১৪ বছর মাত্র বয়স। তার সমবয়সীদের এখনও পুতুল খেলার নেশা কাটেনি। ওই বয়সেই কয়েক জন পুরুষের বিকৃত কামের শিকার হল সে। ‘ধর্ষিতা’ ট্যাগটি সারা জীবনের জন্য জড়িয়ে গিয়েছিল বড়েলির ছোট্ট মেয়েটির গায়ে। খুব স্বাভাবিক ভাবেই এরপর সামাজের তীর্যক দৃষ্টি, গর্ভবতী হওয়া, গর্ভপাতের জন্য চাপ সৃষ্টি...। কিন্তু তত দিনে কিশোরী ১৯ সপ্তাহের সন্তানসম্ভবা। ভারতে বিশেষ পরিস্থিতিতে ২০ সপ্তাহ গর্ভাবস্থা পর্যন্ত গর্ভপাত আইনত বৈধ। কিন্তু চিকিৎসকদের মতে, এই কিশোরীর গর্ভে ১৯ সপ্তাহ ৬ দিনের সন্তান থাকলেও তার গর্ভপাত ছিল অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এতে মা ও শিশু উভয়েরই ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকায় একাধিক আদালত ঘুরেও গর্ভপাতের অনুমতি পায়নি সে। ১২ অক্টোবর সন্তানের জন্ম দিয়েছে বড়েলির সেই কিশোরী। ঠিক কী ঘটেছিল ঘটনাটা?
পাশের গ্রামের আসিফ আলির বাড়িতে রান্নার কাজ করত মেয়েটি। তার একাকিত্বের সুযোগ নিয়ে আসিফ তাকে একাধিকবার ধর্ষণ করেছিল বলে অভিযোগ। চলতি বছরের জুন মাসে অসিফ আলির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছিল ধর্ষিতা কিশোরীর পরিবার। কিন্তু মেডিক্যাল রিপোর্টে দেখা যায়, তত দিনে ১৯ সপ্তাহ ৬ দিনের গর্ভবতী হয়ে পড়েছে মেয়েটি। গ্রেফতার করা হয় আসিফ আলিকে। নতুন লড়াই শুরু হয় কিশোরীর পরিবারে। অবৈধ সন্তানকে মেনে নেবে না সমাজ, এই ভয়ে মেয়ের গর্ভপাত চেয়েছিল তাঁরা। ২৬ জুলাই গর্ভপাতের অনুমতি চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয় ওই কিশোরী। ৪ অগস্ট ফার্স্ট ট্র্যাক কোর্টে যায় তার মামলা। সেখানেও গর্ভপাতের অনুমতি না পেয়ে ফের ইলাহাবাদ হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় ধর্ষিতার পরিবার। আদালত তাঁদের চিফ মেডিক্যাল অফিসারের অনুমতি নিতে বলেন। ৩ সেপ্টেম্বর চিফ মেডিক্যাল অফিসার তাঁদের গর্ভপাতের আবেদন খারিজ করে দেন। এরপরে জেলাশাসকের কাছে দরবার করেন তাঁরা। কিন্তু গর্ভপাতের অনুমতি পাওয়া যায়নি সেখানেও। শেষ পর্যন্ত ১২ অক্টোবর রাত ১১টা নাগাদ প্রসব বেদনা ওঠে ওই কিশোরীর। স্থানীয় একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। কিন্তু সেখানকার স্বাস্থ্যকর্মীরা তার চিকিত্সা করতে অস্বীকার করায় একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে তাঁকে নিয়ে আসা হয় বড়েলি হাসপাতালে। হাসপাতালে আসার পথে অ্যাম্বুলেন্সেই সন্তানের জন্ম দেয় সে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন মা ও শিশু দু’জনেই এখন সুস্থ আছে।
সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, জব্বলপুরের এক নিঃসন্তান দম্পতি সন্তানটিকে দত্তক নেওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন।
আরও পড়ুন: এক ফোনেই মিলছে অ্যাসিড
আরও পড়ুন: তাজা হলাম তাজপুরে
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy