ত্রিশক্তি: গোপীনাথ, বুন এবং গোল্ডবার্গ (বাঁ দিক থেকে)।
কলকাতায় জন্ম। বাবা কাজ করতেন উষা কোম্পানিতে। কেরলের কমিউনিস্ট পরিবারের মেয়ে। নরেন্দ্র মোদীর নোট বাতিলের কড়া সমালোচক। এ হেন গীতা গোপীনাথই এ বার হতে চলেছেন আন্তর্জাতিক অর্থভাণ্ডারের (আইএমএফ) মুখ্য অর্থনীতিবিদ।
এপ্রিলে বিশ্বব্যাঙ্কের মুখ্য অর্থনীতিবিদ হয়েছেন পেনেলোপি কোউজিয়ানোউ গোল্ডবার্গ। জুনে ওইসিডিতে একই পদে আসেন লরেন্স বুন। আর পরের বছর আইএমএফে আসবেন গীতা। ফলে ২০১৯ সালে তিনটি আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মুখ্য অর্থনীতিবিদ পদেই মহিলারা। যাকে ‘হোলি ট্রিনিটি’ আখ্যা দিচ্ছেন বিশ্বের অর্থনীতিবিদেরা।
এমনিতে আর্থিক দুনিয়ায় মহিলাদের উপস্থিতি তেমন জোরালো নয়। যে কারণে আইএমএফের প্রথম মহিলা কর্ণধার হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে বরাবর মেয়েদের এগিয়ে আসার পক্ষে সওয়াল করেছেন ক্রিস্টিন ল্যাগার্দে। অনেকের মতে, সেই অর্থে এই তিন জনের নিয়োগ আর্থিক দুনিয়ায় নারীশক্তিকেই তুলে ধরছে।
তবে মেয়ে হিসেবে এটাই গীতার প্রথম নজির নয়। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগের ইতিহাসে তিনি তৃতীয় মহিলা, যিনি টেনিয়োর্ড প্রফেসর হয়েছেন। ফলে তাঁর আইএমএফের মুখ্য অর্থনীতিবিদ হওয়ায় অবাক নন বাবা টি ভি গোপীনাথ। সত্তরের দশকে যিনি কাজ করতেন কলকাতায় উষা কোম্পানিতে। তখনই জন্মান গীতা।
কেরলের কুন্নুর জেলার মানুষ টি ভি গোপীনাথের বাবা টি সি নাম্বিয়ার ছিলেন কমিউনিস্ট পার্টির স্তম্ভ এ কে গোপালনের দূর সম্পর্কের আত্মীয়। গীতার পরিবার কলকাতা, দিল্লি, হায়দরাবাদ ঘুরে থিতু হয় মহীশূরে। তাঁর বাবা প্রথমে চাষবাষ শুরু করেন। পরে চাষিদের নিয়েই গড়েন সংস্থা।
মঙ্গলবার মহীশূরের বাড়িতে গোপীনাথ বলেছেন, ‘‘গীতা যেখানে পৌঁছেছে, পুরোটাই পরিশ্রমের ফসল। দ্বাদশ শ্রেণিতে বিজ্ঞান নিয়ে পড়েছে। অথচ স্নাতক স্তরে তিন বছরই অর্থনীতির পরীক্ষায় প্রথম হয়।’’
কমিউনিস্ট পরিবারের মেয়ে হলেও, গীতাকে কেরলে পিনারাই বিজয়ন সরকার আর্থিক উপদেষ্টা করার সময় বহু বাম নেতা আপত্তি তুলেছিলেন। এখন দিল্লিতে প্রশ্ন উঠছে, তাঁকে কেন কেন্দ্রের আর্থিক নীতি তৈরির দায়িত্বে আনা হল না? অরবিন্দ সুব্রহ্মণ্যনের পরে যখন মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টার পদ ফাঁকা পড়ে।
এই প্রসঙ্গে অর্থ মন্ত্রকের কর্তারা মনে করাচ্ছেন নোটবন্দি নিয়ে গীতার কথা, ‘‘এমন কোনও অর্থনীতিবিদকে চিনি না, যিনি ভাবেন নোট বাতিল ঠিক পদক্ষেপ ছিল।’’ তাঁদের বক্তব্য, উপরন্তু গীতাও রঘুরাম রাজন, সুব্রহ্মণ্যমের মতো আমেরিকায় পড়ান। যা নিয়ে সঙ্ঘ-পরিবারের আপত্তি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy