Advertisement
E-Paper

থিতু হচ্ছে না শীত, বাড়ছে রোগের প্রকোপ

আবহাওয়া দফতরের থার্মোমিটারে যেন সাপ-লুডো খেলা চলছে! আর তাতেই নাকাল বাংলাবাসী। শীত থিতু হচ্ছে না কিছুতেই। হাওয়ার ভেল্কিবাজিতে কোনও রাতে সে উঠে যাচ্ছে স্বাভাবিকের কয়েক ডিগ্রি উপরে। পরের রাতেই আবার নেমে আসছে অনেকটা নীচে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০১৫ ০২:৫৬
শীতের শহরে ছুটির মেজাজে খুদেরাও। শনিবার স্বাতী চক্রবর্তীর তোলা ছবি।

শীতের শহরে ছুটির মেজাজে খুদেরাও। শনিবার স্বাতী চক্রবর্তীর তোলা ছবি।

আবহাওয়া দফতরের থার্মোমিটারে যেন সাপ-লুডো খেলা চলছে! আর তাতেই নাকাল বাংলাবাসী।

শীত থিতু হচ্ছে না কিছুতেই। হাওয়ার ভেল্কিবাজিতে কোনও রাতে সে উঠে যাচ্ছে স্বাভাবিকের কয়েক ডিগ্রি উপরে। পরের রাতেই আবার নেমে আসছে অনেকটা নীচে। ঠান্ডা-গরমের ওঠাপড়াতে দাপট বাড়ছে বিভিন্ন ভাইরাসেরও। ঘরে ঘরে সর্দি-জ্বর। জ্বর যদি না-ও হয়, গায়ে ব্যথা, হাঁচি, নাক দিয়ে জল পড়ার মতো উপসর্গ লেগেই থাকছে।

পারদের ভেল্কিবাজি দেখা গিয়েছে শনিবারও। শুক্রবার কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৮.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, স্বাভাবিকের থেকে ৪ ডিগ্রি বেশি। আলিপুর হাওয়া অফিস জানাচ্ছে, এ দিন সর্বনিম্ন তাপমাত্রা এক ধাক্কায় নেমে এসেছে ১৩.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে, যা কি না এ সময়ের স্বাভাবিকের থেকে ১ ডিগ্রি কম। তাপমাত্রা নেমেছে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতেও। কৃষ্ণনগরে শুরু হয়েছে শৈত্যপ্রবাহ। সেখানে এ দিন সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৬.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, স্বাভাবিকের থেকে ৫ ডিগ্রি কম।

আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়ি, কোচবিহার এবং বিহার, ঝাড়খণ্ডের কিছু এলাকাতেও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে ৪ ডিগ্রি নীচে রয়েছে। আবহাওয়াবিদদের পূর্বাভাস, আগামী দু’দিনে কলকাতায় তাপমাত্রা আরও নামবে। উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার এবং দক্ষিণবঙ্গের বাঁকুড়া, পুরুলিয়ার, বীরভূমে শৈত্যপ্রবাহ হতে পারে। একই সতর্কতা জারি করা হয়েছে বিহার, ঝাড়খণ্ডের কিছু এলাকাতেও।

আবহাওয়াবিদদের একাংশ অবশ্য বলছেন, ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে তাপমাত্রা এমন থাকাটাই স্বাভাবিক। গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর কলকাতায় তাপমাত্রা ছিল ১১.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা কি না ওই বছর ডিসেম্বর মাসের সর্বনিম্ন। ‘‘ডিসেম্বরের শেষে জাঁকিয়ে ঠান্ডা পড়বে, এটাই তো স্বাভাবিক,’’ বলছেন এক আবহবিদ।

কিন্তু এ বার গোল বেধেছে ঠান্ডার চরিত্র নিয়েও। পরজীবী-বিশেষজ্ঞ অমিতাভ নন্দী জানাচ্ছেন, তাপমাত্রার হেরফেরে এক দিকে ভাইরাসেরা যেমন সক্রিয় হয়ে উঠছে, তেমনই কমছে দেহের প্রতিরোধ ক্ষমতাও। আর তার ফলেই শরীরে সহজে বাসা বাঁধছে সক্রিয় ভাইরাস। শীত জাঁকিয়ে বসতে না পারায় ডেঙ্গি-ও দিব্যি থেকে যাচ্ছে। এ দিনও দক্ষিণ কলকাতার এক চিকিৎসকের চেম্বারে জ্বর নিয়ে হাজির হয়েছিলেন কয়েক জন রোগী। প্রাথমিক ভাবে পরীক্ষা করার পরে চিকিৎসকের ধারণা, আক্রান্তদের দু’তিন জন ডেঙ্গির কবলে পড়েছেন।

এই পরিস্থিতিতে চিকিৎসকদের কী পরামর্শ?

শহরের বিভিন্ন চিকিৎসক জানাচ্ছেন—

• ঠান্ডা লাগানো চলবে না।

• শিশু ও বৃদ্ধদের ক্ষেত্রে আরও সতর্ক হতে হবে।

• সর্দি-জ্বর হলে প্যারাসিটামল এবং অ্যান্টি-অ্যালার্জিক খাওয়া যেতে পারে।

• জ্বর বেশি হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

• পর্যাপ্ত জল খেতে হবে।

• এ সময়ে বাতাসে ধূলিকণার পরিমাণ বেশি থাকে। তাই রাস্তায় বেরোতে হলে রুমাল বা মাস্কে নাক-মুখ ঢেকে নেওয়া উচিত।

এই অবস্থা কাটবে কবে? চিকিৎসকদের মত, শীত থিতু না হলে রোগের প্রকোপ কমবে না। কিন্তু এ বছর শীতের যা মতিগতি, তাতে কবে শীত থিতু হবে, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে অনেকেরই। যদিও এ দিনই আলিপুর আবহাওয়া দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল গোকুলচন্দ্র দেবনাথ বলেছেন, ‘‘উত্তুরে হাওয়ার পথে কোনও বাধা নেই। থার্মোমিটারের পারদের এমন লাফালাফি এ বার বন্ধ হবে বলেই মনে হচ্ছে।’’

state news winter disease
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy