Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

ভাঙল বিয়ের খাট, নতুন দিতে বলল ক্রেতা সুরক্ষা

মেয়ের বিয়েতে উপহার দেওয়া খাট বছর ঘুরতে না-ঘুরতেই ভেঙে গিয়েছে। খাট এত তাড়াতাড়ি ভাঙল কেন, তার উত্তর খুঁজতে বাবা দৌড়লেন জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালত থেকে রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা আদালত পর্যন্ত। একটা হেস্তনেস্ত চান তিনি। অভিযুক্ত সংস্থাকে রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের নির্দেশ, নতুন খাট দিতে হবে।

মেহবুব কাদের চৌধুরী
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:৫৫
Share: Save:

মেয়ের বিয়েতে উপহার দেওয়া খাট বছর ঘুরতে না-ঘুরতেই ভেঙে গিয়েছে। খাট এত তাড়াতাড়ি ভাঙল কেন, তার উত্তর খুঁজতে বাবা দৌড়লেন জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালত থেকে রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা আদালত পর্যন্ত। একটা হেস্তনেস্ত চান তিনি। অভিযুক্ত সংস্থাকে রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের নির্দেশ, নতুন খাট দিতে হবে। সেই সঙ্গে ক্ষতিপূরণ বাবদ দিতে হবে আট হাজার টাকা।

হুগলির গুড়াপের বাসিন্দা, অবসরপ্রাপ্ত আধিকারিক সোমনাথ মিত্র ২০১২ সালে নভেম্বরে একমাত্র মেয়ের বিয়েতে উপহার দেওয়ার জন্য একটি কাঠের খাট কিনেছিলেন। খাটটি তৈরি করেছিল ধনিয়াখালির একটি সংস্থা। সোমনাথবাবুর অভিযোগ, সেগুন কাঠের বক্সখাটের জন্য তিনি ওই সংস্থাকে ৩২ হাজার ৫০০ টাকা দিয়েছিলেন। কিন্তু এক বছর যেতে না-যেতেই খাট ভেঙে যায়। বারবার বলা সত্ত্বেও বিক্রেতা সংস্থার মালিক বিষয়টিকে আমল দেননি। ‘‘তিন বছর পরে, ২০১৫ সালে ওই সংস্থা লিলুয়ায় মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে দু’জন কর্মীকে পাঠায়। কিন্তু সেই কর্মীরা জানিয়ে দেন, খাট সারিয়ে লাভ নেই। ফের তা ভেঙে যেতে পারে,’’ বলেন সোমনাথবাবু।

বাধ্য হয়েই সোমনাথবাবু ২০১৫ সালের জুলাইয়ে ধনিয়াখালির অভিযুক্ত সংস্থা ‘ভারত ট্রেডিং কোম্পানি’র বিরুদ্ধে হুগলি জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে মামলা করেন। ২০১৬-র ডিসেম্বরে সেই আদালত নির্দেশ দেয়, অভিযুক্ত সংস্থাকে নতুন সেগুন কাঠের বক্সখাট এবং নগদ ১৫ হাজার টাকা দিতে হবে। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে অভিযুক্ত সংস্থা মামলা করে রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে। সেই আদালতের বিচারক শ্যামল গুপ্ত ও বিচারক উৎপলকুমার ভট্টাচার্য গত ১৫ ফেব্রুয়ারি তাঁদের রায়ে বলেন, ‘‘অত্যন্ত নিম্ন মানের কাঠের জন্যই এক বছরের মধ্যে নতুন খাটের খুঁত ধরা পড়েছে। এ ক্ষেত্রে অভিযুক্ত ব্যবসায়ী বেআইনি ভাবে ব্যবসা চালানোর দায় এড়াতে পারেন না।’’

আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর হাতে গাছের চারা তুলে দিতে চান এই গাছপাগল!

রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা আদালত নির্দেশ দেয়, অভিযুক্ত সংস্থাকে দে়ড় মাসের মধ্যে ক্ষতিপূরণ বাবদ আট হাজার টাকা এবং নতুন খাট অথবা ২০ হাজার ৫০০ টাকা দিতে হবে। কিন্তু মেয়াদ পেরিয়ে যাওয়া সত্ত্বেও ক্ষতিপূরণের টাকা বা নতুন খাট পাননি সোমনাথবাবু। মঙ্গলবার তিনি বলেন, ‘‘এত দূর যখন এসেছি, শেষ দেখে ছাড়ব। আদালত অবমাননার অভিযোগে ওই সংস্থার বিরুদ্ধে শীঘ্রই মামলা করব।’’ অভিযুক্ত সংস্থা ভারত ট্রেডিং কোম্পানির কর্ণধার শঙ্করচন্দ্র দত্ত অবশ্য বলেন, ‘‘আমরা আদালতের নির্দেশ মেনে চলতে বাধ্য। সোমনাথবাবুকে শীঘ্রই নগদ টাকা এবং নতুন খাট দিয়ে দেব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE