Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

শুভেন্দুকে ফেরানোর আর্জি জানাবে নন্দীগ্রামের তৃণমূল

শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে আবেগে খামতি নেই পূর্ব মেদিনীপুরে। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তমলুকের সাংসদের সাংগঠনিক ক্ষমতা খর্ব করলেও, শুভেন্দুকে যুব তৃণমূলের রাজ্য সভাপতির পদে ফেরানোর আর্জি নিয়ে চলতি সপ্তাহের শেষে কলকাতায় দলের রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে দেখা করতে চায় তৃণমূলের নন্দীগ্রামের প্রতিনিধি দল।

নিজস্ব সংবাদদাতা
তমলুক ও কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০১৪ ০৩:০১
Share: Save:

শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে আবেগে খামতি নেই পূর্ব মেদিনীপুরে।

দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তমলুকের সাংসদের সাংগঠনিক ক্ষমতা খর্ব করলেও, শুভেন্দুকে যুব তৃণমূলের রাজ্য সভাপতির পদে ফেরানোর আর্জি নিয়ে চলতি সপ্তাহের শেষে কলকাতায় দলের রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে দেখা করতে চায় তৃণমূলের নন্দীগ্রামের প্রতিনিধি দল। সেই আবেদনে কী কী বিষয় তুলে ধরা হবে তা নিয়ে একপ্রস্ত আলোচনা হয় মঙ্গলবার। তৃণমূল সূত্রের খবর, রাজ্য নেতৃত্ব তাঁদের আবেদনে সাড়া না দিলে ‘বিকল্প ভাবনা’ও রয়েছে এই নেতাদের।

আবার এ দিনই তমলুকে এক বৈঠকে জেলা তৃণমূলের নেতারা সিদ্ধান্ত নেন, ১৫ জুন নিমতৌড়িতে শুভেন্দু এবং শিশির অধিকারীর সংবর্ধনা উপলক্ষে সমাবেশে অন্তত এক লক্ষ লোকের জমায়েত করবেন।

তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি তথা সাংসদ সুব্রত বক্সীর সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছে নন্দীগ্রামের প্রতিনিধি দলটি। তবে সুব্রতবাবু বলেন, “ওঁরা কী বলবেন, জানি না।” সাংসদ পদে শপথ নিতে সুব্রতবাবু এ দিন ছিলেন দিল্লিতে। তাঁর সংযোজন, “ফিরোজাবিবিকে (নন্দীগ্রামের তৃণমূল বিধায়ক) বলেছি, কলকাতায় ফিরে যাই। শুক্র-শনিবার ফোন করে আসবেন।”

নন্দীগ্রামের টেঙ্গুয়ায় এ দিন সকালে তৃণমূলের যে বৈঠক বসেছিল, তাতে ফিরোজা বিবি, পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি শেখ সুফিয়ান, নন্দীগ্রাম ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আবু তাহের-সহ বহু নেতা উপস্থিত ছিলেন। ঠিক হয়, নন্দীগ্রামের বিধায়ক, দলীয় নেতা, শহিদ পরিবারের সদস্য-সহ ৩০ জনের প্রতিনিধি দল রাজ্য নেতৃত্বের কাছে শুভেন্দুুকে দলের যুব সভাপতির পদে ফেরানোর আর্জি জানাবে।

বৈঠকে হাজির থাকা একাধিক তৃণমূল নেতার বক্তব্যের নির্যাস রাজ্যে পালাবদলের পিছনে যেমন নন্দীগ্রাম আন্দোলনের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে, তেমনই নন্দীগ্রামের আন্দোলনে শুভেন্দুর ভূমিকা নিয়ে স্থানীয় মানুষের আবেগ রয়েছে। তাঁরা শুভেন্দুুকে দলে গুরুত্বহীন (তুলনায়) পদে সরানোর সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারছেন না। নন্দীগ্রামের বিধায়ক ফিরোজা বিবির কথায়, “দলনেত্রীকে আমরা শ্রদ্ধা করি। আবার শুভেন্দুবাবুকে নিয়ে নন্দীগ্রামের মানুষের আবেগ আছে, এটাও ঠিক। তাই রাজ্য নেতৃত্বের কাছে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আবেদন জানাব।”

আবেদনে কাজ না হলে কী করবেন? ফিরোজা, তাহের, সুফিয়ানরা জবাব দেননি। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক নন্দীগ্রামের এক তৃণমূল নেতার বক্তব্য, “শুভেন্দু আন্দোলনের রাশ না ধরলে আমাদের অনেকেই আজ যে পদে রয়েছেন, তা থাকতেন না। শুভেন্দুদার চেয়ে পদ তাঁদের বেশি প্রিয় নয়।”

তৃণমূল সূত্রের দাবি, এ দিন তমলুকের নিমতৌড়ি স্মৃতিসৌধে দলের জরুরি বৈঠকেও বেশ কয়েকজন নেতা শুভেন্দু-অপসারণ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। বৈঠক শেষে জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক তথা জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ সোমনাথ বেরা বলেন, “১৫ জুন শুভেন্দু-শিশিরবাবুর গণসংবর্ধনাসভায় এক লক্ষ মানুষের জমায়েত হবে।”

২০০৯-এ লোকসভা ভোটে জিতলেও শুভেন্দু বা শিশিরবাবুকে এ ধরনের সংবর্ধনা দেওয়া হয়নি। এ বারের জমায়েত কি রাজ্য নেতৃত্বের জন্য ইঙ্গিতবাহী? শুভেন্দু মন্তব্য করতে চাননি। তবে তমলুকের বৈঠকে হাজির থাকা তৃণমূল নেতা শেখ সুফিয়ান বলেন, “ও ভাবে দেখবেন না। মানুষ ভাল না বাসলে শুভেন্দুবাবুরা পর পর দু’বার জিতলেন কী ভাবে?”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

tmc subhendu adhikary nandigram akhil giri
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE