Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

পাড়ুইয়ের গ্রামে বোমাবাজি ও মার তৃণমূলের, নালিশ বিজেপির

বেছে বেছে বিজেপি নেতা-কর্মীদের মারধর, বাড়িতে অগ্নিসংযোগ এবং বোমাবাজি করার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। ঘটনাস্থল বীরভূমের সেই পাড়ুই, যা সম্প্রতি বারবার তেতে উঠেছে বিজেপি-তৃণমূল সংঘর্ষে। প্রাণ গিয়েছে দু’দলের বেশ কয়েক জনের। বিজেপি-র অভিযোগ, শনিবার মাঝরাতে পাড়ুইয়ের মাখড়া গ্রামে তাদের একাধিক নেতা-কর্মীর বাড়ি, রান্নাঘর ও খড়ের পালুইয়ে আগুন ধরিয়েছে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা।

পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে এক বিজেপি সমর্থকের চালাঘর।  নিজস্ব চিত্র

পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে এক বিজেপি সমর্থকের চালাঘর। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
পাড়ুই শেষ আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০১৪ ০৩:০৩
Share: Save:

বেছে বেছে বিজেপি নেতা-কর্মীদের মারধর, বাড়িতে অগ্নিসংযোগ এবং বোমাবাজি করার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। ঘটনাস্থল বীরভূমের সেই পাড়ুই, যা সম্প্রতি বারবার তেতে উঠেছে বিজেপি-তৃণমূল সংঘর্ষে। প্রাণ গিয়েছে দু’দলের বেশ কয়েক জনের।

বিজেপি-র অভিযোগ, শনিবার মাঝরাতে পাড়ুইয়ের মাখড়া গ্রামে তাদের একাধিক নেতা-কর্মীর বাড়ি, রান্নাঘর ও খড়ের পালুইয়ে আগুন ধরিয়েছে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। আক্রান্ত পরিবারগুলির অভিযোগ, গ্রামের পুলিশ ক্যাম্প তুলে নেওয়ার খবর পেয়েই তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা হামলা চালিয়েছে গ্রামে। বীরভূমের পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া অবশ্য স্পষ্ট জানিয়েছেন, মাখড়া গ্রামে পুলিশ ক্যাম্প রয়েছে। ক্যাম্প তোলার অভিযোগ ঠিক নয়। তাঁর বক্তব্য, “আমরা যখন মনে করব এলাকায় শান্তি ফিরেছে, তখনই ক্যাম্প তোলা হবে। ঘটনার খবর পেয়েই এলাকায় পুলিশ যায়। প্রাথমিক তদন্তে মনে হচ্ছে, ঘটনায় গ্রামেরই একাংশের যোগ রয়েছে।” রাজ্য পুলিশের এক কর্তারও দাবি, “মাখড়া থেকে পুলিশ ক্যাম্প তোলাটা গুজব ছাড়া আর কিছু নয়।”

মাখড়ার বিজেপি কর্মীদের অভিযোগ, শনিবার গভীর রাতে মাখড়া লাগোয়া ক্যানালপাড়ের রাস্তা ধরে উলুন্ডির দিক থেকে জনা পঞ্চাশেক তৃণমূল নেতা-কর্মী ও তাদের আশ্রিত দুষ্কৃতীরা বোমাবাজি করতে করতে গ্রামে ঢোকে। গ্রামে ঢোকার মুখে স্থানীয় বিজেপি কর্মী জিয়ার আলির বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। জিয়ার আলির মেয়ে, নবম শ্রেণির পড়ুয়া রেশমা খাতুনের অভিযোগ, “কিছু বোঝার আগেই ওরা আমাদের খড়ের চালায় আগুন দেয়। মা বাধা দিতে গেলে তাঁকে মারধর করে। বাবা বাইরে থাকায় এ যাত্রা বেঁচে গিয়েছে। যাওয়ার সময় তৃণমূলের লোকজন, প্রাণে মারার শাসানিও দিয়েছে।” এর পরে বিজেপি কর্মী শেখ শাহাজাহানের রান্নাঘর ও খড়ের পালুইয়ে আগুন লাগানো হয়। মাখড়ার বাসিন্দা শেখ জামিরুল, শেখ নওসাদ, শেখ আজহারউদ্দিনদের অভিযোগ, বেছে বেছে বিজেপি কর্মীদের বাড়ির সামনে বোমবাজি করে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা। মণ্ডলপাড়ার বাসিন্দা শেখ লালন, মাঝিপাড়ার শেখ হবিবুল্লার বাড়ির দেওয়াল লক্ষ করেও বোমা ছোড়ে দুষ্কৃতীরা। হামলার জেরে আতঙ্ক ছড়ায় সাধারণ গ্রামবাসীদের মধ্যে। খবর পেয়ে পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামলায়।

এই ঘটনায় পাড়ুইয়ের তৃণমূল নেতা মুস্তাক হোসেন, শেখ মুস্তফা এবং ইলামবাজার ব্লক তৃণমূল সভাপতি জাফারুল ইসলাম-সহ ৩০ জনের পুলিশে লিখিত অভিযোগ করেছে বিজেপি। যদিও মুস্তাক হোসেন বলেন, “যারা (বিজেপি নেতারা) পুলিশের উদ্যোগে হওয়া শান্তি বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে গেছে, তারাই এই ঘটনার জন্য দায়ী। বিজেপি-ই আসলে এলাকায় শান্তি চায় না। এখন আমাদের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অভিযোগ করছে। এই ঘটনার সঙ্গে তৃণমূল কোনও ভাবেই যুক্ত নয়।”

রবিবার দুপুরে আবার বেলেঘাটায় প্রগতি ময়দান থানা এলাকার ক্যানাল সাউথ রোডে ব্যানার লাগানো নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে তৃণমূল এবং বিজেপি। পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন সকালে ওই এলাকায় দলের ব্যানার লাগাচ্ছিলেন কিছু বিজেপি কর্মী। অভিযোগ, সেই সময় কিছু তৃণমূল কর্মী তাঁদের সঙ্গে বচসায় জড়ান। বচসা থেকে মারমারি বাধে। ঘটনায় দু’তিন জন বিজেপি কর্মী জখম হন। তৃণমূল কর্মীরা বিজেপি কর্মীদের লাগানো ব্যানার ছিঁড়ে দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ। বিজেপি পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

tmc-bjp clash parui
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE