Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

বয়কটের পথ ছাড়তে আবার আর্জি পার্থের

দু’দিন বাদেই, বুধবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন। কিন্তু শিক্ষক-ছাত্রদের একটা বড় অংশ তাতে যোগ না-দেওয়ার সিদ্ধান্তে এখনও অনড়। এই পরিস্থিতিতে ছাত্রছাত্রীদের সমাবর্তন বয়কটের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করার জন্য আবার আবেদন জানালেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। আবার জানালেন, ক্ষোভ-উষ্মা প্রকাশ করার জন্য অনেক সময় পাওয়া যাবে। কিন্তু সমাবর্তন এক জন পড়ুয়ার জীবনে এক বারই আসে। তাই এই অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার কথা বিবেচনা করার জন্য আর্জি জানালেন ছাত্রছাত্রীদের।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০১৪ ০২:৫৫
Share: Save:

দু’দিন বাদেই, বুধবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন। কিন্তু শিক্ষক-ছাত্রদের একটা বড় অংশ তাতে যোগ না-দেওয়ার সিদ্ধান্তে এখনও অনড়। এই পরিস্থিতিতে ছাত্রছাত্রীদের সমাবর্তন বয়কটের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করার জন্য আবার আবেদন জানালেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। আবার জানালেন, ক্ষোভ-উষ্মা প্রকাশ করার জন্য অনেক সময় পাওয়া যাবে। কিন্তু সমাবর্তন এক জন পড়ুয়ার জীবনে এক বারই আসে। তাই এই অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার কথা বিবেচনা করার জন্য আর্জি জানালেন ছাত্রছাত্রীদের।

শিক্ষামন্ত্রী রবিবার প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে যোগ দেন। সেই অনুষ্ঠানের শেষে যাদবপুরের পড়ুয়াদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “প্রতিবাদ-উষ্মা জানানোর অনেক সময় আসবে। সমাবর্তনে যোগ দেওয়ার ব্যাপারে বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আবেদন জানাচ্ছি।” কখনও আলোচনা চেয়ে, কখনও বা আবেদন জানিয়ে যাদবপুরের পড়ুয়াদের সমাবর্তন বয়কটের সিদ্ধান্ত থেকে সরিয়ে আনার চেষ্টা চালাচ্ছেন শিক্ষামন্ত্রী। গত বৃহস্পতিবার আচার্য-রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী পড়ুয়াদের শংসাপত্রে স্ট্যাম্প লাগিয়ে বয়কটের কথা লিখে দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়ায় নতুন বিতর্ক তৈরি হয়। রাজ্যপালের বক্তব্যের আইনি বৈধতা নিয়েই প্রশ্ন ওঠে। শনিবার অবশ্য রাজ্যপাল বলেন, তিনি নিছক একটা প্রস্তাব ও পরামর্শ দিয়েছিলেন মাত্র।

আচার্য সুর নরম করেছেন। ফের আবেদনের পথ নিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী। কিন্তু বরফ গলবে কি না, ধন্দ থেকেই যাচ্ছে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে গত শুক্রবারেও ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশে মন্ত্রী এই ধরনের অনুরোধ করেন। কিন্তু পড়ুয়ারা নরম হয়েছেন, এমন প্রমাণ মেলেনি। এ দিন মন্ত্রী ফের আর্জি জানালেও চিঁড়ে ভেজার আভাস নেই। অম্লান হাজরা নামে এক আন্দোলনকারী ছাত্র বলেন, “শিক্ষামন্ত্রীর আবেদনের কথা সংবাদমাধ্যমেই জানছি। উনি ওঁর কথা বলেছেন। আমরা এখনও বয়কটের সিদ্ধান্তে অচল। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে সোমবার (আজ) আমাদের সাধারণ সভার বৈঠকে।”

আর যাদবপুরের শিক্ষক সংগঠন জুটা-র সাধারণ সম্পাদিকা নীলাঞ্জনা গুপ্তের অনুযোগ, শিক্ষামন্ত্রী তো শুধু আবেদনই জানাচ্ছেন। কিন্তু কোনও গঠনমূলক পদক্ষেপ করার দিকে তাঁর মন নেই! ওই শিক্ষিকার কথায়, “গত ২৮ অগস্ট হস্টেলে এক ছাত্রীর শ্লীলতাহানির ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত কমিটি (আইসিসি) কী রিপোর্ট দিল, সরকারি তদন্ত কমিটিই বা কী বলল, সে-সব তো কেউ জানালেন না। শিক্ষামন্ত্রী ছাত্রছাত্রীদের কাছে আবেদন জানাচ্ছেন, ঠিকই আছে। কিন্তু কোনও পদক্ষেপ করা না-হলে তাতে ফল হবে কী করে!”

বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ এ দিন মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ানে সাংবাদিক বৈঠকে জানান, যাদবপুরে উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে তাঁরাও এক সময় বিরোধিতা করেছিলেন। কিন্তু আচার্য যখন উপাচার্যকে নিয়োগ করেই ফেলেছেন, তখন তাঁকে সম্মান জানানো উচিত। “যে-সব ছাত্র-শিক্ষক সমাবর্তন বয়কটের সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন, তাঁদের সেই পথ থেকে সরে আসার আবেদন জানাব,” বলেন রাহুলবাবু।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE