নরেন্দ্র মোদীর সরকার দায়িত্ব নেওয়া মাত্র তাদের বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়া উচিত হবে না। এমন মন্তব্য করেও দলের চাপে আধঘণ্টার মধ্যে বিবৃতি প্রত্যাহার করে নিতে হল বর্ষীয়ান তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়কে! পরবর্তী বিবৃতিতে তিনি জানিয়েছেন, মোদী সরকারের ব্যাপারে সংসদে দলের অবস্থান কী হবে, তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। তাই মন্তব্য করা উচিত হবে না।
উন্নয়নের কাজে রাজনীতি চান না বলে ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন ভাবী প্রধানমন্ত্রী মোদী। রাজ্যের উন্নয়নে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তিনি যে সহযোগিতা করতে তৈরি, এই মর্মে মোদীর বক্তব্য সোমবারই প্রকাশিত হয়েছিল আনন্দবাজারে। ভাবী প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য, বাংলায় বিজেপি-র রাজনৈতিক শক্তি বাড়ানো অবশ্যই তাঁদের উদ্দেশ্য। কিন্তু তা-ই বলে উন্নয়নের ভাবনার মাঝে রাজনীতিকে কাঁটা ফেলতে দেবেন না তিনি। উন্নয়ন নিয়ে আলোচনার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতাকে দিল্লি আসার আমন্ত্রণও জানিয়েছিলেন মোদী। এর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সৌগতবাবুর মতো রাজনীতিককে যে ভাবে মুখ খুলেও ঢোক গিলে নিতে হয়েছে, তাতে তৃণমূলের স্পর্শকাতরতারই ইঙ্গিত রয়েছে বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অভিমত। তাঁদের মতে, রাজ্যে সংখ্যালঘু সমর্থনের কথা ভেবে মোদীর দিকে আগ বাড়িয়ে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে দ্বিধায় রয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। আবার মোদীর উন্নয়ন-বার্তা প্রত্যাখ্যান করলে রাজ্যের প্রগতির প্রশ্নে মুখ্যমন্ত্রীর আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে। তাই গোটা বিষয়টি প্রকৃত পক্ষে তৃণমূলের কাছে উভয় সঙ্কট। সৌগতবাবুর এ দিনের মন্তব্য ও প্রত্যাহার সেই সঙ্কটেরই প্রতিফলন।
সংবাদসংস্থা পিটিআইকে এ দিন প্রথমে সৌগতবাবু বলেছিলেন, “আমরা বিরোধী পক্ষে আছি। মোদী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পরে প্রথম থেকেই কড়া বিরোধিতা খুব ভাল কাজ হবে না।” তবে রাজ্যের দাবিদাওয়ার ব্যাপারে লোকসভায় তাঁরা যে সরব হবেন, সে কথাও জানিয়েছিলেন দমদমের সাংসদ। এর কিছু ক্ষণ পরেই আবার পিটিআই জানায়, তাঁর আগের মন্তব্য প্রত্যাহার করে নিয়েছেন সৌগতবাবু। বলেছেন, “একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। সংসদে মোদী সরকার সম্পর্কে অবস্থানের ব্যাপারে দল চূড়ান্ত ভাবে কিছু ঠিক করেনি।”
তৃণমূল সূত্রের খবর, সৌগতবাবুর প্রথম বক্তব্যের কথা জেনে যথেষ্টই ক্ষুব্ধ হন তৃণমূল নেত্রী। দলীয় নেতৃত্বের মনোভাব বুঝেই আগের কথা ফিরিয়ে নেন সৌগতবাবু। লোকসভায় ৩৪ জন সাংসদ নিয়ে দলের অবস্থান কী হবে, এই একই প্রশ্নের জবাবে তৃণমূলের লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় কিন্তু পিটিআইকে বলেছিলেন, “দলনেত্রীর সঙ্গে আলোচনা না করে আমি কিছু বলতে পারব না।” পরে বিবৃতি দিয়ে কার্যত সেই কথাই বুঝিয়েছেন সৌগতবাবু। দলের প্রথম সারির এক নেতার কথায়, “সৌগতদা’র মতো অভিজ্ঞ লোক কেন এমন বলতে গেলেন, কে জানে!” বিষয়টি নিয়ে পরে আর বিশদে মুখ খুলতে চাননি সৌগতবাবু।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy