ঘেরাও-বিক্ষোভ চলবে না বলে দিন চারেক আগেই ছাত্র-শিক্ষকদের সতর্ক করে দিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নৈরাজ্যের পরিবেশ তৈরির চেষ্টা হলে তিনি কড়া হাতে তার মোকাবিলা করবেন বলে ছাত্র সংগঠনগুলির উদ্দেশে ফের বার্তা দিলেন মন্ত্রী।
শুক্রবার বিধানসভা ভবনে রাজ্য পরিষদীয় বিভাগ আয়োজিত একটি প্রবন্ধ প্রতিযোগিতার পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানের শেষে শিক্ষামন্ত্রী ছাত্র সংগঠনগুলিকে তাদের দায়দায়িত্বের কথা স্মরণ করিয়ে দেন। ঘটনাচক্রে আগের দিন অর্থাৎ বৃহস্পতিবারেই কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের নেতা তন্ময় আচার্যকে সাসপেন্ড করেছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি)। ওই ছাত্রনেতার বিরুদ্ধে মোটা টাকার বিনিময়ে নদিয়ার ভক্তবালা বিএড কলেজে ছাত্রছাত্রী ভর্তি করানোর অভিযোগ উঠেছে।
সেই প্রসঙ্গ টেনেই এ দিন পার্থবাবুর প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হয়। তিনি বলেন, “সব ছাত্র সংগঠনকেই বলব, কেউ যেন এই ধরনের অভিযোগে জড়িয়ে না-পড়েন। বামপন্থী সংগঠন, ছাত্র পরিষদ-সহ যত সংগঠন আছে, সকলকেই বলছি কথাটা। কেউ যেন শিক্ষায় নৈরাজ্যের পরিবেশও তৈরি না-করে।” সেই সঙ্গেই মন্ত্রী জানান, কোনও প্রতিষ্ঠানের কারও বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ উঠলে তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিতে হবে। অধ্যাপক থেকে ছাত্র কেউই ছাড় পাবেন না। তন্ময়কে সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্তকে আগেই স্বাগত জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।
গত মে মাসের শেষে শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই বিভিন্ন সময়ে শিক্ষা ক্ষেত্রে ভাল পরিবেশ বজায় রাখা, ছাত্র-শিক্ষক সুসম্পর্ক পুনরুদ্ধার, ছাত্রছাত্রীদের ঘেরাও আন্দোলনের পথে যাওয়া থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন শিক্ষামন্ত্রী। গত সোমবার তৃণমূল ভবনে টিএমসিপি নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে তিনি পরিষ্কার জানিয়ে দেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বহিরাগতদের প্রবেশ তাঁর পছন্দ নয় মোটেই। সেই বৈঠকে টিএমসিপি-র রাজ্য সভাপতি শঙ্কুদেব পণ্ডাও হাজির ছিলেন।
কিন্তু শিক্ষামন্ত্রীর সদুপদেশ ছাত্র সংগঠনগুলির কানে কতটা পৌঁছবে, তা নিয়ে অবশ্য সংশয় রয়েছে অনেকেরই। শিক্ষানুরাগীদের কারও কারও ধারণা, মন্ত্রী যা-ই বলুন, দলের প্রশ্রয়েই ছাত্রনেতারা শিক্ষাঙ্গনে দাপট দেখান। অবশ্য তন্ময় আচার্যকে সাসপেন্ড করার ঘটনায় কিছুটা আশার আলো দেখছেন তাঁরা। পার্থবাবুর এ দিনের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে কিছু বলতে চাননি টিএমসিপি-র রাজ্য সভাপতি শঙ্কুদেব। তাঁর মন্তব্য, “শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য সম্পর্কে কিছু বলা দলের শিষ্টাচার-বিরুদ্ধ।” শিক্ষামন্ত্রীর পরামর্শকে স্বাগত জানিয়েছে এসএফআই এবং ছাত্র পরিষদ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy