Advertisement
E-Paper

দিসপুরে শাহনুরের অবাধ গতি ছিল বিধায়ক-নিবাসে

সর্ষের মধ্যেই ‘রাজনীতিক’ থাকার ইঙ্গিত আগেই মিলেছিল। শাহনুর ধরার পড়ার পরে সেই সম্ভবনা আরও প্রকট হয়ে উঠল। পুলিশের দাবি, জেরায় শাহনুর আলম কবুল করেছে, রাজ্যের এক প্রাক্তন মন্ত্রী এবং অন্তত চার বর্তমান ও প্রাক্তন বিধায়কের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতা ছিল। সেই তালিকায় শাসক দল কংগ্রেস এবং বিরোধী দল এআইইউডিএফ---দু’পক্ষেরই কয়েক জনের নাম জড়িয়ে গিয়েছে। এনআই-এর এক তদন্তকারী জানান, শাহনুর জানিয়েছে, সে একাধিক বিধায়কের কাছ থেকে ‘আর্থিক’ ও ‘পরিকাঠামোগত’ সাহায্য পেয়েছে।

রাজীবাক্ষ রক্ষিত

শেষ আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০১৪ ০৩:০৯

সর্ষের মধ্যেই ‘রাজনীতিক’ থাকার ইঙ্গিত আগেই মিলেছিল। শাহনুর ধরার পড়ার পরে সেই সম্ভবনা আরও প্রকট হয়ে উঠল। পুলিশের দাবি, জেরায় শাহনুর আলম কবুল করেছে, রাজ্যের এক প্রাক্তন মন্ত্রী এবং অন্তত চার বর্তমান ও প্রাক্তন বিধায়কের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতা ছিল।

সেই তালিকায় শাসক দল কংগ্রেস এবং বিরোধী দল এআইইউডিএফ---দু’পক্ষেরই কয়েক জনের নাম জড়িয়ে গিয়েছে। এনআই-এর এক তদন্তকারী জানান, শাহনুর জানিয়েছে, সে একাধিক বিধায়কের কাছ থেকে ‘আর্থিক’ ও ‘পরিকাঠামোগত’ সাহায্য পেয়েছে।

শাহনুরের স্ত্রী সুজানাকে জেরা করে পুলিশ নলবাড়ির মুকালমুয়ায় শাহনুরের দিদি-জামাইবাবুর বাড়িতে তল্লাশি চালায়। সেখানে মাটি খুঁড়ে যে নথি-বোঝাই বাক্সগুলি মেলে সেখান থেকেই পুলিশ ও এনআইএ প্রথম জানতে পারে, জামাতুল মুজাহিদিনের বরপেটা মডিউলে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের মদত রয়েছে। পুলিশের দাবি, শাহনুরকে জেরা করে জানা গিয়েছে শাসক ও বিরোধী একাধিক বিধায়কের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতা ছিল। এমন কী, বহুবার সে দিসপুরের বিধায়ক আবাসে এসেছে এবং রাত্রিবাস করেছে। পুলিশ এ-ও জানতে পেরেছে, অগস্টে বিধানসভা অধিবেশন চলায় সময় শাহনুর বিধায়ক আবাসেই ছিল। তদন্তের খাতিরে ওই নেতাদের নাম প্রকাশ করেনি পুলিশ।

শাহনুরের সঙ্গে বিধায়কদের ঘনিষ্ঠতার ব্যাপারে পুলিশ জানতে পেরেছে এ কথা প্রকাশ হওয়ার পরেই আজ এআইইউডিএফ নেতা তথা ধুবুরির প্রাক্তন বিধায়ক রসুল হক বাহাদুর জানান, বরপেটার স্থানীয় ধর্মপ্রাণ যুবক হিসেবেই শাহনুরকে তিনি চিনতেন। সে জেহাদের সঙ্গে যুক্ত তা তিনি জানতেন না। তিনি বলেন, “শাহনুর মাদ্রাসা ও মসজিদের জন্য অর্থ সংগ্রহ করতে আমার সঙ্গে দেখা করে। এ ব্যাপারে সে আরও কয়েকজন বিধায়কের সঙ্গেও দেখা করেছিল। তবে তার সঙ্গে জামাত বা জেহাদের যোগাযোগ নিয়ে তখন কারও ধারণা ছিল না।” তিনি স্বীকার করেন, শাহনুর বিধায়ক আবাসেও এসেছিল। এই রসুল হক এবং বরপেটার বর্তমান বিধায়ক আবদুর রহিম খান গত অক্টোবর মাসে বরপেটা থেকে ছয় জামাত সদস্য গ্রেফতার হওয়ার পরেই দাবি করেছিলেন, বরপেটায় কোনও জেহাদি নেই। সব সরকারের চক্রান্ত।

ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে বিএসএফের তরফে যে গোপন রিপোর্ট দেওয়া হয়, তাতে ধুবুরি থেকে জুন-জুলাই মাসে একদল যুবককে জেএমবির প্রশিক্ষণ নেওয়ার জন্য বাংলাদেশের রংপুরে পাঠানোর কথা বলা হয়েছিল। রিপোর্টে বলা হয়, সেই কাজে জেএমবির স্থানীয় সদস্যদের সাহায্য করেছিল একটি রাজনৈতিক দল ও একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। বাংলাদেশে হওয়া জেএমবি-র একাধিক সমাবেশে একাধিক রাজনৈতিক নেতাও হাজির ছিলেন। আজ অসম পুলিশ সূত্রে জানানো হয়, বিষয়টি সম্পর্কে আরও নিশ্চিত হওয়ার পরেই রাজনৈতিক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে তদন্তে নামবে এনআইএ ও পুলিশ। অসম পুলিশের ডিজি খগেন শর্মা বলেন, “আমরা সমস্ত তথ্য প্রমাণ যাচাই করছি। পুলিশ আইন মেনেই ব্যবস্থা নেবে।” মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ অবশ্য বলেন, “পুলিশ তদন্ত করছে। আমি কোনও সম্ভাবনাই উড়িয়ে দিচ্ছি না। যে কোনও দলের বিধায়কই এই ব্যাপারে জড়িত থাকতে পারেন। তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

guwahati rajibakhya rakshit burdwan blast nia
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy