজ্য সরকারের উপরেই চাপাতে চাইছে। যা থেকে মেলা-রাজনীতির বিষয়টি আরও স্পষ্ট হচ্ছে। অর্থাৎ, যে ধর্মের রাজনীতি করার অভিযোগ রাজ্যের শাসক তৃণমূল তাদের বিরুদ্ধে তোলে, সেই অভিযোগের অভিমুখটি তাদের দিকেই ঘুরিয়ে দিচ্ছে পদ্মশিবির।

শুক্রবার দলের রাজ্য মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার আ‌দালতকে যা জানিয়েছে, তাতে ইতিমধ্যেই সাগরে ৩০ হাজার মানুষের সমাগম হয়েছে। এখনই এটা অত্যন্ত বিপজ্জনক। কারণ, আদালতকে সরকার জানিয়েছে, সাগরে কেউ অসুস্থ হলে তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা হবে কলকাতার বাঙ্গুর হাসপাতালে কিংবা যাদবপুরের কেপিসি মেডিক্যাল কলেজে। দু’টি হাসপাতালই সাগর থেকে অনেক দূরে। এটা কোনও যুক্তিযুক্ত ব্যবস্থা হতে পারে না।’’ মেলার আয়োজনের দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মীদের একটা বড় অংশও করোনা আক্রান্ত বলেও দাবি করেছেন শমীক। তিনি বলেন, ‘‘ধর্মীয় ভাবাবেগ নিয়ে রাজনীতি করার আগে ভাবতে হবে সংক্রমণের চেহারা যেন বড় আকার না নেয়। কিন্তু রাজ্য সরকার সে দিকে তাকাচ্ছে না!’’

প্রসঙ্গত, ফি-বছর গঙ্গাসাগর মেলায় ভিন রাজ্য থেকে প্রচুর পুণ্যার্থী আসেন। পশ্চিম, উত্তর এবং মধ্যভারতের পুণ্যার্থীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বেশি থাকে। এর মধ্যে বিজেপি-শাসিত উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, মধ্যপ্রদেশ, হিমাচল প্রদেশ, গুজরাত থেকেও অনেক পুণ্যার্থী আসেন। উত্তর-পূর্বের অসম, ত্রিপুরা থেকেও আসেন পুণ্যার্থীরা। সেই সব রাজ্য থেকে আগত পুণ্যার্থীর ঢল যাতে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, তার জন্যও রাজ্য বিজেপি উদ্যোগী হতে চলেছে বলে জানা গিয়েছে। ঠিক হয়েছে রাজ্যগুলির মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সরাসরি কথা বলবেন দলীয় প্রতিনিধিরা।

সেই প্রসঙ্গে শমীক বলেন, ‘‘আমাদের শীর্ষনেতৃত্বের সঙ্গে আল‌োচনা করে আমরা পদ্ধতি ঠিক করব। তবে আমরা চাই না, অন্য রাজ্যের মানুষ বাংলায় এসে এখানে সংক্রমণ ছড়িয়ে যান বা নিজেরা সংক্রমিত হন। কিন্তু পুণ্যার্থীদের তো আর জোর করে সাগরে আসতে বাধা দেওয়া যায় না। তাই আমরা চাই নিয়ন্ত্রণ। যাঁরা একান্তই আসবেন তাঁরা যেন ‌নিজের রাজ্যেই স্বাস্থ্যপরীক্ষা করিয়ে আসতে পারেন।’’

এত বছরের গঙ্গাসাগর মেলার পরম্পরা বন্ধ করে দেওয়া কি ঠিক ‌হবে? এমন প্রশ্নের উত্তরও তৈরি করে রেখেছে বিজেপি। দলের বক্তব্য, পরিস্থিতি অনুযায়ী পরম্পরারক্ষার কথা ভাবতে হয়। এত মানুষের সমাগম যাতে বিপজ্জনক না হয়ে, ওঠে সেটা মাথায় রাখা দরকার। একই সঙ্গে বিজেপি চাইছে, গঙ্গসাগরে ধর্মীয় আচার পরম্পরা মেনেই হোক। কপিলমুনির আশ্রমে পুজো দেওয়া হোক। কিন্তু মেলার সেই আকার যেন না থাকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

BJP Gangasagr Mela Covid 19
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE